চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানার পুলিশ সম্প্রতি এক ছাত্র জনতা আন্দোলনের নিবেদিত কর্মী মাহিমকে আটক করে। তবে, যে মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সে মামলায় তার নাম ছিল না। এই মামলার নাম ছিল বাকলিয়া থানার মামলা নং ১৩/৮/২০২৪, যার সেই মামলায় গত১৬/২/২০২৫ ইং তারিখে মঞ্জুর হয়। জামিন হওয়ার পরও মাহিম কারাগার থেকে মুক্তি পায়নি। এর কারণ, তাকে নতুন করে কোতোয়ালি থানার মামলা নং ১৫/৮/২০২৪ এ আসামি হিসেবে দেখানো হয়েছে, সেই মামলায়ও তার নামএজাহারে ছিল না। মাহিম, যিনি শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন, এখন এক অসমর্থিত মামলায় কারাগারে আটক আছেন। তার মা মিনু বেগম, যিনি বিভিন্ন বাসা বাড়িতে কাজ করেন, অভিযোগ করেছেন যে তার ছেলে জুলাই আন্দোলনে সাহসিকতার সাথে রাজপথে আন্দোলন জোরদার করে
করেছে, কিন্তু বর্তমানে তাকে কোতোয়ালি থানার একটি মিথ্যা মামলায় আসামি করে কারাগারে আটক রেখেছে। মিনু বেগমের মতে, মাহিম ছাত্র জনতার আন্দোলনের প্রথম সারির কর্মী ছিলেন, সেই শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল বলেই মনে হয়
তাকে জামিন দেওয়ার পরও মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না। মাহিমের মা কান্নাভেজা কণ্ঠে বলেছেন, “আমার ছেলে রাজপথে আন্দোলন করতে গিয়েছিল, কিন্তু এখন তার নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। কেন তাকে আটক রাখা হচ্ছে? যারা সরকার পক্ষে ছিল তারা জামিন পেয়ে বাইরে চলে এসেছে, কিন্তু আমার ছেলে কেন জামিন পাচ্ছে না?”
মাহিমের মুক্তি নিয়ে মিনু বেগমের আহাজারি এখন পুরো এলাকায় আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার মা তাকে অবৈধভাবে আটক করার বিষয়ে খতিয়ে দেখার জন্য
মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তার অভিযোগ, সরকার বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী একজন সাহসী যুবককে অন্যায়ভাবে বন্দী রাখা হচ্ছে, এবং তার পরিবার এর ক্ষতিপূরণ চাইছে। এখন, এলাকার মানুষ এবং ছাত্র জনতার সমর্থনে, মাহিমের মুক্তির জন্য আন্দোলন এবং আহ্বান আরো জোরালো হচ্ছে। পুলিশ প্রশাসনকে এক্ষুনি বিষয়টি নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে মাহিমের মুক্তির জন্য উদ্যোগ নিতে হবে, যাতে এই ধরনের অন্যায় অবিচার আর না হয়।
এই বিষয়ে কোতোয়ালি থানার সংশ্লিষ্ট কর্ম কর্তাদের কাছে দৈনিক ভোরের আওয়াজ জানতে চাইলে অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুল করিম বলেন আমরা তদন্ত করে তাকে খালাস দেওয়া চেষ্টা করবো, যদি সত্যি সেই ছাত্র জনতা আন্দোলনের কর্ম হয়। মাহিমের মা মিনু বেগমের আকুল আবেদন: “আমার ছেলে মাহিম এক সময় শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে আন্দোলন করেছিল, নিজের জীবন বাজি রেখে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল। আজ সেই ছেলে মিথ্যা মামলায় আটক, কারাগারে বন্দী। আমি মিনু বেগম, একটি অসহায় মা, আপনাদের কাছে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি—আমার ছেলে মাহিমকে মুক্তি দিন। তিনি কখনো কোনো অপরাধ করেননি, শুধু সরকার বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিল। তাকে কেন এমনভাবে আটকে রাখা হচ্ছে?
আজ আমি পথে পথে ঘুরে তার মুক্তির জন্য আবেদন জানাচ্ছি, কিন্তু কোনো রকম সহযোগিতা পাচ্ছি না। যারা ফ্যাসিবাদ সরকারের পক্ষে ছিল, তারা জামিন পেয়ে বের হয়ে গেছে, কিন্তু আমার ছেলে কেন মুক্তি পাচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে কাকুতি জানাই—আমার ছেলেকে মুক্তি দিন। আমার অবুঝ মন আশা করে, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষ থেকে সরাসরি হস্তক্ষেপ চাই। আমি জানি, একজন মা হিসেবে আমার ছেলের প্রতি কিছু একটা পরিবর্তন আসবে।
আমার ছেলের মুক্তির জন্য সাহায্য করুন, যাতে আমি শান্তিতে নিঃশ্বাস নিতে পারি।”