চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কোতোয়ালী থানা বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের ৫ জন সক্রিয় নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ৬ জানুয়ারি ২০২৫ রাত ৯টা থেকে ৭ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত টানা অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা ও তাদের বিরুদ্ধে মামলা:
১) তন্ময় সেন @ শিবু (৩০) – আওয়ামী লীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরীর একনিষ্ঠ কর্মী। কোতোয়ালী থানার মামলা নং-০৭, তারিখ-০৩/০৯/২০২৪। তার বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ১৪৭/১৪৮/১৪৯/৩২৩/৩২৪/৩০৭/৩৭৯/১১৪/৫০৬ ধারায় অভিযোগ রয়েছে।
২) মোঃ এমরান হোসেন মনির (৪৪) – কোতোয়ালী থানার মামলা নং-০৩, তারিখ-০৪/১১/২০২৪। পেনাল কোডের ১৪৩/১৪৭/১৪৮/১৪৯/৩২৩/৩০৭/১১৪/৩৪ ধারায় অভিযুক্ত। তার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক উপাদানাবলী আইন ১৯০৮-এর ৩/৪ ধারায় মামলা রয়েছে, যা ইঙ্গিত করে যে তিনি বিস্ফোরক দ্রব্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন।
৩) জাবেদ উদ্দিন সাজু (৪০) – কোতোয়ালী থানার মামলা নং-২১, তারিখ-১৩/১০/২০২৪। তার বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ১৪৩/১৪৭/১৪৮/১৪৯/৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩০৭/১০৯/৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
৪) মোঃ দিলু মিয়া @ দেলোয়ার (৩৫) – কোতোয়ালী থানার মামলা নং-০৪, তারিখ-০৪/১১/২০২৪। তার বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ১৪৩/১৪৭/১৪৮/১৪৯/৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩০৭/১১৪/১০৯/৩৪ ধারায় মামলা রয়েছে। ৫) রাজিবুর রহমান রুবেল (৩৭) – কোতোয়ালী থানার মামলা নং-০২,তারিখ-০১/১০/২০২৪। তার বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ১৪৩/১৪৭/১৪৮/১৪৯/৩২৩/৩২৫/৩০৭/৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
গ্রেফতারের কারণ ও পুলিশের বক্তব্য:
কোতোয়ালী থানার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের আড়ালে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারী হামলা, মারামারি, বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহার, গুরুতর জখম ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ রয়েছে। কিছুদিন ধরে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্র সক্রিয় হয়ে উঠছিল, যার সঙ্গে এদের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, “আমরা সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করেছি। এসব মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে এবং প্রয়োজনে আরও গ্রেফতার হতে পারে।”
নেতাকর্মীদের প্রতিক্রিয়া: গ্রেফতার হওয়া নেতাকর্মীদের পরিবার ও সমর্থকরা অভিযোগ করেছেন, এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাদের দাবি, এসব নেতাকর্মীরা নিরপরাধ এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরবর্তী পদক্ষেপ:
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃতদের আদালতে হাজির করা হবে এবং তদন্তের স্বার্থে রিমান্ড আবেদন করা হতে পারে। তারা আরও জানিয়েছে, নগরীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এই ঘটনায় চট্টগ্রামের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়।