চট্টগ্রামের সদরঘাট থানা এলাকার মাদারবাড়ীতে শেখ হাসিনার সরকারের অবৈধ সুবিধা নিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া বাংলাদেশের বিতর্কিত সামিট গ্রুপের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে মোবাইল টাওয়ার স্থাপনের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে সামিট গ্রুপ জনবহুল এলাকায় এই টাওয়ার স্থাপন করেছে, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং পরিবেশগত ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি করেছে। স্থানীয়রা বিষয়টি সদরঘাট থানাকে অবহিত করলেও, থানা রহস্যজনক নীরব ভূমিকা পালন করেছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে পাশের ভবনের মালিকরা দক্ষিণ জোনের উপর পুলিশ কমিশনার, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, পরিবেশ অধিদপ্তর, বিটিআরসি এবং সিডিএর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাদের অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, টাওয়ারটি স্থাপিত হলে পার্শ্ববর্তী ভবনগুলোর স্থায়িত্ব ঝুঁকিতে পড়বে এবং বাসিন্দাদের শারীরিক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
এ ঘটনা শুধু স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি নয়, বরং প্রশাসনের নীরব ভূমিকাও একটি প্রশ্নবোধক চিহ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, অবৈধ এ কার্যক্রমের যথাযথ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়ে গণ মাধ্যমের দ্বারস্থ হয়েছে ক্ষতির শিকার হওয়ার আশংককারি পরিবার,ঘটনার বিবরণ-চট্টগ্রাম নগরীর ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব মাদারবাড়ী এলাকায় একটি বেসরকারি মোবাইল ফোন কোম্পানির টাওয়ার স্থাপন নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র প্রতিবাদ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাড়ি নং-১২৭-এর মালিক রিপন উদ্দিন (পিতা: আবদুল কাদের) তার ভবনের পাঁচতলা ছাদে মোবাইল টাওয়ার বসানোর চেষ্টা করছেন। তবে এই উদ্যোগ এলাকাবাসীর জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং ভবনের অবকাঠামোগত দুর্বলতার কারণে মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রতিবেশীদের অভিযোগ ১২৬ নম্বর বাড়িসহ আশপাশের ভবনের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মোবাইল টাওয়ারটি তাদের ভবন থেকে মাত্র ২/২.৫ ফুট দূরত্বে বসানো হচ্ছে। এই টাওয়ারের বিকিরণ থেকে সৃষ্ট স্বাস্থ্যঝুঁকি তাদের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ। স্থানীয়দের দাবি, মোবাইল টাওয়ারের রেডিয়েশন ক্যান্সার, মাথাব্যথা, ঘুমের সমস্যা এবং শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। প্রতিবেশীরা আরও অভিযোগ করেছেন যে, টাওয়ার স্থাপনের বৈধ কাগজপত্র দেখানোর অনুরোধ করা হলেও বাড়ির মালিক এবং মোবাইল কোম্পানির পক্ষ থেকে শুধুমাত্র একটি সাধারণ লাইসেন্স দেখানো হয়েছে। অনুমোদনের অন্যান্য নথি বা সিডিএর অনুমতি দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন তারা।
বিপজ্জনক ভবন নিয়ে উদ্বেগ
স্থানীয়রা দাবি করেছেন, ১২৭ নম্বর ভবনটি সিডিএর কোনো অনুমোদন ছাড়াই নির্মাণ করা হয়েছে। এর নির্মাণমান প্রশ্নবিদ্ধ এবং ভূমিকম্প বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে এটি বড় ধরনের দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। তার ওপর টাওয়ার স্থাপন করলে এই ভবনের স্থায়িত্ব আরও দুর্বল হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
পুলিশি হয়রানির অভিযোগ
এলাকাবাসীর বক্তব্য অনুযায়ী, প্রতিবাদ জানালে বাড়ির মালিক ও মোবাইল কোম্পানির লোকজন পুলিশি প্রভাব খাটিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা বারবার বাধা দেওয়ার পরও তাদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। স্থানীয় এক বাসিন্দা শাহীনা বেগম বলেন, “আমরা একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বাস করি। মোবাইল টাওয়ার স্থাপনের কারণে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম চরম স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়বে। প্রশাসনের কাছে আমাদের আবেদন, এই টাওয়ার স্থাপন বন্ধ করা হোক।” প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা স্থানীয়রা এই বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) দক্ষিণ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তারা দাবি করেছেন, অবৈধ টাওয়ার স্থাপন বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হোক। এলাকাবাসীর জীবন ও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে প্রশাসনের কার্যকর ভূমিকা একান্ত প্রয়োজন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মোবাইল টাওয়ারের বিকিরণ মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে শিশু, গর্ভবতী নারী এবং প্রবীণদের ওপর এর প্রভাব আরও মারাত্মক হতে পারে। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ এখন স্থানীয় বাসিন্দারা তাকিয়ে আছেন প্রশাসনের দিকে। দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে টাওয়ার স্থাপনের কাজ বন্ধ না হলে এলাকাবাসীর শান্তি বিঘ্নিত হবে এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়বে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রয়োজনে তারা বৃহত্তর আন্দোলনের পথ বেছে নেবেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ এবং সঠিক তদন্তই পারে এই সংকটের সমাধান করতে। মোবাইল টাওয়ারের ক্ষতিকর প্রভাব ও জনবসতি এলাকায় বসানোর ঝুঁকি মোবাইল টাওয়ারের ব্যবহার আজকের যুগে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও জনবসতি এলাকায় এর অবস্থান বিভিন্ন স্বাস্থ্য এবং পরিবেশগত সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। গবেষণাগুলি থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, মোবাইল টাওয়ারের তরঙ্গজনিত বিকিরণ এবং অন্যান্য প্রভাব মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। নিচে এই বিষয়গুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
মোবাইল টাওয়ারের ক্ষতিকর প্রভাব:
১. তরঙ্গ বিকিরণের প্রভাব
মোবাইল টাওয়ার থেকে নির্গত রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি (RF) তরঙ্গ দীর্ঘমেয়াদে মানব শরীরের ক্ষতি করতে পারে। শারীরিক সমস্যা:
RF বিকিরণ মস্তিষ্কের কোষের কার্যকলাপে বিঘ্ন ঘটাতে পারে। এটি ঘুমের ব্যাঘাত, মাথা ব্যথা, মেমোরি লস এবং এমনকি দীর্ঘমেয়াদে ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগের কারণ হতে পারে। মানসিক চাপ:
RF বিকিরণ মানসিক উদ্বেগ এবং বিষণ্নতার মাত্রা বাড়াতে পারে।
২. শিশু এবং বৃদ্ধদের উপর প্রভাব
গবেষণায় দেখা গেছে, মোবাইল টাওয়ারের বিকিরণ শিশু এবং বৃদ্ধদের জন্য বেশি ক্ষতিকর। শিশুদের মস্তিষ্ক বিকাশে বাধা সৃষ্টি এবং বৃদ্ধদের হৃদযন্ত্র বা স্নায়ুতন্ত্রের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। ৩. পরিবেশগত প্রভাব পাখি এবং কীটপতঙ্গের উপর মোবাইল টাওয়ারের RF বিকিরণ অত্যন্ত ক্ষতিকর। বিশেষ করে মধুমক্ষীরা RF বিকিরণের কারণে তাদের পথ খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয়, যা প্রকৃতির বাস্তুসংস্থানকে বিপন্ন করে। গাছপালার বৃদ্ধি ও পুষ্টির উপরও টাওয়ারের বিকিরণ নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
বিল্ডিংয়ের ছাদে মোবাইল টাওয়ার বসানোর সমস্যা:
১. বিল্ডিংয়ের স্থায়িত্বে ঝুঁকি
মোবাইল টাওয়ার স্থাপন করার জন্য ব্যবহার করা ভারী যন্ত্রপাতি ও উপাদান বিল্ডিংয়ের ছাদের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। দীর্ঘমেয়াদে এটি ভবনের স্থায়িত্ব কমিয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে ভূমিকম্প বা অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় এ ধরনের টাওয়ার ভবন ধসের ঝুঁকি বাড়ায়। ২. স্বাস্থ্যঝুঁকি
যারা ভবনের উপর বা তার আশেপাশে বসবাস করেন, তাদের শরীরে RF বিকিরণের মাত্রা অনেক বেশি হয়, যা তাদের রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।
দীর্ঘমেয়াদে এটি বাসিন্দাদের মানসিক শান্তি এবং স্বাভাবিক জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
৩. অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি
মোবাইল টাওয়ারে ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম এবং ব্যাটারি কখনও কখনও শর্ট সার্কিটের কারণে আগুন ধরিয়ে দিতে পারে। এটি আশপাশের ভবনগুলোর জন্য মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে ৪.বাড়ির দাম কমে যাওয়া ছাদে মোবাইল টাওয়ার বসানোর কারণে ভবনের বাজারমূল্য কমে যেতে পারে। কারণ, অনেকে স্বাস্থ্যঝুঁকির ভয়ে এই ধরনের ভবনে বাস করতে চান না। জনবসতি এলাকায় মোবাইল টাওয়ার বসানো উচিত কিনা: মোবাইল টাওয়ারের বিকিরণ ও স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বিবেচনা করে জনবসতি এলাকায় মোবাইল টাওয়ার বসানো না করাই উত্তম।
বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে টাওয়ারগুলো জনবসতিহীন এলাকা বা শহরের প্রান্তে বসানো উচিত। সিগন্যাল পরিবহন বাড়ানোর জন্য ফাইবার অপটিক ক্যাবলিং বা মাইক্রো টাওয়ার প্রযুক্তি ব্যবহার করা যেতে পারে, যা অপেক্ষাকৃত কম বিকিরণ সৃষ্টি করে। যদি ছাদে টাওয়ার বসাতে হয়, তবে অবশ্যই বিশেষ সুরক্ষা ব্যবস্থা (যেমন: বিকিরণ নিরোধক শিল্ড) নিতে হবে এবং সরকারের নির্ধারিত বিকিরণ মানদণ্ড মেনে চলতে হবে। মোবাইল টাওয়ার আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার একটি অপরিহার্য অংশ হলেও এর যথাযথ স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জনবসতি এলাকায় এটি বসানোর আগে সম্ভাব্য স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত ঝুঁকি বিবেচনা করা উচিত। বিকল্প প্রযুক্তি এবং সঠিক নিয়ম-কানুন মেনে চললে মোবাইল টাওয়ারের ক্ষতিকর প্রভাব কমিয়ে আনা সম্ভব। জনবসতি এলাকায় ছাদের উপর মোবাইল টাওয়ার স্থাপন: আইনগত পদক্ষেপ ও করণীয়
মোবাইল টাওয়ার জনস্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। বাংলাদেশে মোবাইল টাওয়ার স্থাপনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট আইন ও বিধিনিষেধ রয়েছে। যদি কোনো জনবসতি এলাকায় টাওয়ার স্থাপন জনস্বাস্থ্য বা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হয়, তাহলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব। নিচে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
আইনগত দিক: ১. বিটিআরসি (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) এর নীতিমালা
মোবাইল টাওয়ার স্থাপনের জন্য বিটিআরসি থেকে অনুমোদন নিতে হয়। টাওয়ারের অবস্থান, বিকিরণের মাত্রা এবং নিরাপত্তার বিষয়টি বিটিআরসি যাচাই করে।
জনবসতি এলাকায় অনুমোদনহীন বা স্বাস্থ্যঝুঁকিপূর্ণ টাওয়ার স্থাপন আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। ২. পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এমন স্থাপনা বা কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার রয়েছে।
টাওয়ারের বিকিরণ যদি আশপাশের পরিবেশে বিরূপ প্রভাব ফেলে, তবে পরিবেশ অধিদপ্তরে অভিযোগ করা যায়।
৩. বাংলাদেশ বিল্ডিং কোড (BNBC) ভবনের ছাদে টাওয়ার স্থাপন করার আগে বিল্ডিং কোড অনুসরণ করা বাধ্যতামূলক।
ভবনের স্থায়িত্বের ঝুঁকি থাকলে এটি আইন লঙ্ঘন বলে গণ্য হবে।
৪. দন্ডবিধি, ১৮৬০ যদি মোবাইল টাওয়ার কারও শারীরিক ক্ষতি বা পরিবেশগত বিপর্যয়ের কারণ হয়, তাহলে এটি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এ ধরনের ঘটনার জন্য ভবন মালিক বা মোবাইল অপারেটরকে দোষী সাব্যস্ত করা যায়। অভিযোগ দাখিলের পদ্ধতি:
১. থানায় অভিযোগ আশপাশের বাসিন্দারা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) বা লিখিত অভিযোগ জমা দিতে পারেন। অভিযোগে টাওয়ারের বিকিরণ, স্বাস্থ্যঝুঁকি, এবং অনুমোদনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যেতে পারে। ২.বিটিআরসি-তে অভিযোগ বিটিআরসি সরাসরি এই বিষয়ে অভিযোগ গ্রহণ করে। অভিযোগের সঙ্গে টাওয়ারের অবস্থান, মালিকের নাম, এবং সম্ভাব্য ক্ষতির প্রমাণ প্রদান করতে হবে। বিটিআরসি তদন্ত করে যদি টাওয়ারটি অবৈধ প্রমাণিত হয়, তবে তা সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিতে পারে।
৩. পরিবেশ অধিদপ্তরে অভিযোগ
পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, পরিবেশ অধিদপ্তরে অভিযোগ জানানো সম্ভব।
তারা প্রমাণের ভিত্তিতে টাওয়ার অপসারণ বা অপারেটরকে জরিমানা করতে পারে।
৪. স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আবেদন ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, বা সিটি কর্পোরেশনে লিখিত অভিযোগ দাখিল করা যেতে পারে। স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পারে।
পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে করণীয়:
১. উচ্চ পর্যায়ের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ যদি স্থানীয় পুলিশ কোনো ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে জেলার পুলিশ সুপার (SP) বা সংশ্লিষ্ট ডেপুটি কমিশনারের (DC) কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করা যেতে পারে। তাদের নির্দেশে থানাকে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য করা হবে। ২. আইনজীবীর মাধ্যমে আইনি নোটিশ একজন আইনজীবীর মাধ্যমে ভবন মালিক বা মোবাইল অপারেটরের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠানো যেতে পারে। এতে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য করা যেতে পারে। ৩. মিডিয়াতে প্রচার
সমস্যাটি গণমাধ্যমে তুলে ধরলে প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়। এটি সামাজিক চাপ সৃষ্টি করতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
৪. জনস্বার্থ মামলা (Public Interest Litigation)
উচ্চ আদালতে একটি জনস্বার্থ মামলা দাখিল করা যেতে পারে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে টাওয়ারটি অপসারণ করা সম্ভব।
পরামর্শ,১. প্রথমেই মোবাইল টাওয়ারের বৈধতা এবং বিটিআরসি অনুমোদন যাচাই করুন। ২. স্থানীয়ভাবে আলোচনা ও সমঝোতার চেষ্টা করুন।
৩. অভিযোগ দাখিল করার সময় প্রাসঙ্গিক নথি ও প্রমাণাদি সংরক্ষণ করুন। ৪. প্রয়োজনে স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠন বা মানবাধিকার সংস্থার সহায়তা নিন। জনবসতি এলাকায় মোবাইল টাওয়ার বসানোর ক্ষেত্রে জনস্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, এবং পরিবেশের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি কোনো টাওয়ার ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে বা অনুমোদনহীন হয়, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন, বিটিআরসি, এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। সদরঘাট থানার পূর্ব মাদারবাড়ীতে একটি বিতর্কিত মোবাইল টাওয়ার স্থাপন নিয়ে এলাকাবাসীর উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, জনবহুল এলাকায় স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত ঝুঁকি উপেক্ষা করে টাওয়ারটি স্থাপন করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে সদরঘাট থানার ওসি রমিজ উদ্দিন দৈনিক ভোরের আওয়াজ পত্রিকাকে জানান, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি এবং বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। টাওয়ার স্থাপনকারীদের প্রয়োজনীয় অনুমোদন রয়েছে কি না, তা দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” স্থানীয়রা প্রশাসনের প্রতি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।