1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ০৮:৫৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
“বাঁশখালীতে ৪ হাজার ইয়াবাসহ টেকনাফের মাদক কারবারি আটক: ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ” হোমনায় মহান মে দিবস উপলক্ষে  বিএনপির বর্ণাঢ্য র‍্যালি  ড. মোহাম্মদ ইউনূস এর শুভ আগমনে বোয়ালখালীবাসীর পক্ষ থেকে হাজী মোহাম্মদ আলম ববির শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা পুলিশ পরিচয়ে ঘরে প্রবেশ করে পরিবারের ৮ জনকে বেঁধে ছয়টি দোকান ঘর গুঁড়িয়ে দিয়ে মালামাল লুট করেছে দুর্বৃত্তরা রোদেলা দুপুরে পারকি সৈকতের বালুকাবেলায় কলম যোদ্ধারা,স্মৃতিময় এক মে দিবস! ড. মোহাম্মদ ইউনূসের দক্ষিণ চট্টগ্রাম সফর সিএমপি কমিশনার ও পাঁচ ওসি পেলেন আইজিপি ব্যাজ সাহস, দক্ষতা ও মানবিক পুলিশিংয়ের স্বীকৃতি আইজি পি ব্যাজ পেলেন ওসি আফতাব উদ্দিন চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের সূচনালগ্নের সাহসী পুরুষ ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন! দৃষ্টি আকর্ষণ

চট্টগ্রাম মেডিকেলে সেলাইন সংকটসহ কোনো ধরণের সমস্যা নেই-ব্রিগেডিয়ার জেনারেল  মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিন

মো. কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪
  • ১৬৪ বার পড়া হয়েছে

একান্ত সাক্ষাৎকারে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল  মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিনের

“চট্টগ্রাম মেডিকেলে সেলাইন সংকটসহ কোনো ধরণের সমস্যা নেই”

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মতো বৃহৎ একটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হিসেবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিন চট্টগ্রামের জনগণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। সেলাইন সংকটসহ হাসপাতালের সামগ্রিক সেবা ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে তার অবস্থান এবং দৃষ্টিভঙ্গি সরাসরি জানার সুযোগ এ সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে মিলেছে। পরিচালকের আন্তরিকতা ও পেশাদারিত্বের প্রতিফলন পাওয়া যায় তার বক্তব্যে, যা পাঠকদের জন্য স্বচ্ছ ধারণা তৈরি করবে এবং হাসপাতালের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানার সুযোগ করে দেবে- তাই  এই সাক্ষাতকারটি উপস্থাপন করছি- 

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রোগীদের শরীরের নিয়মিত ব্যবহৃত জীবনমুখী তরল ওষুধ সেলাইনের সংকট নিয়ে সম্প্রতি একটি সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর, রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হলে, গত ২৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকার গ্রহণ করি।

সেলাইন সংকটের সত্যতা প্রসঙ্গে কী বলবেন?

পরিচালক সাহেব বলেন, “পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যটি সঠিক ছিল না। সেদিন আমাদের স্টোরে ১,৮০০ সেলাইন মজুদ ছিল, অথচ সংবাদে উল্লেখ করা হয় মাত্র ৩০০। পরদিনই আমরা আরও ৩,০০০ সেলাইন সরবরাহ পাই। বাস্তব চিত্র হলো, চট্টগ্রাম মেডিকেলের প্রতিদিনের নরমাল সেলাইনের চাহিদা মাত্র ২০০-৩০০, যা আমাদের কাছে যথেষ্ট পরিমাণে মজুদ ছিল।”

তিনি আরও জানান, “সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান আমাদের চাহিদা মোতাবেক সেলাইন সরবরাহ করে থাকে। তবে একসঙ্গে অতিরিক্ত সেলাইন মজুদ করা ডাক্তারদের মতে ঠিক নয়। তাই আমরা হাতে তিন থেকে চার দিনের মজুদ রেখে নিয়মিত সরবরাহ নিশ্চিত করি।”

হাসপাতালের সার্বিক অবস্থা ও উন্নয়ন নিয়ে আপনার অভিমত কী? ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দিন বলেন, “আমি গত ১২ মে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। এর পর থেকেই হাসপাতালের সেবার মান ও প্রশাসনিক পরিবেশ উন্নত করার চেষ্টা করছি। যদিও ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের সময় কিছুটা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হয়েছিল, তবে আমরা তা দক্ষতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করেছি।”

আপনার দায়িত্ব গ্রহণের পর কী ধরনের পরিবর্তন এনেছেন?

তিনি বলেন, “হাসপাতালের সেবার মান উন্নয়নে বিশেষ নজর দিয়েছি। প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও দক্ষতা আনতে উদ্যোগ নিয়েছি। রোগীদের সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে চিকিৎসক ও কর্মীদের মধ্যে সমন্বয় তৈরি করেছি।”

চলমান সংকট ও সমাধান নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?

পরিচালক বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হলো রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা প্রদান করা। সেলাইনসহ অন্য যেকোনো ওষুধ সরবরাহের ক্ষেত্রে যাতে কোনো ধরনের সমস্যা না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর দিচ্ছি। সরবরাহকারীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি, পাশাপাশি হাসপাতালের কর্মীদেরও দায়িত্বশীল হতে নির্দেশনা দিয়েছি।”

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিন জানান, “এই হাসপাতাল ১৯৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তখন এর ধারণক্ষমতা ছিল মাত্র ২০০ শয্যা। পরে তা ৫০০ শয্যায় রূপান্তরিত হয়। বর্তমানে কাগজপত্রে হাসপাতালটি ১২০০ শয্যা হিসেবে দেখানো হলেও, বাস্তবে প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা ৩,০০০ ছাড়িয়ে যায়। ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি রোগী হওয়ায় আমরা প্রতিটি রোগীকে সঠিকভাবে সেবা দিতে পারি না। তবে ইউনিট-২ চালু করা গেলে শয্যার সংখ্যা বাড়ানো সম্ভব, আর এর ফলে রোগীদের জন্য শয্যা সংকট আর থাকবে না।” বাজেট ও জনবলের সংকট পরিচালক বলেন, “আমাদেরকে এখন বাজেট দেওয়া হয় ১২০০ শয্যার জন্য, অথচ বাস্তবিক রোগীর সংখ্যা থাকে প্রায় ৩,০০০। এর ফলে ১৮০০ রোগীর অতিরিক্ত চাহিদা পূরণ করা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। কাগজপত্রে ১২০০ শয্যা ধরে বাজেট দিলে রোগীর সেবা সঠিকভাবে দেওয়া সম্ভব হয় না।”

তিনি আরও বলেন, “জনবলও যথেষ্ট কম। তিন হাজার রোগীকে সেবা দিতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নার্স নেই। বর্তমানে ৮০০ নার্স থাকার কথা থাকলেও বিভিন্ন কারণে প্রায় ৩০০ জন অনুপস্থিত থাকে, বিশেষ করে ট্রেনিং ও ছুটির কারণে। সবচেয়ে বেশি দরকার হচ্ছে ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী, যাদের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।”

এই বিষয়গুলো তিনি ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে অবগত করেছেন বলেও উল্লেখ করেন।

ডাক্তারদের ভূমিকা ও অনিয়ম প্রসঙ্গে মন্তব্য ডাক্তারদের কোনো অসহযোগিতা রয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমাদের ডাক্তাররা অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে সেবা দিয়ে আসছেন। চিকিৎসা সেবায় কোনো সমস্যা নেই।”

তবে হাসপাতালে অতীতে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “অতীতে রোগীদের জিম্মি করে টাকা আদায়, অতিরিক্ত ওষুধ কিনে তা বাইরে বিক্রি করা, স্টোর থেকে ওষুধ পাচারসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ছিল। আমি এসব কঠোর হস্তে দমন করেছি। বর্তমানে হাসপাতাল পুরোপুরি দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতিমুক্ত। দালালদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যারা চোরাচালান সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত ছিল, তাদেরও দমন করা হয়েছে। তবে সবকিছু রাতারাতি সমাধান করা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে আপনাদের সাংবাদিকদের তথ্যভিত্তিক পরামর্শ ও লেখনী প্রয়োজন।”

চট্টগ্রামের জন্য আরও হাসপাতালের প্রয়োজন

চট্টগ্রামের জনসংখ্যার কথা বিবেচনা করে তিনি বলেন, “এই অঞ্চলের জনগণের সেবায় আরও অন্তত দুটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রয়োজন। ১৯৫৭ সালে এই হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার সময় চট্টগ্রামের জনসংখ্যা যা ছিল, এখন তার তুলনায় অনেক বেড়েছে। তখন ২০০ শয্যা দিয়ে শুরু হলেও এত বছর পরেও তা মাত্র ১২০০ শয্যায় উন্নীত হয়েছে। অথচ বাস্তবে এটি হওয়া উচিত ৩,০০০ শয্যার হাসপাতাল।”

তিনি আরও বলেন, “চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালকে পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হিসেবে রূপান্তর করা গেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপর থেকে রোগীদের চাপ অনেকটাই কমে যাবে।”পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিন বলেন, “এই হাসপাতালকে শতভাগ সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করার জন্য আমি কাজ করে যাচ্ছি। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে দেশের সেরা একটি হাসপাতাল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।”

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কৃতি সন্তান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দিন, একজন দক্ষ ও সৎ প্রশাসক হিসেবে তার পরিচিতি রয়েছে। তার নেতৃত্বে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্বিক পরিবেশ উন্নত হয়েছে। সেলাইন সংকট নিয়ে যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছিল, তা ভিত্তিহীন বলে প্রমাণিত হয়েছে। রোগী ও তাদের স্বজনরা এখন স্বস্তিতে থাকতে পারেন।

আমি একজন সিনিয়র সাংবাদিক হিসেবে দীর্ঘ সময় ধরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিনের মতো দক্ষ প্রশাসকের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করার সুযোগ আমার জন্য সত্যিই সম্মানের। তার আন্তরিক সহযোগিতা ও সময় দেওয়ার জন্য আমি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। তার সফলতা ও নেতৃত্ব চট্টগ্রামের চিকিৎসা ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে, এ প্রত্যাশা করি।

(সাক্ষাৎকারটি দৈনিক ভোরের আওয়াজ ও The Daily Banner-প্রকাশিত হয়েছে।)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট