1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
শিবগঞ্জে কিশোরীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে প্রগতি সংস্থার স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ ক্ষেতলালে তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন! লাউগাছের চারা খাওয়া নিয়ে গলাচিপায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ আহত ১ গৌরবে মির্জাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবজোন চ্যাম্পিয়ন ধামরাইয়ে অটোরিকশা চালক সায়েদুর রহমান হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে ( পিবিআই ) কালাইয়া বাজারের রাস্তাঘাটে করুণ দশা, ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা ঠাকুরগাঁওয়ে নদীতে গোসল করতে নেমে   দ্বিতীয় শ্রেণীর  শিশুর মৃত্যু বান্দরবানে বাজার চৌধুরীর অপসারণ ও বিচারের দাবীতে মানব বন্ধন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি সার বেশি দামে বিক্রির অভিযোগে দুই ব্যবসায়ীকে জরিমানা! শিবচরে মাদক রোধে ইউএনও’র কাছে স্মারকলিপি দিল উপজেলা বিএনপি

শিক্ষক লাঞ্ছিত ও কিছু অপ্রিয় সত্য কথা-

মো. কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

শিক্ষকদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা রেখে এই লেখাটি লিখছি। কয়েক দিন আগেও আমি শিক্ষক অপমান নিয়ে একটি লেখা লিখেছিলাম। সেই লেখার পর অনেকে আমাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন, তবে অনেকেই বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন। আমাদের দেশের কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের আচার-আচরণ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, তারা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কুকুরের মতো ব্যবহার করে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন কৌশলে তাদের জিম্মি করে রাখে। শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে, নিঃশঙ্কভাবে কোনো শিক্ষকের অসদাচরণের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পায় না। এ ধরনের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনলে প্রধান শিক্ষকও তা আমলে নেন না। প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কোনো সাধারণ মানুষ সহজে কথা বলতে পারে না। অনেক ক্ষেত্রে, শিক্ষকেরা যেন নিজেদের রাজ্যের জমিদার সেজে বসে থাকেন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে তাদের পারিবারিক সম্পত্তি মনে করেন। তাদের নির্দেশ মেনে না চললে বা তাদের কোচিংয়ে না গেলে, শিক্ষার্থী ভালো ফল করলেও তাকে ফেল করিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের ওপর এমন বহুমাত্রিক মানসিক নির্যাতন চরম অসহায় অবস্থায় ফেলে দেয় তাদের। অন্যদিকে, দলীয় আশীর্বাদপুষ্ট কিছু শিক্ষক যা ইচ্ছে তা করতে পারেন; তারা ভুলে যান যে, তারা একজন আদর্শ শিক্ষক হওয়ার দায়িত্বে আছেন। তাদের কাজ হলো শিক্ষাদানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলা, কিন্তু তা না করে তারা নিজেদের ক্ষমতা ও স্বার্থের প্রয়োগ করেন। সবকিছু বিবেচনা করলে দেখা যায়, আগের মতো আদর্শবান শিক্ষক এখন হাতেগোনা কয়েকজনই আছেন, কিন্তু তাদেরও টিকতে কষ্ট হচ্ছে এই খারাপ শিক্ষকদের ভিড়ে।শিক্ষক অপমান নিয়ে লেখার পর আমি পর্যালোচনা করে দেখলাম, যারা আজ লাঞ্ছিত হচ্ছেন, তারা অনেকেই তাদের সময়ের নিষ্ঠুর ও স্বৈরাচারী আচরণের কারণে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের শিকার হচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা বছরের পর বছর ধরে সেসব শিক্ষকদের অত্যাচার সহ্য করে অবশেষে প্রতিশোধ নিতে বাধ্য হচ্ছে। এটা ঠিক যে, অপমানিত শিক্ষকদের একটা বড় অংশ হয়তো নিজেরাই তাদের অসদাচরণের কারণে এ পরিস্থিতিতে পড়েছে। এ ধরনের শিক্ষকদের আচরণে পরিবর্তন আনার জন্য বিশেষ ধরনের প্রশিক্ষণ বা শিক্ষার প্রয়োজন। হয়তো এর মাধ্যমেই শিক্ষকদের শুদ্ধ আচরণ গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

আমার মতে, এখন সময় এসেছে এই সমস্যার গভীরে গিয়ে সমাধানের পথ খোঁজার। শিক্ষকদের আচরণ কেমন হওয়া উচিত এবং কীভাবে তাদের দায়িত্বশীল ও শিক্ষার্থীবান্ধব করা যায়, সেই আলোচনায় আমাদের আরও গভীরে যেতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশেষত আমাদের সমাজের পাঠশালা, দিন দিন যেন বন্দীশালার রূপ ধারণ করছে। যেখানে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের সম্পর্ক হওয়া উচিত ছিল গভীর, শ্রদ্ধায় ও ভালোবাসায় পূর্ণ, সেখানে এখন তা সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে শাসন, শৃঙ্খলা এবং ভীতি প্রদর্শনের মধ্যে। আজকের এই অপ্রিয় বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে প্রশ্ন জাগে—শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্পর্ক আসলে কেমন হওয়া উচিত? শিক্ষকতার আচরণ কেমন হওয়া প্রয়োজন?

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিক্ষা দর্শন -রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিক্ষা ব্যবস্থাকে স্বাধীন চিন্তার ক্ষেত্র হিসেবে দেখেছিলেন। তাঁর মতে, শিক্ষকের উচিত শিক্ষার্থীদের মনে জ্ঞানের প্রতি আগ্রহ ও কৌতূহল সৃষ্টি করা, শাসন ও ভয় দেখিয়ে শিক্ষা দেওয়ার চেয়ে। তাঁর শিক্ষা দর্শনের মূল বক্তব্য ছিল “স্বাধীনতা, স্বাধীনতা এবং আরও স্বাধীনতা।” রবীন্দ্রনাথ মনে করতেন, “শিক্ষা শুধু জ্ঞানের আর্তিতে সীমাবদ্ধ নয়, এর মূল লক্ষ্য মনুষ্যত্বের বিকাশ।” শিক্ষার্থীকে প্রতিটি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করতে, বিশ্লেষণ করতে এবং সমালোচনামূলক চিন্তা করতে শেখানোই শিক্ষকের দায়িত্ব। তিনি মনে করতেন, শিক্ষককে হতে হবে বন্ধুর মতো, সহমর্মিতার মনোভাব নিয়ে শিক্ষার্থীর সঙ্গে মেলবন্ধন গড়তে হবে। শিক্ষার পরিবেশ হতে হবে আনন্দময়, যেখান থেকে শিক্ষার্থী জ্ঞানের উৎস খুঁজে নিতে পারে। দার্শনিকদের দৃষ্টিভঙ্গি-শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীর সম্পর্ক নিয়ে বহু দার্শনিক তাদের মতামত দিয়েছেন। সক্রেটিস, যিনি শিষ্যদের জ্ঞান অন্বেষণে উদ্বুদ্ধ করতে শাস্ত্রীয় গ্রিক পদ্ধতি “সক্রেটিস পদ্ধতি” ব্যবহার করতেন, মনে করতেন যে জ্ঞান প্রসারের চেয়ে নিজস্ব চিন্তা ও অন্বেষণ শেখানো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর মতে, “শিক্ষকের দায়িত্ব হচ্ছে শিক্ষার্থীকে সঠিক প্রশ্ন করতে শেখানো এবং উত্তর খুঁজতে সাহায্য করা।” জন লক, ইংরেজ দার্শনিক, মনে করতেন যে শিক্ষা হচ্ছে শিশুর মনকে একটি “ট্যাবুলা রাসা” (খালি স্লেট)-এর মতো গড়ে তোলা, যা তাকে ভাবতে শেখাবে। তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ছিল শৃঙ্খলা ও শাস্তি ব্যবহারের পরিবর্তে উৎসাহ ও সহযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষা দেওয়ার পক্ষে। তিনি বলেন, “শিক্ষার মাধ্যমে শিশুকে শুধুমাত্র জ্ঞানার্জন করানো নয়, বরং তার নৈতিক ও আত্মবিশ্বাসের উন্নয়ন ঘটানো প্রয়োজন।” বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষকের ভূমিকা

বর্তমান বাস্তবতায়, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীর সম্পর্ক কিছু ক্ষেত্রে শাসন ও শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। এই সম্পর্ক যদি মধুর এবং স্বাধীন চিন্তাচর্চার মাধ্যমে না গড়ে ওঠে, তবে তা জ্ঞানের আসল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়। শিক্ষার্থীদের মুক্তভাবে চিন্তা করার এবং নিজেদের প্রশ্ন করার অধিকার থাকা উচিত, এবং শিক্ষকদের তাদের সেই সুযোগ তৈরি করে দেওয়া উচিত।  শিক্ষা কেবল পাঠ্যপুস্তকের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে জীবনের বাস্তব সমস্যাগুলির মুখোমুখি হওয়া এবং সমাধান খোঁজার জন্যও প্রস্তুত করতে হবে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি করার জন্য শিক্ষকদের আচার-আচরণ হওয়া উচিত উদ্বুদ্ধকারী ও সহমর্মিতার। পাঠশালা যখন বন্দীশালা হয়ে যায়, তখন শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের সম্পর্ক হওয়া উচিত একটি গভীর শ্রদ্ধা, ভালোবাসা এবং মেলবন্ধনের। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং অন্যান্য দার্শনিকেরা যে আদর্শ শিক্ষা পদ্ধতির কথা বলেছেন, তা আমাদের সমাজে ফিরিয়ে আনা জরুরি। শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী—এই দুইয়ের মেলবন্ধন যদি সঠিকভাবে গড়ে তোলা যায়, তবে একটি সৃষ্টিশীল এবং মানবিক সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।

শিক্ষকদের আচার-আচরণ: প্রত্যাশা ও বাস্তবতা

বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষকগণ শুধুমাত্র পাঠদানকারী নন, বরং তাঁরা শিক্ষার্থীদের মানসিক ও নৈতিক উন্নয়নের পথপ্রদর্শক হিসেবেও কাজ করেন। আদর্শ সমাজ গড়ার কারিগর হিসেবে শিক্ষকরা যে সম্মান এবং মর্যাদা অর্জন করেন, তা তাঁদের আচরণ এবং শিক্ষাদানের পদ্ধতির ওপর নির্ভরশীল। তবে, বর্তমান বাস্তবতায় শিক্ষকদের প্রতি শিক্ষার্থীদের সম্মানহানি, শিক্ষক লাঞ্ছনা, এবং শিক্ষকদের প্রতি শিক্ষার্থীদের আস্থা হ্রাস পাওয়ার ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে, যা আমাদের সমাজের জন্য একটি অশনি সংকেত। শিক্ষকদের আদর্শ আচরণ কেমন হওয়া উচিত?

বাংলাদেশের শিক্ষকদের আচরণ হওয়া উচিত ছিল এমনভাবে, যা শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা জোগায় এবং তাদের মনের ভিতরে মানবিক মূল্যবোধের বিকাশ ঘটায়। একজন আদর্শ শিক্ষকের আচরণে থাকতে হবে:

সহানুভূতি ও সহমর্মিতা:শিক্ষকদের উচিত শিক্ষার্থীদের প্রতি সহানুভূতিশীল ও সহমর্মিতার মনোভাব রাখা। এটি তাদের মধ্যে একটি সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করে।

উৎসাহ প্রদানকারী:শিক্ষকদের উচিত শিক্ষার্থীদের কেবল শাস্তি প্রদান নয়, বরং তাদেরকে উৎসাহিত করা। ভুলের জন্য কঠোর শাস্তির বদলে তাদের ভুল থেকে শিখতে উৎসাহিত করা প্রয়োজন।আদর্শ ও নৈতিকতা:শিক্ষকদের নিজস্ব জীবনযাপনেও সৎ এবং নৈতিকতা বজায় রাখা উচিত, কারণ শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষককের কাছে থেকে শিখে থাকে। সক্রিয় শ্রোতা হওয়া:শিক্ষকদের শিক্ষার্থীদের কথা শোনার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। একটি সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলি মনোযোগ দিয়ে শোনা এবং তাদের সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসা অত্যন্ত জরুরি। বর্তমান বাস্তবতায় শিক্ষকদের আচরণ কেমন? বর্তমানে, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় শিক্ষকদের আচরণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শাসন ও ভীতিপ্রদর্শনের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়েছে। একদিকে শিক্ষকেরা যেমন শিক্ষার্থীদের আচরণ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন, অন্যদিকে তাদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে ব্যর্থ হচ্ছেন। শিক্ষকরা অনেক সময় ব্যক্তিগত বা সামাজিক চাপে আচরণে কঠোর হয়ে ওঠেন, যা শিক্ষার্থীদের মনে শিক্ষক সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করে।  শিক্ষার্থীদের দ্বারা শিক্ষকদের অপমানিত হওয়ার কারণ শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে সুসম্পর্ক না গড়ে ওঠার পেছনে কয়েকটি কারণ রয়েছে: ভালোবাসার অভাব ও কড়া শাসন:অনেক সময় শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে শৃঙ্খলা রক্ষা করতে চান, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ এবং বিরক্তি তৈরি করে। প্রযুক্তির অপব্যবহার: বর্তমান প্রজন্ম প্রযুক্তির কারণে অনেক বেশি আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠেছে। তারা দ্রুত তথ্য পায় এবং অনেক সময় শিক্ষকদের চেয়ে নিজেকে বেশি জানাশোনা মনে করে। এটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে অহংবোধ তৈরি করে এবং শিক্ষকদের সম্মান করতে তারা অপারগ হয়ে ওঠে।পারিবারিক ও সামাজিক শিক্ষা:অনেক ক্ষেত্রে পারিবারিক ও সামাজিক শিক্ষা শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষকের প্রতি সম্মানের অভাব তৈরি করছে। শিক্ষকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা:অনেক শিক্ষক শিক্ষাদানের বাইরে অন্য পেশায় যুক্ত থাকেন বা শিক্ষায় মনোযোগ দিতে ব্যর্থ হন। এটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষকের প্রতিপত্তি কমিয়ে দেয়। এই সংকটের জন্য দায়ী কে?

এই সংকটের জন্য দায়ী কেবল শিক্ষক বা শিক্ষার্থীরা নয়; বরং পুরো শিক্ষা ব্যবস্থা এবং সামাজিক কাঠামো। একদিকে যেমন শিক্ষকদের মধ্যে পেশাগত মনোভাবের অভাব রয়েছে, অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিক শিক্ষা এবং মূল্যবোধের অভাব রয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক ব্যবস্থার দুর্বলতা, শিক্ষার সঠিক পরিবেশের অভাব এবং সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় এই সংকটের জন্য দায়ী। সমাধান কীভাবে সম্ভব? এই সংকট সমাধানে কিছু কথা- শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার:শিক্ষা ব্যবস্থায় সংস্কার আনা প্রয়োজন, যাতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মধ্যে একটি পারস্পরিক বিশ্বাস ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পাঠ্যপুস্তকের বাইরে নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধ শেখানো প্রয়োজন।শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ: শিক্ষকদের নিয়মিত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কিভাবে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা যায়, তা শেখানো উচিত। শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়েও শিক্ষকদের সচেতন করা প্রয়োজন।

সৃজনশীল পরিবেশ তৈরি: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন একটি পরিবেশ তৈরি করতে হবে যেখানে শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে চিন্তা করতে পারে, প্রশ্ন করতে পারে এবং নিজেদের ভুল থেকে শিখতে পারে।বপারিবারিক ও সামাজিক শিক্ষা:পরিবার এবং সমাজকেও শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিক শিক্ষা প্রদান করতে হবে। শিক্ষার্থীদের শিখতে হবে কীভাবে শিক্ষকদের সম্মান করতে হয়। প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার:শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের শিক্ষা দিতে হবে। তাদের শেখাতে হবে যে প্রযুক্তি হলো জ্ঞানার্জনের একটি মাধ্যম, তবে এটি শিক্ষক এবং শারীরিক ক্লাসরুমের বিকল্প হতে পারে না। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সম্পর্ক একটি জাতির ভবিষ্যৎ গড়ার প্রধান উপাদান। এই সম্পর্ককে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, ও সহমর্মিতার ওপর ভিত্তি করে গড়ে তুলতে হবে। বর্তমানে শিক্ষকেরা যেভাবে শিক্ষার্থীদের হাতে অপমানিত হচ্ছেন, তা সমাজের একটি গুরুতর সংকট নির্দেশ করে। এই সংকট সমাধানের জন্য প্রয়োজন শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার, শিক্ষকের প্রশিক্ষণ, এবং সামাজিক মূল্যবোধের উন্নয়ন। ঐকান্তিক প্রচেষ্টার মাধ্যমেই আমরা এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে পেতে পারি। সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ, আমার এই লেখাটি আপনাদের কারো মনে কষ্ট দিয়ে থাকলে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। তবে, আপনাদের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ—শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সত্যিকারের পাঠশালা হিসেবে গড়ে তুলুন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখুন এবং কোনোভাবেই বন্দীশালায় পরিণত করবেন না। শিক্ষার্থীদের প্রতিও আমার আহ্বান থাকবে—আপনারা ধৈর্য ধরুন। যত সমস্যাই থাকুক না কেন, মনে রাখবেন, শিক্ষকরা আমাদের জ্ঞানদাতা। যদি কোনো শিক্ষকের আচরণ বা কাজ অসদাচরণের পর্যায়ে পড়ে, তবে তার বিরুদ্ধে আইনের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু কখনোই আইন হাতে তুলে নেওয়া উচিত নয়। এই কথাগুলোর মাধ্যমে আমার লেখা শেষ করছি। ধন্যবাদ।

লেখকঃ সাংবাদিক গবেষক টেলিভিশন উপস্থাপক ও মহাসচিব- চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরাম।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট