
সংযুক্ত আরব আমিরাতে কর্মরত বাংলাদেশি চিকিৎসক সম্প্রদায়ের সম্ভাবনা, চ্যালেঞ্জ ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন নিয়ে আবুধাবিতে এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত দূতাবাসের হলরুমে ওই সেমিনারে প্রবাসী চিকিৎসকদের পেশাগত প্রতিবন্ধকতা, স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন এবং ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন দুবাই কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান, দূতাবাস কর্মকর্তা শাহনাজ পারভীন রানো,শ্রম কাউন্সিলর মোহাম্মদ উল্লাহ খান, এশিয়ান হেলথকেয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান ও এশিয়ান স্পেশালাইজড হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড. সালাউদ্দিন আলী।
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ চিকিৎসক ডা. মেজবাহ, ডা: খান,ডা. রিপা তারা ফেরদৌস, ডা. সুস্মিতা, ডা. সামিয়া, ডা. আফসানা শামীম মৌলি, সাংবাদিক শিবলী আল সাদিক, সাইফুল ইসলাম তালুকদার, মোদাচ্ছের শাহ, মুজিবুর রহমান মনজু, আব্দুর রহিম মানিকসহ প্রবাসী বাংলাদেশি চিকিৎসক ও কমিউনিটি ব্যক্তিত্বরা।
সেমিনারে বক্তারা জানান, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশি চিকিৎসকদের কর্মক্ষেত্র ক্রমেই সম্প্রসারিত হচ্ছে। বর্তমানে আমিরাতে ২৬৩ জন বাংলাদেশি ডাক্তার ও ২৫ জন ফার্মাসিস্ট সফলভাবে কর্মরত আছেন। দ্রুত উন্নয়নশীল ইউএইর স্বাস্থ্যখাত দক্ষ চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ান ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য নতুন দিগন্ত তৈরি করেছে।
তবে সম্ভাবনার পাশাপাশি বেশ কিছু বড় চ্যালেঞ্জও রয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক মানের লাইসেন্সিং পরীক্ষা, ভাষাগত দক্ষতা, ডকুমেন্টেশন জটিলতা, ভিসা ও পেশাগত স্বীকৃতি সব মিলিয়ে নতুন কর্মীদের জন্য পথটি এখনও কঠিন।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশি চিকিৎসকরা ইতোমধ্যে কঠোর পরিশ্রম ও মানবিক সেবার মাধ্যমে আমিরাতে সুনাম অর্জন করেছেন। কিন্তু এই অর্জন ধরে রাখা ও আরও বিস্তৃত করতে বাংলাদেশি চিকিৎসা শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণকে ইউএই–র মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা জরুরি।
সেমিনারে বক্তারা জোর দিয়ে বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের চিকিৎসা সেবার মান বাড়াতে বাংলাদেশ দূতাবাস, কনস্যুলেট, প্রবাসী চিকিৎসক, ফার্মাসিস্ট, গণমাধ্যমকর্মী এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বিত ও সুসংগঠিত পদক্ষেপ প্রয়োজন।
সেমিনারের শেষে ইউএই–র স্বাস্থ্যখাতে বাংলাদেশি পেশাজীবীদের আরও শক্তিশালী অবস্থান নিশ্চিত করতে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণের আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়। বক্তারা মত দেন, প্রশিক্ষণ উন্নয়ন, পেশাগত সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক মানে স্বাস্থ্যকর্মী তৈরিই হতে হবে ভবিষ্যৎ লক্ষ্য। এতে বৈশ্বিক মানবসম্পদ বাজারে বাংলাদেশের সুনাম আরও বৃদ্ধি পাবে।