চুক্তি অনুযায়ী, এপিএম টার্মিনালস চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ এবং পরিচালনায় ৩৩ বছরের জন্য দায়িত্ব পেয়েছে। এই সময়ের প্রথম তিন বছরে টার্মিনাল নির্মাণ ও পরবর্তী ৩০ বছর পরিচালনার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। পাবলিক-পার্টনারশিপের (পিপিপি) চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া চরে টার্মিনাল নির্মাণের জন্য ৫৫ কোটি ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ছয় হাজার ৭শ কোটি টাকা) বিনিয়োগ করবে এপিএম টার্মিনালস। চুক্তি স্বাক্ষরের দিনই সাইনিং মানি হিসেবে ২৫০ কোটি টাকা পেয়েছে বাংলাদেশ।
চুক্তি অনুযায়ী লালদিয়া টার্মিনালে বছরে আট থেকে দশ লাখ টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা থাকবে। এর মধ্যে আট লাখ পর্যন্ত প্রতি টিইইউএসে বাংলাদেশ পাবে ২১ ডলার করে। এর চেয়ে বেশি কনটেইনার হ্যান্ডলিং হলে প্রতি টিইইউএসের জন্য ২৩ ডলার করে পাবে বাংলাদেশ।
রাজধানী ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জের পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনালটি (পিআইসিটি) ২২ বছর পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছে মেডলগ এসএ। চুক্তি অনুযায়ী মেডলগ পানগাঁও টার্মিনালে মোট চার কোটি ডলার, যা বর্তমানে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৪৯০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। চুক্তি স্বাক্ষরের দিনই সাইনিং মানি হিসেবে ১৮ কোটি টাকা পেয়েছে বাংলাদেশ।
জানা যায়, লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ২০২১ সালের জুনে বাংলাদেশের সঙ্গে ডেনমার্ক সরকারের জি টু জি সমঝোতা হয়। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম শিপিং কোম্পানি মায়ের্সক লাইন্সের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এপিএম টার্মিনালস। এপিএম টার্মিনালস বিশ্বের ৩৩টি দেশে ৬০টি টার্মিনাল ও বন্দর পরিচালনা করছে।
তিনি বলেন, ‘বিদেশি অপারেটর বলে কোনো কথা নেই। এগুলো গ্লোবাল অপারেটর। এপিএম টার্মিনালও একটি গ্লোবাল টার্মিনাল। এখন আশপাশের দেশ মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, চীন, ভারত, পাকিস্তান সব দেশের বন্দর ইন্টারন্যাশনাল টার্মিনাল অপারেটররাই অপারেশন করছে। এখন বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় আমাদের বসে থাকার কোনো কারণ নেই।’
এই বন্দর বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, ‘মোট কথা হলো- সরকার কীভাবে দিচ্ছে, তার ওপর নির্ভর করবে। তবে লালদিয়া গ্লোবাল অপারেটরদের দেওয়ার বিষয়টি ইতিবাচক। এতে বন্দরগুলো প্রযুক্তিনির্ভর হবে। দেশ এগিয়ে যাবে। ব্যবসায়ীরা সুবিধা পাবেন।’
দুই টার্মিনালের চুক্তির বিষয়ে কথা হলে বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ জাগো নিউজকে বলেন, ‘এটি একটি ভালো উদ্যোগ। বিশেষ করে লালদিয়ায় শতভাগ বিনিয়োগকারী আসবে। বর্তমান বন্দরে বড় জাহাজ ঢুকতে পারে না। লালদিয়ার চরটি হলো কর্ণফুলী নদীর মোহনার দিকে। লালদিয়ায় টার্মিনাল হলে ১১ মিটার কিংবা তারও কিছু বেশি ড্রাফটের জাহাজ ঢুকতে পারবে।’
‘ওখানে এপিএম টার্মিনাল জেটি বানালে একটি মডার্ন জেটি হবে। তারা (এপিএম) নিজেদের প্ল্যান অনুযায়ী করবে। বিশ্বে বন্দর পরিচালনায় তাদের অভিজ্ঞতা রয়েছে। তারা অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে লালদিয়ায় টার্মিনাল নির্মাণ করবে। এতে অন্যরাও তাদের কাছ থেকে শিখতে পারবে।’









