চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেছেন, অবৈধ ফেসবুক টিভি চ্যানেল “সি প্লাস” কর্তৃপক্ষ তার কাছ থেকে নগদ ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে ব্যর্থ হলে, তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার, সাজানো ইয়াবা মামলা এবং সামাজিকভাবে হেয় করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আইয়ুব আলী তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় বরাবর দাখিল করা লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, তিনি দীর্ঘদিন দুবাই প্রবাস জীবন শেষে দেশে বৈধভাবে মাছের ব্যবসা করছেন। অথচ “সি প্লাস” নামের অবৈধ ফেসবুক টিভি চ্যানেলটি কোনো সরকারি অনুমোদন ছাড়াই (বিটিআরসি’র অনুমতি ব্যতিরেকে) সম্প্রচার চালাচ্ছে এবং মিথ্যা সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে তার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সুনাম নষ্ট করছে।
চাঁদাবাজির অভিযোগ- অভিযোগপত্রে বলা হয়, “সি প্লাস”-এর মালিক আলমগীর অপু ও প্রতিনিধি দেবপ্রিয় তার কাছে নগদ ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তিনি টাকা না দেওয়ায় পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার শুরু হয়। আইয়ুব আলীর দাবি, এটি দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ধারা ৩৮৫ ও ৩৮৬ অনুযায়ী চাঁদাবাজির শামিল।
সাজানো ইয়াবা মামলা- ব্যবসায়ী আরও অভিযোগ করেন, র্যাব-৭ কে প্রভাবিত করে তার বিরুদ্ধে বাকলিয়া থানায় মামলা নং-২৩, তাং: ১৩/০৬/২০২৫ ইং দায়ের করা হয়। সেই মামলায় তাকে ২২৩ পিস ইয়াবাসহ অভিযুক্ত দেখানো হয়। শুধু তাই নয়, তার স্ত্রী লুতফুর নিসা গোলাপ ও এমনকি দুই বছরের শিশুকেও ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে সাজানো নাটক করা হয়। তিনি এটিকে “চরম অমানবিক ও পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র” বলে উল্লেখ করেন। অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ- আইয়ুব আলী অভিযোগ করেন, অভিযানের সময় তার বাসা থেকে ৩৩ লক্ষ টাকা জব্দ করা হলেও মাত্র ১২,৪৩,৫০০ টাকা তালিকাভুক্ত করা হয়। বাকি ২০ লক্ষ ৫৬ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ করা হয়, যা তিনি “সি প্লাস”-এর প্রভাবিত কর্মকাণ্ডের অংশ বলে দাবি করেছেন। পরিবারের ওপর মানসিক নির্যাতন-অভিযোগে বলা হয়, “সি প্লাস” টিভি তার ও তার স্ত্রীর হাতে এন্ড ক্যাপ লাগিয়ে ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে প্রচার করে। ভিডিও প্রচারের পর স্ত্রী চরম অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। আইয়ুব আলীর দাবি, এটি কেবল তার পরিবারের মানসিক ভাঙনই সৃষ্টি করেনি, বরং সাংবাদিকতার নৈতিকতারও চরম লঙ্ঘন। ষড়যন্ত্রের হোতা-
ব্যবসায়ীর অভিযোগ অনুযায়ী, ধর্মপুরের সৌদিয়া প্রবাসী যুবলীগ নেতা শহীদুল ইসলাম বাবু এই সমগ্র ষড়যন্ত্রের মূল হোতা। তিনি সি প্লাসকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে তাকে সামাজিকভাবে ধ্বংস করার চেষ্টা করছেন।
আইনগত দিক -বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০১: অনুমোদন ছাড়া সম্প্রচার পরিচালনা দণ্ডনীয় অপরাধ। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ (ধারা ২৫, ২৯, ৩১): মিথ্যা তথ্য প্রচার, মানহানি ও রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচার দণ্ডনীয় অপরাধ। দণ্ডবিধি ১৮৬০ (ধারা ৩৮৫, ৩৮৬, ৪২০, ৫০০-৫০৩): চাঁদাবাজি, প্রতারণা, মানহানি ও আর্থিক আত্মসাৎ দণ্ডনীয় অপরাধ।
ব্যবসায়ীর আবেদন- আইয়ুব আলী তার আবেদনে পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেছেন—
১. অবিলম্বে অবৈধ ফেসবুক টিভি চ্যানেল “সি প্লাস” বন্ধ করা। ২. চাঁদাবাজি, অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ড তদন্ত করে দায়ীদের আইনের আওতায় আনা। ৩. বাকলিয়া থানায় দায়েরকৃত সাজানো ইয়াবা মামলা প্রত্যাহার। ৪. আত্মসাৎ হওয়া ২০ লক্ষ ৫৬ হাজার ৫০০ টাকা ফেরত প্রদান।৫. তার পরিবারকে সামাজিক ও আইনগত সুরক্ষা নিশ্চিত করা।