পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার গাইঘাটা এলাকায় রাস্তার নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগে এলজিইডির কার্য-সহকারীকে গণপিটুনি দেওয়ার ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তদন্তে দেখা গেছে, বৃষ্টির কারণে রাস্তার কার্পেটিং কাজের একটি অংশে কম্প্যাকশন সঠিকভাবে না হওয়ায় সমস্যা দেখা দেয়, তবে সার্বিকভাবে কাজের গুণগত মান সন্তোষজনক বলেই প্রতীয়মান হয়েছে।
তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (চঃদাঃ) মো. আনিসুল ওহাব খানের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত দল ৩ আগস্ট সরেজমিনে পরিদর্শনে যান। এসময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী প্রকৌশলী, উপজেলা প্রকৌশলী, উপ-সহকারী প্রকৌশলী এবং সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিনিধি। তারা স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন এবং প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন।স্থানীয়রা জানান, প্রায় এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই রাস্তার নির্মাণকাজে নিম্নমানের খোয়া, মাটির ওপর কার্পেটিং ও হাত দিয়ে ওঠে যাওয়া মালামালের অভিযোগ ছিল। ফলে ২ আগস্ট বিক্ষুব্ধ জনতা কাজ বন্ধ করে দেয় এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত কার্য-সহকারী জাহিদুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। তবে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ১ আগস্ট বিকেলে কাজ চলাকালীন হঠাৎ ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়, ফলে বিছানো কার্পেটিং রোলিং করা সম্ভব হয়নি। বৃষ্টির কারণে প্রাইম কোটের ওপরে ধুলাবালি ও পানি জমে থাকায় পরের দিন কাজের মানে সমস্যার সৃষ্টি হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন তাৎক্ষণিকভাবে বিছানো মালামাল সরিয়ে পুনরায় কাজ না করায় জনমনে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তদন্তে আরও বলা হয় WBM এর thickness ও খোয়ার মান মোটামুটি সন্তোষজনক। carpeting এর thickness ও gradation নির্ধারিত মান অনুযায়ী ছিল। WBM এ প্রায় ৩০% ফিলার পার্টিকেল (#4 sieve pass) পাওয়া গেছে, যা কিছুটা বেশি হলেও সহনীয় মাত্রার কাছাকাছি। প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী, ভবিষ্যতে এ ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় আবহাওয়ার পূর্বাভাস বিবেচনায় রাখা এবং কাজ শুরুর আগে সাইট পরিস্কারসহ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এবিষয়ে বোদা উপজেলা এলজিএডির উপজেলা প্রকৌশলী (অঃ দাঃ) মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, “গাইঘাটা এলাকার সড়ক উন্নয়ন কাজের একটি অংশে যে ত্রুটির অভিযোগ উঠেছিল, তা গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হয়েছে। তদন্তে দেখা গেছে, ১ আগস্ট হঠাৎ বৃষ্টির কারণে কার্পেটিংয়ের রোলিং করা সম্ভব হয়নি। এতে প্রাইম কোটের ওপরে ধুলাবালি ও পানি জমে গিয়ে পরদিন কাজে কিছুটা গুণগত সমস্যা দেখা দেয়। তবে পুরো প্রকল্পের গুণগত মান মোটামুটি সন্তোষজনক রয়েছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে।