1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:২৩ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
বৃহত্তর কুমিল্লাকে কুমিল্লা বিভাগ করার জন্য মানববন্ধন অনুষ্ঠিত! গাইবান্ধায় সেবামূলক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত নবীনগরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন নবীনগরে অফিসার্স ক্লাবের উদ্যোগে বিদায় সংবর্ধনা বোদায় দূর্গাপুজা উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হালদায় বিষপ্রয়োগকারীদের তথ্য দিলেই পুরস্কার ঘোষণা আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে গলাচিপায় প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত কালিহাতীর বল্লায় বিএনপির কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা সাম্যের বাংলাদেশ গড়ব–এম. জহির উদ্দিন স্বপন গোবিন্দগঞ্জ রিপোর্টার্স ফোরামের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

ঠাকুরগাঁওয়ে খয়রাতি সাহায্য,(জিআর)রিলিফ প্রকল্পের ৬০০ টন চাল আত্মসাতের অভিযোগ

জাহিরুল ইসলাম রনি, ঠাকুরগাঁও
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫

ঠাকুরগাঁওয়ে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের ভুয়া তালিকা আর নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে খয়রাতি সাহায্য, জেনারেল রিলিফ (জিআর) প্রকল্পের ৬০০ টন চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের লোকেদের ও দালাল চক্রের যোগসাজসে দলীয় নেতা-কর্মী ও তাদের সহযোগিরা ভূয়া প্রকল্প জমা দিয়ে এসব চাল গোপনে তুলে কালোবাজারে বিক্রিরও অভিযোগ রয়েছে। আর এতে এতদিকে যেমন সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছে প্রকৃত ভুক্তভোগী প্রতিষ্ঠানগুলি অপরদিকে ধরা ছোয়ার বাহিরেই রয়ে যাচ্ছে অভিযুক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠনগুলি।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয়ের তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের খয়রাতি সাহায্য (জিআর) প্রকল্পের আওতায় এতিমখানা, লিল্লাহ্ বোডিং, অনাথ আশ্রম, শিশু সদন, ওয়াজ মাহফিল, মন্দিরে নামযজ্ঞ ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে খাদ্য কর্মসূচির আওতায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ৬০০ টন খাদ্যশস্য (চাল) বরাদ্দ দেওয়া হয়। যা পুরো জেলায় ৭শ টিরও বেশি প্রতিষ্ঠানে এবং প্রায় এক তৃতীয়াংশই দেয়া হয়েছে সদর উপজেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খাড়–য়াডাঙ্গা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ে নাম সর্বস্ব প্রবেশদাড় থাকলেও একটি মাত্র ঘর , সেটিও স্টোর রুম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে । একপাশে মাইক অন্যপাশে খাটিয়া ও একটি ট্রাঙ্ক। সেখানে অস্বিত্বই খুজে পাওয়া যায়নি কোন আবাসিক কিংবা অনাবাশিক ছাত্র ছাত্রীর। মাদ্রাসার শিক্ষক বলছেন, প্রতিষ্ঠান সংষ্কারের মত প্রকৃত কারন দেখালে বরাদ্দ পাওয়া যায়না তাই এভাবেই বরাদ্দ নিতে হচ্ছে। একই চিত্রের দেখা মেলে সদর উপজেলা প্রশাসনের একবারে সামনেই অবস্থিত জামিয়া কাছিমিয়া লিল্লাহ বোর্ডিং, কিসমত চামেশ^রী কেরাতুল কোরআন হাফেজিয়া মাদ্রাসা, সদর উপজেলার ফাড়াবাড়ি এলাকার হাজী ইসমাইললিয়া উলুম ছালেহিয়া মাদ্রাসা ও এতিম খানা সহ আরো অগনিত প্রতিষ্ঠানে। আবার সদরের মুথুরাপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ও শোল্টহরী আলিম মাদ্রাসার ইছালে ছাওয়াবের অনুষ্ঠানে গত ২ মাসেও কোন ধরনের ওয়াজ মাহফিল বা ইসলামী জলসা অনুষ্ঠিত না হলেও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আবেদন করে উঠিয়েছে বরাদ্দের চাল ।

প্রজ্ঞাপনের ২য় অনুচ্ছেদে জিআর বরাদ্দের চাল বিতরণে প্রতিষ্ঠান গুলির অস্তিত্ব নিবন্ধন ও উভয় ক্ষেত্রে প্রাপ্তির যোগ্যতা যাচাইয়ের দায়িত্ব উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)র ওপর ন্যাস্ত থাকলেও এতগুলো প্রতিষ্ঠান যাচাই বাছাই করা সম্ভব নয় বলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খায়রুল ইসলাম জানান, আপনারাতো শুধু কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের তালিকা পেয়েছেন আর এ বিষয়ে অবগত হয়েছেন। জেলায় এতগুলি প্রতিষ্ঠানে এ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে যে এতগুলো প্রতিষ্ঠান দেখা সম্ভব না।

এ বিষয়ে নিদৃষ্ট সংখ্যক এতিম বাচ্চা ও আবেদনের যোগ্যতা থাকার পরও আবেদন করেও বরাদ্দের চাল না পেয়ে লিখিত অভিযোগ করেন সদর উপজেলার দুটি এতিমখানার তত্বাবধায়ক আবদুল্লাহ বাকী ও আব্দুল খালেক নামের দুজন পরিচালক সহ আরো অনেকে। অভিযোগে তারা জানান, সময়মত আবেদন করে যোগ্যতা থাকার পরও তারা জিআর বরাদ্দের চাল পাননি। কারন, সংশ্লিষ্ট দফতরের অফিস সহকারীরা ও দালাল চক্র সিন্ডিকেটের মাধ্যমে যাচাই করেন যে কোন আবেদনটি জেলা প্রশাসকের হাতে পৌছাবে আর কোনটি পৌছাবেনা। বিগত সময়েও এ চক্রটি একইভাবে এ ধরনের দূর্নীতি করে আসছে আর তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সত্যিকার অর্থে জিআর চাল পাওয়ার দাবীদার প্রতিষ্ঠানগুলি ও অসংখ্য এতিম বাচ্চা।

সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু শোয়েব খান জানান, বরাদ্দ দেয়ার আগে অভিযোগ আসলে আমাদের কিছু করার থাকে। পরে আর কিছুই করার থাকেনা। এ বরাদ্দটি মূলত জেলা প্রশাসক মহোদয় দিয়ে থাকেন। এ বরাদ্দের চালের বিষয়ে আসলে আমরাও অতিষ্ট। প্রচুর দূর্নীতি হয় এতে। দেখা গেছে একি ব্যাক্তি একাধিকবার আবেদন করেন আবার কেউ ভূয়া ওয়াজ মাহফিলের কথা বলে কিংবা নামকাওয়াস্তে প্রতিষ্ঠানের নামে বরাদ্দের চাল নেয়। লোকবল সংকটের কারনে এসব ক্রস চেক করাটা ভিষণ কঠিন হয়ে দাড়ায়।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা বলেন, জিআর বরাদ্দের যে খাদ্য সহায়তা পাই তা নীতিমালা অনুযায়ী সব প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে যাচাই করেই তাদের দেবার চেষ্টা করি। যাচাই বাছাইয়ের পরও যদি কোন প্রতিষ্ঠান এটা নিয়ে কোন ধরনের দূর্নীতির সাথে যুক্ত থাকে তবে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো এবং পরবর্তীতে এসব প্রতিষ্ঠান যেনো আর এ বরাদ্দ না পায় সে ব্যবস্থাও করবো।

এই ধরনের দুর্নীতি বন্ধ করতে হলে, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সেই সাথে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা যাচাই করা এবং বরাদ্দ বিতরণে কঠোর নজরদারি প্রয়োজন বলে মনে করছেন জেলার সুশিল সমাজ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট