“চেক ছিনতাই ও হত্যার হুমকি: ঠিকাদার আছহাব উদ্দীনের উপর সন্ত্রাসী হামলার বিচার দাবি, পুলিশ কমিশনারের হস্তক্ষেপ কামনা”
চট্টগ্রাম শহরের এক গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো খাতে দায়িত্ব পালনকারী সরকারি তালিকাভুক্ত ঠিকাদার মোঃ আছহাব উদ্দীন বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল)-এর ঠিকাদার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি ধারাবাহিকভাবে সন্ত্রাসী হামলা, চেক ছিনতাই, শারীরিক নির্যাতন এবং প্রাণনাশের হুমকির শিকার হয়েছেন বলে একাধিক থানায় দায়েরকৃত সাধারণ ডায়েরিতে অভিযোগ করেছেন।
সর্বশেষ অভিযোগ অনুযায়ী, গত ২২ জুলাই কেজিডিসিএল-এর প্রধান কার্যালয়ের নিচতলার মসজিদের সামনে ঠিকাদার আছহাব উদ্দীনের উপর হামলা চালানো হয়। চান্দগাঁও থানার বাহির সিগন্যাল এলাকার বাসিন্দা কোনাল বড়ুয়া কেনির নেতৃত্বে ৪/৫ জনের একটি সন্ত্রাসী দল এ হামলায় অংশ নেয়। তারা শুধুমাত্র শারীরিকভাবে আঘাতই করেনি, বরং তার হাত থেকে ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও ব্যাংক চেকপত্র ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় পরদিন, ২৩ জুলাই আছহাব উদ্দীন চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় একটি জিডি দায়ের করেন। তবে এটাই ছিল না একমাত্র ঘটনা। এর আগেও ১৫ জুন বহদ্দারহাট পুকুর পাড় এলাকা থেকে তাকে জোরপূর্বক অপহরণ করে নগরীর মৌলভী পুকুর পাড়ের একটি পরিত্যক্ত ভবনে আটকে রেখে ব্যাংক চেক এবং স্ট্যাম্প লিখিয়ে নেওয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, এই ঘটনার বিচার চেয়ে তিনি আদালতে সি.আর মামলা (নং: ৮৪৪/২৫) দায়ের করার পর থেকে বিবাদীরা আরও হিংস্র হয়ে ওঠে। ২৭ জুলাই বহদ্দারহাট মোড়ে তাকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। তাঁকে স্পষ্ট জানানো হয়, মামলা তুলে না নিলে তাকে হত্যা করা হবে। এই ঘটনায় তিনি চান্দগাঁও থানায় আরও একটি জিডি (নং: ১৮৯১, তারিখ: ২৭/০৭/২০২৫) দায়ের করেন। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অধীন চান্দগাঁও থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিউটি অফিসার রাশেদুল ইসলাম জিডিটি গ্রহণ করে এসআই (নিরস্ত্র) মোঃ শাহজাহানকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না হওয়ায় ভুক্তভোগী ও তার পরিবার শঙ্কিত ও আতঙ্কগ্রস্ত। একজন সরকারি প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার যখন দিনের পর দিন এমন ভয়ংকর চক্রের হুমকি ও নির্যাতনের শিকার হন এবং তার জীবনের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে—তখন শুধু থানা পর্যায়ের ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন আরও দৃঢ় পদক্ষেপ। তাই ভুক্তভোগী মোঃ আছহাব উদ্দীন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনারের প্রতি সরাসরি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আশা করছেন, সম্মানিত পুলিশ কমিশনার নিজে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখে অভিযুক্ত সন্ত্রাসী কোনাল বড়ুয়া কেনি ও তার সহযোগীদের দ্রুত গ্রেফতার, জিজ্ঞাসাবাদ এবং আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেবেন। এ ঘটনা শুধু একজন ব্যক্তির ওপর হামলার বিষয় নয়, বরং তা চট্টগ্রাম শহরের আইনশৃঙ্খলা, ব্যবসায়িক পরিবেশ এবং নাগরিক নিরাপত্তার ওপর সরাসরি আঘাত। এভাবে একজন ঠিকাদার অফিস চত্বরে হামলার শিকার হয়ে, চেক হারিয়ে, বারবার থানায় ঘুরে নিজের নিরাপত্তার আকুতি জানালে—তা গোটা প্রশাসনের ওপরই প্রশ্ন তোলে। এখনই সময়, প্রশাসন প্রমাণ করুক—নিরাপরাধ একজন নাগরিককে ন্যায়ের বাইরে ঠেলে দিয়ে অপরাধীদের সহনশীলতা দেখাবে না।
আইন তার নিজস্ব গতিতেই চলবে—এই বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে পুলিশ কমিশনারের জরুরি হস্তক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।