২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আজ দেশের অন্যতম পুরনো এবং সুপ্রতিষ্ঠিত যাত্রী অধিকার সংগঠন হিসেবে দেশজুড়ে পরিচিত। সড়কে শৃঙ্খলা, গণপরিবহনে শোষণ ও অনিয়মের প্রতিবাদ, দুর্ঘটনার প্রতিবেদন ও গবেষণা, চালক প্রশিক্ষণ, সড়ক নিরাপত্তা ও ভাড়া নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে নিরলসভাবে কাজ করে আসছে এই সংগঠনটি।
দুই দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি শুধু সমস্যার চিত্র তুলে ধরেনি, বরং নীতিনির্ধারকদের কাছে সুপরিকল্পিত ও তথ্যভিত্তিক সুপারিশও দিয়ে এসেছে। সংগঠনটির সরব উপস্থিতি গণমাধ্যম, আদালত ও প্রশাসনের কাছে একটি আস্থার জায়গা তৈরি করেছে।
সংগঠনের অবদান ও কার্যক্রমঃ সড়ক দুর্ঘটনার তথ্যপ্রকাশ ও বিশ্লেষণ: প্রতি মাসেই সংগঠনটি সড়ক, রেল ও নৌপথে দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান প্রকাশ করে। দুর্ঘটনার ধরন, কারণ ও পর্যালোচনার ভিত্তিতে তৈরি করা এই প্রতিবেদনগুলো নীতিনির্ধারক, গণমাধ্যম এবং গবেষকদের কাছে অত্যন্ত মূল্যবান দলিল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
ভাড়া নিয়ন্ত্রণ ও যাত্রী হয়রানির বিরুদ্ধে অবস্থান: সংগঠনটি নিয়মিতভাবে গণপরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া, চাঁদাবাজি ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আসছে এবং সরকারকে ন্যায্য ভাড়া কাঠামো নির্ধারণে প্রস্তাব দিয়েছে।
যাত্রী কল্যাণ রোড সেইফটি একাডেমি: সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংগঠনটি পরিচালনা করছে একটি সরকারি নিবন্ধিত ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টার – “যাত্রী কল্যাণ রোড সেইফটি একাডেমি”। এ একাডেমির মাধ্যমে নিয়মিতভাবে অভিজ্ঞ ও সুশিক্ষিত ড্রাইভার তৈরি করা হচ্ছে। এই উদ্যোগ সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
ঈদ ও উৎসবকেন্দ্রিক নজরদারি: ঈদের সময় অতিরিক্ত ভাড়া, পরিবহন সংকট ও নিরাপত্তা ঘাটতির বিষয়ে প্রতিবেদন ও সুপারিশ উপস্থাপন করে সমিতি প্রতিবারই আলোচনায় উঠে আসে।
সংগ্রামী মহাসচিব মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরীর নেতৃত্বঃ বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী একজন আপসহীন, নির্ভীক ও সংগ্রামী নাগরিক অধিকারকর্মী। তিনি গণপরিবহন খাতে সিন্ডিকেট, দুর্নীতি ও অদক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বহুবার হুমকি, মিথ্যা মামলা ও কারাবরণের শিকার হয়েছেন। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ২০১৮ সালের ঘটনা, যখন সড়ক নিরাপত্তা আন্দোলনের সময় তার বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল তাকে চুপ করিয়ে দেওয়া। তিনি গ্রেপ্তার হয়ে জেল খেটেছেন, কিন্তু পরবর্তীতে আদালতে তার নির্দোষতা প্রমাণিত হয়।
তার ভাষায়: “আমি ভয় পাইনি, মাথা নত করিনি। জনগণের পাশে ছিলাম, আছি, থাকব। আমার সংগঠনের সংগ্রাম শুধুই সড়কের নিরাপত্তার জন্য নয়, এটি একটি সামাজিক ন্যায়ের আন্দোলন।”
এই সংগঠনের পক্ষ থেকে বার্তা
দীর্ঘ ২ দশকের পথচলায় সংগঠনটি স্পষ্টভাবে দেখিয়ে দিয়েছে—একটি সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়তে হলে যাত্রী, চালক, প্রশাসন, গণমাধ্যম এবং সরকারের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি দেশের প্রতিটি নাগরিক, গণমাধ্যমকর্মী এবং নীতিনির্ধারকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে—নিরাপদ, সাশ্রয়ী ও মানবিক গণপরিবহন ব্যবস্থা গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রাখার।
সুপ্রিয় দেশবাসী,
সড়ক শুধু যানবাহনের চলার জায়গা নয়—এটি আমাদের জীবনের নিরাপত্তা, আমাদের পরিবারের আশা, আর প্রতিটি গন্তব্যে পৌঁছানোর দৃঢ় পথ। আজ এই সড়কে প্রতিদিন ঘটে অসংখ্য দুর্ঘটনা, লাশ হয় নিরীহ যাত্রী, আহত হয় অসংখ্য পরিবার। অথচ এই নৈরাজ্য, এই দুর্নীতি, এই সহিংসতা কেউ তুলে ধরে না, কেউ প্রতিবাদ করে না—শুধু একজন ছাড়া। তিনি হচ্ছেন—মজলুম জননেতা, নির্যাতিত যাত্রীবন্ধু মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তিনি কোনো রাজনৈতিক শক্তির আশ্রয়ে নন, তিনি ভরসা রাখেন জনগণের ওপর, সাধারণ যাত্রীর ওপর। তার হাতেই রয়েছে সেই পতাকা—যেখানে লেখা রয়েছে নিরাপদ সড়ক, সুশৃঙ্খল গণপরিবহন, সবার অধিকার। আমি একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির হয়ে আপনাদের প্রতি এই আহ্বান জানাচ্ছি— এসে দাঁড়ান,
হাত রাখুন মোজাম্মেল হক চৌধুরীর হাতে, গড়ে তুলুন নিরাপদ বাংলাদেশ। এই আন্দোলন ঘরে ঘরে ছড়িয়ে দিন—পথে, ঘাটে, হাটে, শহরে, গ্রামে, রেলস্টেশনে, বাস টার্মিনালে।
এই দেশ আমাদের, এই সড়ক আমাদের/অধিকার আমাদের আদায় করে নিতে হবে সংগঠিত হয়ে, সচেতন হয়ে।/বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পতাকা এখন আপনার হাতে তুলে নেওয়ার সময়।/আপনি আসবেন, আপনি বদলাবেন বাংলাদেশের সড়ক নিরাপত্তা অবস্থা ।
জয় হোক যাত্রীর, জয় হোক মানুষের!
মোঃ মোস্তানছিরুল হক চৌধুরী, যুগ্ন সম্পাদক, বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি ছাত্র পরিষদ।