বাংলাদেশ দূতাবাস, মানামা আনন্দঘন পরিবেশে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ১৬ মে ২০২৫ বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন করেছে। এ উপলক্ষে বাংলাদেশি সাংস্কৃতিকে তুলে ধরার জন্য বাংলাদেশ দূতাবাসের হল রুম, আঙ্গিনা, প্রবেশদ্বার বর্ণিল রঙ, রঙিন কাগজ, বেলুন, ফেস্টুন, পোষ্টার, ফুল, নকসীকাঁথা, ইত্যাদি দিয়ে সাজানো হয়, যা বাংলাদেশ দূতাবাসকে এক টুকরো বাংলাদেশে পরিণত করে। অনুষ্ঠানে সাংবাদিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কবি-সাহিত্যিক, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, ব্যবসায়ী, বাংলাদেশ স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী ও গণ্যমাণ্য ব্যক্তি এবং প্রবাসী বাংলাদেশিরা উপস্থিত ছিলেন। প্রবাসী বাংলাদেশিদের পরিহিত ঐতিহ্যবাহী রঙিন পোষাক, তাঁদের প্রাণের হিল্লোল, আবেগ, ভালবাসা ও হৈ-হুল্লোড়ে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠান হয়ে উঠে প্রাণবন্ত ও উৎসবমুখর। এছাড়া, অনুষ্ঠানে দূতাবাস ও বাংলাদেশ কমিউনিটির পক্ষ থেকে পাঁচটি স্টল স্থাপন করা হয়। যেখানে অতিথিদের জন্য বিভিন্ন ধরনের ঐতিহ্যবাহী দেশীয় পিঠা, পায়েস, চটপটিসহ বিভিন্ন ধরনের খাবারের আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি শিশুদের বিনোদনের জন্য দূতাবাস প্রাঙ্গণে বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বাহরাইনে নিযুক্ত মান্যবর রাষ্ট্রদূত মো: রইস হাসান সরোয়ার, এনডিসি উপস্থিত অতিথিদের উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি তার বক্তব্যে ‘বাংলা নববর্ষ’ উদযাপন উপলক্ষ্যে যারা উপস্থিত হয়েছেন সকলকে স্বাগতম জানান। ‘বাংলা নববর্ষ’ পালন করা বাংলাদেশের এক পুরানো ঐতিহ্য। বিদেশের মাটিতেও সেই ঐতিহ্যকে ধরে রাখার পাশাপাশি দেশীয় সংস্কৃতিকে একত্রে পালন করার জন্য বাহরাইনে বসবাসরত প্রবাসীদেরকে নিয়ে বাংলাদেশ দূতাবাস বাংলা বর্ষবরণের এই সুন্দর আয়োজন করে। বিশেষকরে নতুন প্রজন্মের কাছে দেশের সংস্কৃতি, কৃষ্টি-কালচার ও ঐতিহ্যকে পরিচয় করার জন্য এই উৎসব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি মনে করেন।
রাষ্ট্রদূত মহোদয় আরো বলেন, যারা আজকের এই ‘বাংলা নববর্ষ’ উদযাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন অনেকেই হয়তো দীর্ঘ দিন ধরে বাহরাইনে বসবাস করে আসছেন। এ দেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সামাজিক জীবন ব্যবস্থা সর্ম্পকে অবগত আছেন। বাহরাইনের সমাজ ও সভ্যতাকে সম্মান করে এদেশের মানুষের সাথে মিলেমিশে সৌহার্দ্যপূর্ণ ও সম্প্রীতিরসাথে বসবাস করতে হবে। পাশাপাশি বাহরাইনের আইন কানুনের প্রতিও সকল প্রবাসীকে শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। বিদেশের মাটিতে যেন দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন না হয় সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিগণ শিশু-কিশোর ও প্রবাসী বাংলাদেশী শিল্পীদের পরিবেশনায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। এতে শিল্পীরা দেশাত্মবোধক গান, রবীন্দ্রসংগীত, লোকগীতিসহ কবিতা, বক্তৃতা, নৃত্য পরিবেশন করেন, যা উপস্থিত অতিথিদেরকে বিমোহিত করে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে দূতাবাসের পক্ষ থেকে অতিথিদেরকে পিঠা, পায়েস, মিষ্টি ও দেশীয় খাবার পরিবেশনের মাধ্যমে আপ্যায়ন করা হয় । উল্লেখ্য, প্রায় তিন শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশি বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে দূতাবাসে উপস্থিত ছিলেন।