1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৯:৩৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
নাগরিক ফোরামের সভাপতিকে নিয়ে  কটাক্ষ: চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের প্রতি খোলা চিঠি বিশ্বনন্দিত ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত! আমি এক হাজার টকশোর যোদ্ধা আমার মনের কথা মানবিকতা ও বিনয়ের প্রতিচ্ছবি: ডা. হাশমত আলী মিয়া ও একটি বইয়ের গল্প ইপিজেড পতেঙ্গায় জনদুর্ভোগ ও যানজট নিরসন কল্পে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত কালিহাতীর সহদেবপুর ইউনিয়নে বিএনপির কর্মীসভা অনুষ্ঠিত গাইবান্ধায় প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের কর্মপরিকল্পনা শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত কায়কোবাদকে নিয়ে অপপ্রচারের প্রতিবাদে ছালিয়াকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির বিক্ষোভ

রবিউল হোসেনের ভ্রমণকাব্য: পাহাড়, মেঘ আর প্রিয়তমার অপেক্ষা!

মোঃ কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৮ মে, ২০২৫

পাহাড় কখনো শুধু নিসর্গ নয়, কখনো তা হয়ে ওঠে এক নিঃশব্দ প্রণয়। মেঘেরা তখন চিঠি লেখে নীল আকাশের খামে, বাতাস হয়ে ওঠে ভ্রমণ পিপাসু হৃদয়ের দীর্ঘশ্বাস। তেমনই এক ভালোবাসার নাম—রবিউল হোসেন।
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর এই সাহসী তরুণ শুধু একজন প্রবাসী নয়, তিনি একজন স্বপ্নচারী। প্রাচ্যের মরুর দেশে, ওমানের রোদেলা বুকে দাঁড়িয়ে তিনি গড়েছেন সাফল্যের সৌধ, হয়েছেন একজন রেমিট্যান্স যোদ্ধা। কিন্তু তার হৃদয় জানে, আয় নয়—আয়ু যেখানে খরচ হয়, তা হলো ভ্রমণ। আর এই ভ্রমণই তার আত্মার অনন্ত প্রেমিকা। এবার তার গন্তব্য ছিল ইন্দোনেশিয়ার অপার সৌন্দর্যে মোড়া পুনচা শহর—যেখানে পাহাড়ের গায়ে মেঘ লুটিয়ে পড়ে, আর বাতাসে ভেসে বেড়ায় নরম হাসির ভাষা। সেই শহরের প্রতিটি ভোর যেন কবিতার মতো, প্রতিটি সন্ধ্যা যেন একটি অপ্রকাশিত প্রেমপত্র।
রবিউলের সাথে আছেন আরও ছয়জন প্রবাসী তরুণ—তারাও জীবন খুঁজছেন নতুন দৃশ্যপটে, নতুন নিঃশ্বাসে। সেই ছায়া ঘেরা পাহাড়ি পথে তারা হাঁটছেন একসাথে, যেন হৃদয়ের গল্পেরা একে একে খুলে যাচ্ছে প্রকৃতির পাতায় পাতায়।
পুনচার পথে দাঁড়িয়ে রবিউল বলেছিলেন, “এই পাহাড়গুলো যেন আমাকে কিছু বলে। আমি শুনি, নীরবে। মেঘেরা যেন প্রশ্ন করে—তোমার প্রিয়জন কোথায়?” সত্যিই তো—প্রিয়জনের চোখে এই দৃশ্য থাকলে, ভ্রমণ হতো আরও এক জীবন!
তবু এই একাকী ভ্রমণও পূর্ণতা পায় যখন হৃদয় হয়ে ওঠে খোলা জানালা, আর প্রকৃতি হয় তার সবচেয়ে আপন। পুনচার রাত, পুনচার আকাশ, আর পাহাড়ের পায়ের শব্দ রবিউলকে শোনায় জীবনের নরম গান। রবিউল হোসেন কোনো একদিন বুঝে উঠতে পারেননি—জীবনের এত ব্যস্ততার মধ্যেও কারো চাহনিতে হারিয়ে যেতে পারেন তিনি। ব্যবসা, প্রবাস, পরিশ্রম—সব ছিল জীবনের নিত্যসঙ্গী। কিন্তু এইবার ইন্দোনেশিয়ার এক পাহাড়ি শহর পুনচায় এসে তিনি যেন প্রথম বুঝলেন, হৃদয় কতটা অব্যক্ত ভাষা বোঝে।
সেই শহরটি যেন কবিতার মত—সবুজে মোড়া, মেঘে ঢাকা, বাতাসে গন্ধ। আর সেই শহরের এক ক্যাফেতে, এক দুপুরে, হঠাৎই দেখা হয়ে গেল তার সঙ্গে। নাম হয়তো মায়া, হয়তো সুরিয়া, কিংবা অন্য কিছু—রবিউল সে নাম ঠিকমতো কখনো জানতে পারেননি। কিন্তু তার হাসি, তার চোখের ভাষা, তার চা পরিবেশন করার অনুপম ভঙ্গি—সবকিছুই ছিল এক রহস্যময় আবেশে ভরা।
সে যখন চা রাখল রবিউলের সামনে, তখন তার চোখে ছিল এক প্রশান্ত চাহনি—না ছিল কোনো ভাষা, না কোনো ছোঁয়া, তবুও রবিউলের ভেতরটা যেন এক ঝটকায় নড়ে উঠল।
তখনই প্রথম মনে হলো, এই শহর শুধু পাহাড়ের নয়, প্রেমেরও।
পরের দিনও রবিউল সেই ক্যাফেতে গেলেন। মেয়েটি ছিল। আগের মতোই হাসল, আগের মতোই নম্র। কিন্তু আজ তার ঠোঁটের কোণে ছিল যেন এক চঞ্চল কৌতুক, চোখে ছিল এক প্রশ্ন—“তুমি কি কালকেও এসেছিলে আমার জন্য?”
রবিউল কোনো উত্তর দিলেন না, শুধু তাকালেন। সেই চোখের ভাষা হয়তো মেয়েটিও বুঝল। দুজনের মাঝে কোনো কথা হলো না, তবুও মনে হলো, বহু কিছু বলা হয়ে গেল।
এরপর আরও দুইদিন। প্রতিদিন সেই ক্যাফে, সেই মেয়ে, সেই চা।
কথা হয়নি কখনোই, শুধু চোখের ভিতর দিয়ে যেন এক অন্যরকম প্রেম চলছিল—শান্ত, গভীর, সীমাহীন। হয়তো
শেষদিন, চলে যাওয়ার সম্ভবনা-তবে
যাবার আগে রবিউল চুপিচুপি একটি ছোট্ট চিরকুট রেখে দিলেন বিলের নিচে—
“তোমার এই নিঃশব্দ ভালোবাসা আমি ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। হয়তো কোনোদিন আবার দেখা হবে।”
মেয়েটি কি সেই চিরকুট পেয়েছিল? তা আজও অজানা।
কিন্তু রবিউল হোসেন জানেন—পুনচার সেই ক্যাফেতে, পাহাড়ের কোল ঘেঁষে, এক মায়াবী চোখের চাহনি তাকে চিরদিনের জন্য ছুঁয়ে দিয়ে গেছে।
এই রচনার শেষ নেই। কারণ রবিউলের জীবন এক চলমান কবিতা—যার প্রতিটি স্তবক নতুন দেশে, নতুন পথে লেখা হচ্ছে। তিনি দেশে ফিরলে সেই অক্ষরগুলো নিয়ে লেখা হবে নতুন এক ভ্রমণগ্রন্থ—ভালবাসা আর অভিজ্ঞতার আলো-ছায়া মেশানো এক অনন্য রচনার।
আজকের জন্য শুধু এটুকু—রবিউল হোসেন, তোমার ভ্রমণ যেন হয়ে ওঠে হৃদয়ের সবচেয়ে উষ্ণ কবিতা। পাহাড় তোমাকে ডাকুক, আর তুমি ফিরে এসো—নতুন গল্প, নতুন আলো আর আমাদের ভালোবাসা নিয়ে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট