ইন্দোনেশিয়ার ঝকঝকে বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে আছে এক স্বপ্নচারী তরুণ। চোখে আত্মবিশ্বাস, ঠোঁটে হাসি, আর পরনে আধুনিকতার ছোঁয়ায় সাজানো পোশাক—হোয়াইট স্নিকার্স, ছেঁড়া-জিন্স আর কালো-সাদা পত্রপল্লবের ছাপা শার্ট যেন তার জীবনের বৈচিত্র্যময় পথে হাঁটার সাক্ষ্য বহন করছে। মাথায় সাদা ক্যাপ, হাতে ঘড়ি—সব মিলিয়ে এক পরিপাটি স্টাইলিশ রূপে যিনি দাঁড়িয়ে আছেন, তিনি আমাদের বোয়ালখালীর সন্তান রবিউল।
রবিউলের গল্প যেন এক রূপকথা। ছোটবেলা কেটেছে চট্টগ্রামের নদী-নালা ঘেরা বোয়ালখালীতে। যেখানে স্বপ্নেরা অনেক সময় কাঁচে আটকে যায়, কিন্তু রবিউল সেই কাঁচ ভেঙে ওমানে পাড়ি জমানো এক সাহসী অভিযাত্রী। ওমানে তিনি শুধু থেমে থাকেননি, গড়ে তুলেছেন নিজের সফল ব্যবসা, তৈরি করেছেন একটি আলোকোজ্জ্বল পরিচিতি। তার বাণিজ্যিক দূরদৃষ্টি, কঠোর পরিশ্রম ও সততার বদৌলতে আজ তিনি এক অনুকরণীয় উদাহরণ।
আর এখন? তিনি ইন্দোনেশিয়ায়। ব্যস্ত সময় থেকে একটু বিরতি নিয়ে স্বস্তির নিশ্বাস নিতে এসেছেন ভিনদেশি বাতাসে। এই সফর শুধু ভ্রমণ নয়, বরং এক আত্মচারণা, নিজেকে নতুনভাবে খুঁজে নেবার মতো এক মধুর যাত্রা। বিমানবন্দরের উজ্জ্বল আলো আর পলিশকরা মেঝে তার সফলতার প্রতিচ্ছবি যেন, যেখানে প্রতিটি ধাপ তাকে নিয়ে গেছে উচ্চতার এক নতুন শিখরে।
রবিউল এখন শুধু একজন প্রবাসী ব্যবসায়ী নন, তিনি ভবিষ্যতের বোয়ালখালীকে নতুন করে কল্পনা করার মতো এক স্বপ্নদ্রষ্টা। তার জীবনযাত্রা, সাহসিকতা, সংস্কৃতিমনস্কতা ও উদারতা আমাদের শিখিয়ে দেয়—চাইলেই ঘরে বসে থাকা সম্ভব নয়, পথ চলতে হয়, দূর পাড়ি দিতে হয়, আর সে পথে থাকতে হয় অটল, নিবেদিত ও স্বপ্নবান।
ইন্দোনেশিয়ার স্নিগ্ধ শহরে দাঁড়িয়ে রবিউল যেন বোয়ালখালীর প্রত্যেক যুবকের জন্য এক জীবন্ত প্রেরণা। তার হাতে যদি থাকে পাসপোর্ট আর ভিসা, তবে হৃদয়ে তিনি বয়ে নিয়ে বেড়ান শিকড়ের টান। সফলতা তাকে অহংকারী করেনি, বরং আরও বিনয়ী করেছে। সে বলে—“আমি একদিন ফিরে আসব, বোয়ালখালীর জন্য কিছু করে যাব, যেন আমার মতো আরও অনেকে রূপকথার রাজপথে হাঁটার সাহস পায়।” তোমার মতো মানুষরাই তো দেশ ও পৃথিবীর গল্পগুলোকে আশার রঙে রাঙিয়ে তোলে, রবিউল। তুমি এগিয়ে যাও, আমরা আছি তোমার পাশে—তোমার গল্প বলব নতুন প্রজন্মকে, বলব—“ওই যে দেখো, রূপকথার রাজপথে এক রবিউল হেঁটে চলেছে, সে আমাদেরই একজন।”