সৌদি আরবের জেদ্দায় বসবাসরত সাতকানিয়ার সুনামধন্য ব্যবসায়ী ওমর ফারুক আজ এক ভয়াবহ প্রতারণার শিকার। গাজীপুরের শারমিন আক্তার নামের এক প্রতারক নারী কৌশলে তার আশ্রয় নিয়ে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে এখন ব্ল্যাকমেইল করছে, মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করছে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুৎসা রটিয়ে তার সম্মানহানি করার চেষ্টা করছে।
প্রতারক শারমিনের ছলচাতুরি: কিভাবে ফাঁদ পাতল?
শারমিন আক্তার প্রথমে সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয়ে একটি হলফনামা তৈরি করে প্রবাসী মোঃ আবদুস সামাদ নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে ভুয়া বিবাহের কাগজ তৈরি করে। উদ্দেশ্য ছিল সৌদি আরবে যাওয়ার বৈধতা পাওয়া এবং সেখানে গিয়ে তার প্রতারণার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা। সৌদি আরবে পৌঁছে সে ওমর ফারুকের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং নিজেকে প্রতারিত নারী হিসেবে উপস্থাপন করে। কৌশলে তার সহানুভূতি আদায় করে জেদ্দায় তার বাসায় আশ্রয় নেয়। তবে, এর আড়ালে লুকিয়ে ছিল এক ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র।
ওমর ফারুকের বিশ্বাস ভেঙে ভয়ঙ্কর প্রতারণা
ওমর ফারুক শারমিনকে বিপদে পড়া এক অসহায় নারী মনে করে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। কিন্তু কিছুদিন পরেই বোঝা যায়, সে কৌশলে তার ব্যক্তিগত মোবাইল ও অন্যান্য ডিভাইস থেকে পারিবারিক ছবি, ব্যবসায়িক তথ্য এবং ব্যক্তিগত গোপন নথি সংগ্রহ করে। এরপর বাংলাদেশে ফিরে ওমর ফারুককে ব্ল্যাকমেইল শুরু করে।প্রথমে টাকা দাবি করে, না দিলে সম্মানহানির হুমকি দেয়।এরপর ফেসবুকসহ সামাজিক মাধ্যমে ওমর ফারুকের নামে অপপ্রচার চালায়।মিথ্যা মামলা ও অভিযোগ দিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে। শারমিনের আসল পরিচয়: ইয়াবা ব্যবসা ও অপরাধজগতের সংযোগ শুধু প্রতারণা নয়, শারমিন আক্তার মাদক ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। গাজীপুরে তার বিরুদ্ধে ইয়াবা সংক্রান্ত একাধিক মামলা রয়েছে। মোঃ আবদুস সামাদ নামে যে ব্যক্তিকে সে স্বামী সাজিয়েছে, সে আসলে ইয়াবা পাচারের মূল পরিকল্পনাকারী। সৌদি আরবে যাওয়ার আসল উদ্দেশ্য ছিল মাদক পাচার। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, শারমিন গাজীপুরে ইয়াবা মামলার পর চট্টগ্রামের পাহাড়তলী এলাকায় পালিয়ে এসে লুকিয়ে থাকে।
সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ: প্রতারক শারমিনের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা প্রয়োজন- ওমর ফারুক বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। তার দাবি: শারমিন আক্তারের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত করে তার অপরাধ প্রমাণ করা হোক।
তার ব্ল্যাকমেইলিং কার্যক্রম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। তার সঙ্গে জড়িত প্রতারণা ও মাদক চক্রের সদস্যদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হোক। চট্টগ্রামের পাহাড়তলী এলাকায় তার অপতৎপরতা বন্ধ করা হোক।
সতর্কবার্তা: প্রতারকদের হাত থেকে সাবধান! শারমিন আক্তারের মতো প্রতারক নারীরা বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায় করছে। সরকার যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আরও অনেক নিরীহ প্রবাসী তার শিকার হতে পারে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে এই প্রতারককে বিচারের আওতায় আনা।প্রতারক শারমিন আক্তার ও কথিত স্বামী সামাদের আসল রহিস্য উদঘাটনের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসতেছ চাঞ্চল্যকর তথ্য–
গাজীপুরের শারমিন আক্তার ও তার কথিত স্বামী মোঃ আবদুস সামাদ নিয়ে নানা অভিযোগ উঠেছে। তাদের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে সত্যতা যাচাই করতে দৈনিক ভোরের আওয়াজ, The Daily Banner, দৈনিক সকালের সময় এবং সময়ে আলো-সহ একাধিক সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকরা তদন্ত শুরু করেছে।
সাংবাদিকদের অনুসন্ধানে যা পাওয়া যাচ্ছে: প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, শারমিন আক্তার ও আবদুস সামাদ একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তারা ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে, ফাঁদে ফেলে নিরীহ মানুষদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয় এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্ল্যাকমেইল করে সম্মানহানি করে থাকে। শারমিন আক্তারের বাড়ি গাজীপুরে হলেও, সে বর্তমানে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী এলাকায় অবস্থান করছে।
তার বিরুদ্ধে গাজীপুরে মাদকের একাধিক মামলা রয়েছে।ওমর ফারুক নামের এক সৌদি প্রবাসী ব্যবসায়ীর আশ্রয় নিয়ে সে প্রতারণা করেছে, তার ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে এবং এখন ব্ল্যাকমেইল করছে। তার কথিত স্বামী আবদুস সামাদ সৌদি আরবে ইয়াবা পাচারের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। ভবিষ্যতে আরও তথ্য প্রকাশ করা হবে-সাংবাদিকদের অনুসন্ধান এখনও চলমান। প্রতারণার এই জাল আরও কতদূর বিস্তৃত এবং কারা কারা এর সঙ্গে জড়িত, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য খুব শিগগিরই প্রকাশ করা হবে। সাধারণ মানুষকে প্রতারকদের ফাঁদ থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে এবং সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি এই প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
চলবে–