1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ০৪:৩২ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
“বাঁশখালীতে ৪ হাজার ইয়াবাসহ টেকনাফের মাদক কারবারি আটক: ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ” হোমনায় মহান মে দিবস উপলক্ষে  বিএনপির বর্ণাঢ্য র‍্যালি  ড. মোহাম্মদ ইউনূস এর শুভ আগমনে বোয়ালখালীবাসীর পক্ষ থেকে হাজী মোহাম্মদ আলম ববির শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা পুলিশ পরিচয়ে ঘরে প্রবেশ করে পরিবারের ৮ জনকে বেঁধে ছয়টি দোকান ঘর গুঁড়িয়ে দিয়ে মালামাল লুট করেছে দুর্বৃত্তরা রোদেলা দুপুরে পারকি সৈকতের বালুকাবেলায় কলম যোদ্ধারা,স্মৃতিময় এক মে দিবস! ড. মোহাম্মদ ইউনূসের দক্ষিণ চট্টগ্রাম সফর সিএমপি কমিশনার ও পাঁচ ওসি পেলেন আইজিপি ব্যাজ সাহস, দক্ষতা ও মানবিক পুলিশিংয়ের স্বীকৃতি আইজি পি ব্যাজ পেলেন ওসি আফতাব উদ্দিন চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের সূচনালগ্নের সাহসী পুরুষ ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন! দৃষ্টি আকর্ষণ

সুবিধাবাদীদের রাজনীতি: বসন্তের কোকিলদের স্বরূপ উন্মোচন!

মোঃ কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: শনিবার, ১ মার্চ, ২০২৫
  • ৬৩ বার পড়া হয়েছে

রাজনীতি একসময় ছিল আদর্শ, ত্যাগ আর জনগণের সেবার প্রতিশ্রুতি। অথচ এখন? এখন রাজনীতি হয়ে গেছে সুবিধাবাদীদের আস্তানা। দল যখন শক্তিশালী, সরকার যখন ক্ষমতায়—তখন চারপাশে নেতা নেতা রব, মুজিব কোট পরে রাতারাতি নেতারূপী ব্যবসায়ীদের আনাগোনা। আর দল যখন দুর্বল, কর্মীরা যখন বিপদে—তখন সেই নেতারা উধাও। মোবাইল বন্ধ, ঘর বন্ধ, মনও বন্ধ। এই দৃশ্যপট নতুন কিছু নয়, তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে এটি প্রকটভাবে ফুটে উঠেছে। এক তৃণমূল কর্মীর আক্ষেপ, “আমরা যখন মার খাই, গুম হই, মামলা মাথায় নিয়ে পালিয়ে বেড়াই, তখন তারা কোথায় থাকে? সুবিধার সময় তারা আমাদের প্রয়োজন মনে করে, আর বিপদের সময় আমাদের নাম্বারটাও ব্লক করে দেয়।” এই কথাগুলো শুধু এক কর্মীর নয়, হাজারো কর্মীর বুক ফাটা আর্তনাদ। তারা চোখের সামনে দেখেছে কীভাবে কিছু সুবিধাবাদী নেতা রাজনীতিকে ব্যবসা বানিয়েছে, কীভাবে আদর্শের নামে শোষণ আর দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম করেছে।
মুজিব কোটের আড়ালে লুটপাটের রাজনীতিঃ
গত দেড় দশকে একদল তথাকথিত নেতা রাতারাতি আবির্ভূত হয়েছে, যারা কোনো রাজনৈতিক সংগ্রামের ইতিহাস ছাড়াই ক্ষমতার সুযোগ নিয়ে নিজেদের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে। মুজিব কোট পরে, আওয়ামী লীগের আদর্শের বুলি কপচিয়ে তারা নিজেদের নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে, অথচ তাদের মূল লক্ষ্য ছিল সম্পদ লুটপাট করা। যেখানে প্রকৃত আওয়ামী কর্মীরা দলীয় আদর্শ রক্ষার জন্য রাজপথে লড়েছে, মামলা-হামলার শিকার হয়েছে, ঠিক সেসময় এক শ্রেণির লুটেরা তথাকথিত নেতা দেশকে শোষণের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে। তারা সরকারি প্রকল্পের নামে শত শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে, বিদেশে সম্পদ গড়েছে, আর দলের প্রকৃত কর্মীদের শুধু ব্যবহার করেছে। তাদের হাত থেকে কেউ রেহাই পায়নি। সরকারি ব্যাংক লুট হয়েছে, মেগা প্রকল্পের নামে জনগণের অর্থ লুট হয়েছে, এমনকি ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে অনেকে ব্যক্তিগত সম্পদের পাহাড় গড়েছে। গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, উন্নয়ন—সবই তাদের জন্য শুধু মুখোশ। আদতে তারা ক্ষমতার সুযোগ নিয়ে নিজেদের জীবন বিলাসিতায় ভরিয়ে তুলেছে, আর তৃণমূল কর্মীদের ঠেলে দিয়েছে দুঃখ-কষ্টের অন্ধকার গহ্বরে। নিবেদিত কর্মীদের করুণ পরিণতিঃআজ যখন দল রাজনৈতিক চাপে, যখন দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে অর্থনৈতিক সংকট তীব্র, তখন সেই সুবিধাবাদী নেতারা গা ঢাকা দিয়েছে। যারা একসময় দলে নিজেদের অবদান নিয়ে বড়াই করত, তারা আজ ফোন ধরতে চায় না, কর্মীদের খোঁজ রাখে না। তৃণমূল কর্মীদের কেউ মামলা নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে, কেউ অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তায় ভুগছে, কেউ আবার প্রতিশোধের শিকার হচ্ছে। অথচ এই কর্মীরাই একদিন দলের জন্য নিজের জীবন বাজি রেখেছিল। একজন কর্মীর আক্ষেপ, “আমরা যারা শেখ হাসিনার জন্য, বঙ্গবন্ধুর জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছিলাম, আজ আমাদের কী অবস্থা? আমাদের নামে একের পর এক মামলা, আমাদের পরিবারের কেউ ভালো নেই, কিন্তু যারা শুধু সুবিধা নিতে এসেছিল, তারা সব লুটপাট করে বিদেশে চলে গেছে! আমরা তাহলে কী পেলাম?”
এই বঞ্চনার ইতিহাস নতুন কিছু নয়, কিন্তু এইবার তা চূড়ান্ত রূপ নিয়েছে। সুবিধাবাদী নেতারা আবারও সুযোগের অপেক্ষায় আছে। তারা জানে, পরিস্থিতি বদলালে তারা আবার ফিরে আসবে, আবার মুজিব কোট পরে নেতা সাজবে, আবার তৃণমূলের শ্রমে গড়া কাঠামোর ওপর ভর করে নিজেরা আরেক দফা লুটপাট চালাবে।
রাজনীতির ভবিষ্যৎ: প্রকৃত নেতৃত্ব কোথায়?
একটি দেশকে এগিয়ে নিতে প্রয়োজন নীতি-আদর্শের রাজনীতি, সুবিধাবাদীদের নয়। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন প্রকৃত নেতা কে, তা স্পষ্ট হয়ে গেছে। যারা দলের প্রয়োজনে লড়েছে, তাদেরই নেতৃত্বে থাকা উচিত। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। দলের ভেতরে থাকা লুটেরারা আবারও সুযোগের অপেক্ষায়।
তৃণমূল কর্মীরা বুঝতে পারছে, এই তথাকথিত নেতাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। তারা শুধু স্বার্থের রাজনীতি করে। এখন প্রশ্ন হলো—এই লুটেরা সংস্কৃতি থেকে মুক্তি কবে মিলবে? দল, রাজনীতি ও দেশ কি বারবার এই প্রতারণার শিকার হবে? নাকি প্রকৃত কর্মীরা এবারই নিজেদের অবস্থান শক্ত করবে?
একজন তৃণমূল কর্মীর জিজ্ঞাসা, “আমরা কি শুধু সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহৃত হবো? আমাদের কষ্ট, আমাদের ত্যাগ কি কখনো স্বীকৃতি পাবে না?”
এই প্রশ্নের উত্তর আজও অজানা। তবে একটা বিষয় নিশ্চিত—এই বসন্তের কোকিলদের যদি প্রতিহত করা না হয়, তবে ভবিষ্যতেও তারা আবার ফিরে আসবে, আবার লুটপাট করবে, আবার আদর্শকে বিক্রি করে দেবে।
রাজনীতিতে বসন্তের কোকিলদের দিন শেষ হোক, প্রকৃত নেতাদের জয় হোক। যারা আদর্শের জন্য লড়াই করেছে, তারাই যেন আগামী দিনে নেতৃত্ব পায়। না হলে এই দেশ শুধু সুবিধাবাদীদের অভয়ারণ্য হয়েই থাকবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট