1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
সোমবার, ০৪ অগাস্ট ২০২৫, ০৮:১২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
শহর পেরিয়ে ভয়ংকর কিশোরগ্যাং কালচারে এখন মিরসরাইয়ে গোবিন্দগঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা উন্নয়নে উপকরণ সামগ্রী বিতরণ গলাচিপা-কলাগাছিয়া সড়কের করুণ দশা, উপেক্ষিত জনদুর্ভোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলম ববিকে আসামি করায় ব্যাপক ক্ষোভ নীলফামারীতে বিদেশি ফল রাম্বুটান চাষাবাদ করে সাফল নারী কৃষি উদ্যোক্তা খাদিজা আক্তার গাইবান্ধা ৮নং বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপি’র দ্বি বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত  গাইবান্ধায় দুলাভাইকে হত্যার হুমকি শ্যালক ও শশুর শাশুড়ির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ ‎পুলিশের প্রতিবেদনে উঠে এলো রংপুরের হিন্দু পাড়ার হামলার ঘটনার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ শ্রীমঙ্গল থেকে ভুলে পঞ্চগড়ে, পরিবারকে ফিরে পেতে চায় ছোট্ট রিয়াদ নবীনগর পৌর শাখার ৫, ৬, ৭,নং ওয়ার্ডের কৃষক দলের উদ্যোগে দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

বাটালি হিলের এক মানবিক গল্প: ফাহমিদা আর অনাহারী কুকুরের সহমর্মিতা

মো. কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪

মানুষের হাতে পা রয়েছে, রয়েছে কাজ করার ক্ষমতা, তবুও কেউ কেউ ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করে। কিন্তু কুকুর? তারা তো কথা বলতে পারে না, তাদের চাহিদার কথা জানাতে পারে না। তাদের বেঁচে থাকার জন্যও খাদ্যের প্রয়োজন, কিন্তু সেটা জোগাড় করার সামর্থ্য তাদের নেই। চট্টগ্রামের বাটালি হিলে প্রতিদিন সকালে এমন অসহায় প্রাণীদের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন এক মানুষ, যিনি প্রকৃত অর্থেই মানবিকতার উদাহরণ হয়ে উঠেছেন। বিশিষ্ট নজরুল সংগীত শিল্পী ও ওয়াসার কর্মরত কর্মকর্তা ফাহমিদা, গত চৌদ্দ বছর ধরে বাটালি হিল এলাকায় অনাহারী কুকুরদের নিজের সন্তানের মতো যত্ন করে যাচ্ছেন। তিনি শুধু তাদের খাওয়ারই ব্যবস্থা করেন না, তাদের চিকিৎসা এবং অন্যান্য পরিচর্যাও করেন। এই কাজটি শুরু করেছিলেন নিঃশব্দে, কোনো প্রচারের আশায় নয়, বরং একান্ত মমতার তাগিদে। এখন এটি তার জীবনের একটি অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বাঁকা চোখে দেখা, কিন্তু স্বীকৃতিহীন মানবিকতা
ফাহমিদার এই পশু সেবার কাজকে অনেকেই বাঁকা চোখে দেখে। সমাজে এমন মানুষের অভাব নেই যারা পশুদের প্রতি ভালোবাসাকে সময়ের অপচয় বলে মনে করে। কেউ কেউ তাকে অযথা সমালোচনা করতেও পিছপা হয় না। কিন্তু তারা বুঝতে পারে না, এই কাজটি আসলে কত বড় মানবিক দৃষ্টান্ত। মানুষ ভিক্ষা করতে পারে, সাহায্য চাইতে পারে। কিন্তু একটি কুকুর? তারা তো কিছু বলতে পারে না। অভুক্ত কুকুরগুলো যখন খাদ্যের সন্ধানে ক্লান্ত হয়ে যায়, তখন তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য যে হৃদয় প্রয়োজন, তা সবার মধ্যে থাকে না। ফাহমিদা সেই বিরল ব্যক্তিদের একজন, যিনি এই দায়িত্ব পালন করছেন প্রতিদিন, নীরবে। একটি সমাজে মানবিকতা কীভাবে বেঁচে থাকে ফাহমিদার মতো মানুষের জন্যই আমাদের সমাজে এখনো মানবিকতা বেঁচে আছে। কুকুরের প্রতি তার এই ভালোবাসা নিছক পশু সেবা নয়, এটি জীবনের প্রতি এক গভীর শ্রদ্ধার প্রকাশ। জীবজগৎ আমাদের পৃথিবীর অংশ, আর তাদের প্রতি যত্নশীল হওয়া মানবিক কর্তব্য।
আমাদের উচিত তার এই প্রচেষ্টাকে সম্মান জানানো এবং তাকে উৎসাহিত করা। এই ধরনের কাজ সমাজের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারে। যারা তাকে বাঁকা চোখে দেখেন, তাদেরও বোঝা উচিত যে, মানুষের মানবিকতা শুধু মানুষের জন্যই সীমাবদ্ধ নয়। অসহায় প্রাণীদের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করাও এক মহান দায়িত্ব। ফাহমিদা তার কাজের মাধ্যমে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন—জীবনের প্রকৃত অর্থ হলো, নিজের সামর্থ্য দিয়ে অন্যের পাশে দাঁড়ানো। সেটা মানুষ হোক, বা কোনো প্রাণী। তার এই অনন্য উদ্যোগ আমাদের সকলের অনুপ্রেরণা হয়ে উঠুক। কুকুর মানুষের চেয়ে ভালো: কৃতজ্ঞতার গল্প মানুষকে বলা হয় সৃষ্টির সেরা জীব, কিন্তু কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ক্ষেত্রে কুকুর যেন আমাদের সবাইকে হার মানায়। কুকুর এক অসাধারণ প্রাণী, যে ভালোবাসা এবং কৃতজ্ঞতায় প্রতিদিন আমাদের নতুন কিছু শেখায়। মানুষের জীবনে যখন সবকিছু অস্থির, সম্পর্ক যখন স্বার্থে জটিল, তখন কুকুরের সহজ-সরল ভালোবাসা আমাদের মনে শান্তি এনে দেয়। কুকুর কখনো তার প্রভুর প্রতি বেইমানি করে না। আপনি তাকে একবেলা খাওয়ান, সে সারাজীবন আপনার সেবা করবে। আপনি তাকে আশ্রয় দেন, সে নিজের জীবন দিয়েও আপনার সুরক্ষা করবে। এমনকি তাকে তিরস্কার করলেও, সে কয়েক মুহূর্ত পরে আপনার পায়ের কাছে এসে বসবে, ভালোবাসার স্পর্শ চাইবে। মানুষের মধ্যে এই সরলতা বা নির্ভরযোগ্যতা কই? আমরা কেউ কারও জন্য একবার কষ্ট করতে পারি, কিন্তু বারবার নয়। সামান্য স্বার্থে আমরা নিজেদের সম্পর্কের পবিত্রতাও বিসর্জন দিতে দ্বিধা করি না। মানুষ কৃতজ্ঞতা অনুভব করলেও তা মানে না। আমরা সাহায্য পাওয়ার পর দ্রুত ভুলে যাই; বরং সুযোগ খুঁজে অন্যের ওপর দোষ চাপাই। কিন্তু কুকুর কখনো তার ঋণ ভুলে যায় না। একজন কুকুরের চোখে তার প্রভু দুনিয়ার সেরা মানুষ, যত ত্রুটিই থাকুক। এই কারণে বহু সময় আমরা কুকুরের আচরণে এমন কিছু দেখি, যা মানবিকতার চেয়ে বড়। দুঃখের দিনে কুকুর পাশে থাকে, বিপদে সতর্ক করে। অথচ মানুষ, যারা আত্মীয় বা বন্ধু বলে পরিচিত, তারা অনেক সময়ই নিজেদের স্বার্থের কথা ভেবে দূরে সরে যায়। আমাদের জীবনে কুকুর কেবল একটি প্রাণী নয়, এক নির্ভেজাল ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতার প্রতীক। এই নিঃস্বার্থ বন্ধুকে দেখে আমাদের শেখা উচিত—ভালোবাসা দিতে হয় শর্তহীনভাবে, কৃতজ্ঞতা মানতে হয় সজ্ঞানে। হয়তো তবেই আমরা মানুষ হিসেবে কুকুরের কাছাকাছি যেতে পারব।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০৩১  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট