1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ০৯:২৯ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
“বাঁশখালীতে ৪ হাজার ইয়াবাসহ টেকনাফের মাদক কারবারি আটক: ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ” হোমনায় মহান মে দিবস উপলক্ষে  বিএনপির বর্ণাঢ্য র‍্যালি  ড. মোহাম্মদ ইউনূস এর শুভ আগমনে বোয়ালখালীবাসীর পক্ষ থেকে হাজী মোহাম্মদ আলম ববির শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা পুলিশ পরিচয়ে ঘরে প্রবেশ করে পরিবারের ৮ জনকে বেঁধে ছয়টি দোকান ঘর গুঁড়িয়ে দিয়ে মালামাল লুট করেছে দুর্বৃত্তরা রোদেলা দুপুরে পারকি সৈকতের বালুকাবেলায় কলম যোদ্ধারা,স্মৃতিময় এক মে দিবস! ড. মোহাম্মদ ইউনূসের দক্ষিণ চট্টগ্রাম সফর সিএমপি কমিশনার ও পাঁচ ওসি পেলেন আইজিপি ব্যাজ সাহস, দক্ষতা ও মানবিক পুলিশিংয়ের স্বীকৃতি আইজি পি ব্যাজ পেলেন ওসি আফতাব উদ্দিন চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের সূচনালগ্নের সাহসী পুরুষ ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন! দৃষ্টি আকর্ষণ

মানবাধিকার হরণের ১৫ বছরের করুণ অধ্যায়: শেখ হাসিনার শাসনে বাংলাদেশ

মো. কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৫১ বার পড়া হয়েছে

“বিশ্ব মানবাধিকার দিবস:

“মানবাধিকার হরণের ১৫ বছরের করুণ অধ্যায়: শেখ হাসিনার শাসনে বাংলাদেশ”

আমাদের দেশে মানবাধিকার হরণের করুণ চিত্র”

১০ ডিসেম্বর, বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। এ দিনটি বিশ্বব্যাপী মানুষকে তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করতে এবং মানবাধিকারের মূল্যবোধ সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে উদযাপিত হয়। কিন্তু আমাদের দেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি আজও প্রশ্নবিদ্ধ, যেখানে প্রতিনিয়ত নানা উপায়ে নাগরিকদের অধিকার হরণ করা হচ্ছে। মানবাধিকারের সংজ্ঞা ও গুরুত্ব মানবাধিকার হলো মানুষের মৌলিক অধিকার, যা জন্মগত এবং সব মানুষের জন্য সমান। জাতিসংঘের সার্বজনীন মানবাধিকার সনদ (UDHR) এ নিশ্চিত করা হয়েছে যে, প্রতিটি মানুষের স্বাধীনতা, সমতা, নিরাপত্তা, এবং মর্যাদা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের অন্যতম দায়িত্ব। কিন্তু আমাদের দেশে এই মৌলিক অধিকারের অধিকাংশই আজ চ্যালেঞ্জের মুখে।

মানবাধিকার হরণের প্রধান দিকসমূহ ১.

রাজনৈতিক দমন-পীড়ন আমাদের দেশে রাজনীতি এখন অনেকাংশেই দমন-পীড়নমূলক হয়ে উঠেছে। বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার, নির্যাতন, মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়া, এবং তাদের কণ্ঠ রোধ করার ঘটনা ক্রমবর্ধমান। শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলা এবং নির্বিচারে লাঠিচার্জ মানবাধিকার লঙ্ঘনের জ্বলন্ত উদাহরণ।

২. গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ

গণমাধ্যমকে বলা হয় রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। অথচ আমাদের দেশে তা ক্রমশ সংকুচিত হয়ে আসছে। স্বাধীন সাংবাদিকরা প্রতিনিয়ত হুমকির মুখে, তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার করে মামলা দেওয়া হচ্ছে। তাদের লেখার স্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে রাষ্ট্র কণ্ঠরোধের এক ভীতিকর সংস্কৃতি চালু করেছে।

৩. বিচারবহির্ভূত হত্যা গুম

বিচারবহির্ভূত হত্যা আমাদের দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অন্যতম কালো অধ্যায়। কোনো তদন্ত বা বিচার ছাড়াই মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে, যা সরাসরি আইনের শাসন এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘন। একই ভাবে গুমের মাধ্যমে ভিন্নমত দমনের ভয়ংকর উদাহরণ সৃষ্টি হয়েছে। অনেক পরিবার আজও জানে না তাদের প্রিয়জন কোথায় বা কেমন অবস্থায় আছেন।

৪. নারী শিশু নির্যাতন

নারী ও শিশুরা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, পাচার, এবং শিশু শ্রম আমাদের সমাজে নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যথাযথ আইন থাকা সত্ত্বেও অপরাধীরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে শাস্তি এড়িয়ে যায়।

৫. আদিবাসী সংখ্যালঘুদের অধিকার হরণ

আদিবাসী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায় সবসময়ই বৈষম্যের শিকার। তাদের জমি দখল, সামাজিক নিপীড়ন, এবং সাংস্কৃতিক পরিচিতি মুছে ফেলার প্রচেষ্টা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।

৬. শ্রম অধিকার লঙ্ঘন

শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য মজুরি, কাজের নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত। বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকরা অমানবিক পরিবেশে কাজ করতে বাধ্য হয়। তাদের কাজের পরিবেশ উন্নত করার প্রতিশ্রুতি বারবার দেওয়া হলেও বাস্তবায়ন হয়নি।

সমাধানের পথ

১. আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা: বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন ও কার্যকর করতে হবে।

২. গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষা: সাংবাদিকদের উপর নির্যাতন বন্ধ করতে হবে এবং স্বাধীন সাংবাদিকতাকে উৎসাহিত করতে হবে।

৩. মানবাধিকার কমিশনকে শক্তিশালী করা: এ সংস্থাকে স্বাধীন ও ক্ষমতাবান করে তুলতে হবে, যাতে তারা নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে।

৪. শিক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধি: মানবাধিকার বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে।

৫. রাজনৈতিক সদিচ্ছা: সরকারের উচিত মানবাধিকারের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ থাকা এবং রাজনৈতিক বিরোধিতাকে দমন না করে সমঝোতার পথ তৈরি করা।

মানবাধিকার কেবল একটি আদর্শ নয়;

এটি মানুষের বেঁচে থাকার, মর্যাদা পাওয়ার, এবং নিরাপত্তার ভিত্তি। আমাদের দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে দুঃসহ চিত্র, তা থেকে মুক্তি পেতে হলে রাষ্ট্র ও জনগণের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও সহমর্মিতা সৃষ্টি করতে হবে। ১০ ডিসেম্বরের এই দিনটিতে আমাদের শপথ নিতে হবে, মানবাধিকার রক্ষায় আমরা একত্রে কাজ করব এবং এমন একটি দেশ গড়ে তুলব, যেখানে প্রতিটি নাগরিক তার অধিকার ভোগ করতে পারবে।

বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ১৫ বছরের করুণ অধ্যায়: শেখ হাসিনার শাসনামল গত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগের শাসনামলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা এক ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সাংবাদিক, পেশাজীবী, শ্রমজীবী, এবং রাজনৈতিক বিরোধীরা সবাই কোনো না কোনোভাবে তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। অথচ, আজ শেখ হাসিনা যখন নিজে পলাতক অবস্থায় মানবাধিকারের কথা বলছেন, তখন প্রশ্ন উঠছে—এই দীর্ঘ শাসনকালে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী কারা এবং এই অধিকার আদৌ পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে কি না।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের দিকসমূহ

১. সাধারণ মানুষের অধিকার হরণ সাধারণ মানুষের মানবাধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবতা ছিল ভিন্ন। গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যা: শেখ হাসিনার শাসনামলে গুমের সংখ্যা আশঙ্কাজনক ভাবে বেড়েছে। র‍্যাব এবং পুলিশের নাম ব্যবহার করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এবং নিরীহ মানুষের গুমের ঘটনা ঘটেছে।

আইনের শাসনের অভাব: সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার পাওয়ার পরিবর্তে আদালতের হয়রানি ও প্রভাব শালীদের দ্বারা নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।

২. সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে কার্যত ধ্বংস করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন: ২০১৮ সালে প্রণীত এই আইন ব্যবহার করে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা দেওয়া হয়েছে। লেখালেখি এবং অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করার জন্য সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার, নির্যাতন, এমনকি তাদের জীবনহানির শিকার হতে হয়েছে। গণমাধ্যমের উপর চাপ: সরকারপন্থী মিডিয়াকে উৎসাহিত করা হলেও স্বাধীন গণমাধ্যমকে অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক চাপ দিয়ে কোণঠাসা করা হয়েছে।

৩. পেশাজীবী ও শ্রমজীবীদের দুরবস্থা শ্রম অধিকার লঙ্ঘন:

তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য মজুরি ও নিরাপত্তার জন্য লড়াই করতে বাধ্য হয়েছেন। শ্রমিক আন্দোলনে হামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনা নিত্যদিনের বাস্তবতা। পেশাজীবীদের হয়রানি: চিকিৎসক, আইনজীবী, এবং শিক্ষকদের স্বার্থ রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে এই সরকার। তাদের আন্দোলন দমনে পুলিশি নির্যাতনের ঘটনা ক্রমাগত বেড়েছে।

৪. রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর নিপীড়ন

বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের নির্যাতন: বিএনপি, জামায়াতসহ অন্যান্য বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, গ্রেপ্তার, এবং পুলিশি হেফাজতে নির্যাতন করা হয়েছে। নির্বাচনী সহিংসতা: নির্বাচনে ভোট ডাকাতি এবং বিরোধী দলের প্রার্থী ও সমর্থকদের ওপর হামলা হয়েছে।

দায়ী কারা? এই পরিস্থিতির জন্য সরাসরি দায়ী শেখ হাসিনা এবং তার সরকার।

ক্ষমতার অপব্যবহার: প্রশাসন, পুলিশ, এবং বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে।স্বাধীন প্রতিষ্ঠান ধ্বংস: নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), এবং মানবাধিকার কমিশনকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে দেওয়া হয়নি। দমনমূলক নীতি: ভিন্নমত দমনে কঠোর দমননীতি অনুসরণ করা হয়েছে। শেখ হাসিনার অবস্থান: আত্মপক্ষ সমর্থন নাকি মানবাধিকারের কথা? আজ শেখ হাসিনা যখন পলাতক অবস্থায় মানবাধিকারের কথা বলছেন, তা মানুষের কাছে ভণ্ডামি ছাড়া কিছুই মনে হচ্ছে না। ১৫ বছর ধরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে সংস্কৃতি তিনি চালু করেছিলেন, তার দায় তিনি কখনোই এড়াতে পারবেন না। বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ মানবাধিকারের অবস্থা এখনো করুণ। বিচারব্যবস্থা অবিশ্বাস্য: ন্যায়বিচার এখনো এক অলীক স্বপ্ন।

গণতন্ত্রের সংকট: এখনো মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই, এবং মানুষের রাজনৈতিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে।

মানবাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার উপায়

১. আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা: রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।

২. গণমাধ্যমের স্বাধীনতা: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সকল দমনমূলক আইন বাতিল করতে হবে।

৩. গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি: রাজনৈতিক বিরোধীদের প্রতি সহনশীলতা দেখাতে হবে এবং একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।

৪. আন্তর্জাতিক চাপ: আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতির জন্য কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।গত ১৫ বছর ধরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের এই করুণ চিত্র পরিবর্তন করতে হলে শুধু শাসকগোষ্ঠী নয়, দেশের জনগণেরও সচেতন ভূমিকা রাখতে হবে। শেখ হাসিনার শাসনামলে ঘটে যাওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো আমাদের জন্য একটি শিক্ষা, যা ভবিষ্যতে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, এবং স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থ বুঝতে সহায়ক হবে।

মানবাধিকারের উৎপত্তি ও ইতিহাস মানবাধিকার হলো মানুষের জন্মগত অধিকার, যা প্রতিটি মানুষের জন্য প্রযোজ্য। এর ইতিহাস দীর্ঘ ও জটিল, বিভিন্ন সভ্যতা ও সংস্কৃতির বিবর্তনের সঙ্গে এটি জড়িয়ে আছে। নিচে মানবাধিকারের উৎপত্তি, বিকাশ, এবং কেন এটি গুরুত্ব পেল তার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরা হলো।

১. প্রাচীন যুগে মানবাধিকারের ধারণা

 

মানবাধিকারের ভিত্তি রাখে প্রাচীন সভ্যতাগুলো, যদিও তা আজকের মতো সংজ্ঞায়িত ছিল না। ব্যাবিলনের হাম্মুরাবি কোড (খ্রিস্টপূর্ব ১৭৫৪): বিশ্বের প্রথম লিখিত আইন হিসেবে এটি সমান বিচার এবং ব্যক্তির অধিকার রক্ষার কথা বলে। ভারতীয় বেদ ও উপনিষদ: মানুষের সম্মান, সমতা, এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার গুরুত্ব তুলে ধরে।

গ্রিক দর্শন: সক্রেটিস, প্লেটো এবং অ্যারিস্টটল ব্যক্তির অধিকারের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন।

রোমান আইন: নাগরিক অধিকারের ধারণা প্রতিষ্ঠা করে।

২. মধ্যযুগের ধর্মীয় সামাজিক অবদান

মধ্যযুগে মানবাধিকারের ধারণা প্রধানত ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের মাধ্যমে বিকশিত হয়। ম্যাগনা কার্টা (১২১৫): ইংল্যান্ডে রাজা এবং প্রজাদের মধ্যে একটি চুক্তি, যা আইনের শাসন ও মৌলিক অধিকারের কথা বলে। ইসলামী আইন ও দর্শন: ইসলামে সমতা, সাম্য, এবং মানুষের মৌলিক অধিকারের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। যীশুর শিক্ষা: ভালোবাসা, ক্ষমা, এবং সমতার কথা বলে, যা পরবর্তী সময়ে পশ্চিমা মানবাধিকার ধারণায় প্রভাব ফেলে। ৩. আধুনিক মানবাধিকারের সূচনা (১৫-১৮ শতক) আধুনিক মানবাধিকারের ধারণা মূলত রেনেসাঁ এবং প্রাচ্য-বিজ্ঞান থেকে এসেছে। ইংলিশ বিল অব রাইটস (১৬৮৯): ব্রিটেনে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও নাগরিক অধিকারের ভিত্তি স্থাপন। আমেরিকান স্বাধীনতার ঘোষণা (১৭৭৬): স্বাধীনতা, সমতা, এবং মানুষের জন্মগত অধিকার নিয়ে কথা বলে। ফরাসি বিপ্লব এবং মানবাধিকার ঘোষণা (১৭৮৯): “মানুষ স্বাধীন ও সমান” – এই আদর্শকে প্রতিষ্ঠিত করে।

৪. বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার আন্দোলন (১৯-২০ শতক)

দাসপ্রথার অবসান: ১৮-১৯ শতকে দাসপ্রথার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী আন্দোলন। জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠা (১৯৪৫): দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মানবাধিকারের গুরুত্ব আরো বাড়ে। সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা (UDHR, ১৯৪৮): জাতিসংঘের এই ঘোষণা ছিল প্রথম বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি, যা মানবাধিকারের ভিত্তি স্থাপন করে।

৫. মানবাধিকারের প্রয়োজনীয়তা কেন এলো?

শোষণ ও নির্যাতন: বিভিন্ন সময় মানুষকে দাসত্ব, যুদ্ধ, এবং শোষণের শিকার হতে হয়েছে। ন্যায়বিচারের অভাব: ইতিহাসে অনেক রাষ্ট্রে সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত ছিল।

মানুষের মর্যাদা রক্ষা: মানবাধিকারের মূল লক্ষ্য মানুষের মর্যাদা, স্বাধীনতা, এবং সমতা নিশ্চিত করা।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শিক্ষা: হিটলারের আমলে ইহুদি নিধন, গ্যাস চেম্বার, এবং অন্যায় দমন বিশ্বকে মানবাধিকারের প্রয়োজনীয়তার দিকে ধাবিত করে। ৬. বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট বাংলাদেশের মানবাধিকার ইতিহাসে মুক্তিযুদ্ধ এবং গণতন্ত্রের জন্য লড়াই বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ মানবাধিকারের এক বৃহৎ উদাহরণ, যেখানে জাতি তাদের স্বাধীনতা ও সমতা নিশ্চিত করেছে।

৭. মানবাধিকার আন্দোলনের বর্তমান প্রেক্ষাপট আজ বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার শুধু মৌলিক অধিকারে সীমাবদ্ধ নয়, বরং নারীর অধিকার, পরিবেশ সংরক্ষণ, শিশুদের অধিকার, এবং অভিবাসীদের অধিকারের মতো বিভিন্ন বিষয়েও প্রভাব বিস্তার করেছে। মানবাধিকার ইতিহাস আমাদের শেখায়, এটি কোনো বিশেষ জাতি বা সংস্কৃতির বিষয় নয়, বরং সব মানুষের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০৩১  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট