প্রবীণ সাংবাদিক ও লেখক এরশাদ মজুমদারের মৃত্যু সংবাদে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তার সাথে আমার বহু স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে, যা আজ আমাকে বিষণ্ন করে তুলেছে। তিনি ছিলেন একজন মেধাবী, বুদ্ধিমান এবং উদ্যমী সাংবাদিক, যিনি নিজের পেশার মাধ্যমে দেশ ও জাতির জন্য অসামান্য অবদান রেখেছেন।
বিশেষভাবে স্মরণ করছি ২০১২ সালে কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব লেখক সম্মেলনের দিনগুলো। আমরা তখন একসাথে ছিলাম, আর তার অসাধারণ বুদ্ধিমত্তা আমাদের সবাইকে মুগ্ধ করেছিল। কোরিয়ায় যাওয়ার সময় তিনি পেন ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের লোগো সম্বলিত শতাধিক গেঞ্জি সঙ্গে নিয়েছিলেন। সেগুলো তিনি ১০০ ডলার করে বিক্রি করে তার যাতায়াতের পুরো খরচ মেটান। তার এই প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতা আমাদের মধ্যে প্রশংসার ঝড় তোলে। এ থেকেই তার সৃজনশীলতা এবং বাস্তব জীবনের বুদ্ধিমত্তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এরশাদ মজুমদার শুধুমাত্র একজন লেখক ও সাংবাদিক ছিলেন না; তিনি ছিলেন জাতির দর্পণ। তার সাংবাদিকতা ছিল দেশের মানুষ ও রাষ্ট্রের কল্যাণে নিবেদিত। তিনি সমাজের অসঙ্গতি তুলে ধরতেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কলম ধরতেন, এবং জাতিকে সঠিক পথের দিশা দেখানোর চেষ্টা করতেন। তার লেখায় সাহস, মেধা, এবং দায়িত্ববোধের মিশেল ছিল।
তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে সাংবাদিকতার অঙ্গন একজন অভিজ্ঞ, দক্ষ এবং নিবেদিতপ্রাণ পথপ্রদর্শককে হারাল। এই শূন্যতা কখনো পূরণ হওয়ার নয়। দেশের জন্য, সমাজের জন্য, এবং সাংবাদিকতার জন্য তার যে অবদান, তা আমরা চিরকাল স্মরণ করব।
তার সাথে কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত আজ আমার মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। তার মেধা, প্রজ্ঞা, এবং বন্ধুসুলভ আচরণ তাকে আমাদের মাঝে চিরস্মরণীয় করে রাখবে।
আমি আল্লাহর কাছে তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। আল্লাহ তায়ালা যেন তাকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারকে এই অপূরণীয় ক্ষতি সহ্য করার শক্তি দেন। আমাদের এই সাংবাদিকতা জগৎ তার অভাব দীর্ঘদিন অনুভব করবে।