ফেনী জেলা দাগনভূঞা থানার বাতশিরি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল আউয়াল স্বপনের বিরুদ্ধে, ছাত্র হত্যা, দূর্নীতি, নিয়োগ বানিজ্য, ছাত্র ছাত্রী ও অভিভাবকদের সাথে কুৎসিত আচরন, ভিন্নমত ধমনে রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রয়োগ, স্কুল আঙ্গিনাকে রাজনৈতিক ক্লাবে পরিনত করন সহ নানান অভিযোগ উঠলেও এখনো প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। বিগত ৩ আগষ্ট ছাত্র জনতার বিপ্লব দমনের পরিকল্পনা ও ৪ আগষ্ট ফেনী মহিপালে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সেচ্ছাসেবক লীগের নেতা হিসাবে ভুমিকা পালন করার বড় অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ২০১২ সালে ফাজিলের ঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হতে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বাতশিরি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন আবদুল আউয়াল, প্রথমে শ্রমিক লীগ পরে সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক হিসাবে রাজনৈতিক নেতা বনে বেপোরোয়া হয়ে স্কুল আঙ্গিনায় রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে নানান অপকর্মে লিপ্ত হন। অনুসন্ধান করে, স্থানীয় শিক্ষার্থী ও অভিভাবক থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী শিক্ষকের মুখোশে আবদুল আউয়াল রাজনৈতিক ক্ষমতাবলে এমন কোন অপকর্ম নেই যা করেন নি।
ছাত্রদের দলীয় মিছিল মিটিং এ যেতে বাধ্য করা, ভিন্ন মতের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষক দের সাথে খারাপ আচরন, ভয় ভীতি দেখিয়ে কোনঠাসা করা, স্কুল উন্নয়নের টাকা আত্মসাৎ, টাকা খেয়ে নিজের পছন্দের ও দলীয় বিবেচনায় শিক্ষক নিয়োগ, শ্রেনী কক্ষে গালা গালি, সিনিয়র শিক্ষকদের অসম্মান যা শিক্ষকতার পরিপন্থী। সাবেক ছাত্র বর্তমান অভিভাবক মিজান বলেন, আউয়াল মাস্টার বাতশিরি উচ্চ বিদ্যালয়ে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ইংরেজি শিক্ষক হিসাবে যোগদান করলেও এই স্কুলের শিক্ষার্থী রা সবসময় ইংরেজিতেই ফেল করে কারন তিনি রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিয়ে ব্যাস্ত থাকেন, ক্লাস করানোর সময় কই? বিগত সময়ে তার দূর্নীতির কথা বলে শেষ করা যাবে না।
সাবেক ছাত্র মাহফুজ বলেন, আউয়াল মাস্টার বাতশিরি স্কুলে কার্যত শিক্ষক রুপে সন্ত্রাসী ছিলেন। আওয়ামীলীগের দলীয় মিছিল মিটিং এ স্কুল বন্ধ করে বাস ভাড়া করে ছাত্রদের নিয়ে যেতেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক এক ছাত্রী বলেন, শ্রেনী কক্ষে তার আচরন ছিল নোংরা, শুয়োরের বাচ্চা, কুত্তার বাচ্চা ছাড়া ছাত্র ছাত্রীদের সাথে তিনি কথা বলতেন না। সাবেক ছাত্র নাইম বলেন, এই প্রধান শিক্ষক ভিন্ন মত বা দলের ছাত্রছাত্রী বা অভিভাবক দের সাথে অমানবিক ও নিষ্ঠুর আচরন করতেন, ছাত্রলীগের অনুসারীরা তার কাছে ছিল সোনার সন্তানের মত। অভিভাবক আমিন বলেন, ৫ ই আগষ্ট এর আগে স্কুলে আমরা কোন প্রয়োজনে গেলে আমাদের রাজনৈতিক পরিচয় লাগতো না হলে মোটা অংকের টাকায় সমস্যা সমাধান করতে হত।
বঞ্চিত শিক্ষক হেদায়েত উল্ল্যাহ বলেন, আমাকে জামাত শিবির ট্যাগ দিয়ে নিয়োগ পাওয়ার পরেও আমাকে স্কুল থেকে বিতাড়িত করা হয়, আমার জায়গায় টাকার বিনিময়ে দলীয় শিক্ষক সেচ্চাসেবক লীগের সহ-সভাপতি তপন চন্দ দাস কে অতিথি শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, স্কুলের বরাদ্দ কৃত বেতন হতে তিনি ২৪৬০০ টাকা নেন, বাকী শিক্ষকদের ১৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা দেন, তাছাড়া বিগত সময়ে তিনি রাজনৈতিক ছত্র ছায়ায় দূর্নীতি করে অনেক সম্পদের মালিক হয়েছেন, তার বিরুদ্ধে কোন শিক্ষক ভয়ে কথা বলেন না, কথা বললেই তাদের রাজনৈতিক নেতা- কর্মি দ্বারা হুমকি ধামকি দিয়ে থামিয়ে দেন। এই প্রধান শিক্ষক ২০২১ সালে এনটিআরসিতে ত্রুটি পূর্ন চাহিদা প্রেরন করে নিজের ও দলীয় বিবেচনায়, সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা তপন চন্দ্র দাস ( বর্তমানে হত্যা মামলায় কারাগারে) কে নিয়োগ দিতে গিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্ছ মাধ্যমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয় হতে ৩ মাসের জন্য শাস্তির মুখোমুখি হয়েছিলেন।
সরকার পরিবর্তনের পর বিগত ৫ই আগষ্ট হতে অসুস্থার কথা বলে আত্নগোপনে থেকে কর্মক্ষেত্রে না গিয়ে সকল সুযোগ সুবিধা নিয়ে বহাল তবিয়তে আছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় এলাকা বাসী, শিক্ষার্থী, অভিভাবকরা প্রশ্ন তুলে বলেন, এ ধরনের অত্যাচারী, সন্ত্রাসী, দূর্নীতি বাজ, রাজনৈতিক নেতা যদি প্রধান শিক্ষক হন তাহলে তাদের সন্তান দের ভবিষ্যৎ কোন পথে?
প্রধান শিক্ষক আবদুল আউয়াল স্বপনের অপকর্মের বিবরন দিয়ে তাকে বরখাস্ত করে, তার বিরুদ্ধে আইন গত ব্যাবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে শিক্ষক সমাজ কে কলংক মুক্ত করতে জেলা প্রশাসক ফেনী, দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেন স্থানীয় অভিভাবক ও এলাকাবাসী।