চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে আজ ১৭ই নভেম্বর বেলা ১১ টার সময় কাজীর দেউরী সুগন্ধা কনভেনশন হলে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল রক্ষা পরিষদের এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়, সংবাদ সম্মেলনের তাদের লিখিত বক্তব্যতে মূল বিষয়বস্তু এবং দাবি সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠে তোলার চেষ্টা করলেও তারা কিন্তু তথ্য ভিত্তিক ডকুমেন্টারি কোনধরনের জোরালো আপত্তি উপস্থাপন করতে পারেনি, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, এবং স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে আজীবন সদস্য, এলাকাবাসী এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহের ক্ষোভ ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে বল্লেও তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তুলে ধরতে রক্ষা কমিটি ব্যর্থ হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকরা মনে করেন। তারা আরো বলেন, বিগত ১৭ বছর ধরে পরিচালনা পরিষদ কর্তৃক এই প্রতিষ্ঠানের নৈতিক ভিত্তি নষ্ট করে যে অপকর্মের ইতিহাস রচিত হয়েছে, তা শুধুমাত্র একটি হাসপাতালের জন্য নয়, পুরো সমাজের জন্য একটি অশুভ সংকেত। সাংবাদিকদের প্রশ্ন হলো- তাদের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে মনগড়া অনুমান ভিত্তিতে অভিযোগ করেছে কিন্তু ১৭ বছরের হাসপাতালের বিশাল আকারে উন্নয়ন তা উল্লেখ করেননি। হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাকালীন লক্ষ্য এবং বর্তমান বাস্তবতা চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল এক সময় ছিল সাধারণ মানুষের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত একটি উদাহরণ স্বরূপ প্রতিষ্ঠান। এর মূল লক্ষ্য ছিলো সাশ্রয়ী মূল্যে এবং মানসম্মত চিকিৎসাসেবা প্রদান করা। কিন্তু বর্তমান পরিচালনা কমিটির নেতৃত্বে এটি ধীরে ধীরে একটি ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। তার জন্য করনীয় নির্ধারনে কোন সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা দিতে পারেনি, তাদের উচিত ছিল চলমান কমিটির অথরিটির অযোগ্যতা দুর্বল তাকেই স্পষ্ট করে দেওয়ার। তা না করে হাসপাতালের বিরুদ্ধে অপপ্রচার মূলক বক্তব্য রাখার কোন প্রয়োজন আছে বলে অনেকে মনে করছেনা। হাসপাতালের সেবার মান বৃদ্ধির জন্য একটি সুন্দর প্রস্তাবনা দিয়ে হাসপাতালকে গণমূখী প্রতিষ্ঠানের ধাবিত করতে পারতেন, তা না করে হাসপাতালের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে অনিয়মের কথা তুলে ধরার নামে হাসপাতাল পরিচালনার বিরুদ্ধে অযুক্তি কথা উপস্থাপন করেছে যা শুধু শুধু অহেতুক বিতর্ক সৃষ্টির সামিল বলে মনে করি, প্রতিষ্ঠাতা ব্যক্তিত্বদের অবদান এবং তাদের স্বপ্নগুলো সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা হয়েছে। জনাব এল.কে সিদ্দিকী, প্রফেসর ডা. এ.এফ.এম ইউসুফ এবং প্রফেসর ডা. নূরনবী চৌধুরীর মতো মহান ব্যক্তিদের নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা হয়েছে। সেই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অথরিটির কাছে সঠিকতার কতটুকু তা জানতে চাইলে অথরিটি বলেন প্রতিষ্ঠাতারা আজীবন সম্মানিত তাদের অবদান ভুলার মত নয়
রাজনৈতিক প্রভাব ও স্বজনপ্রীতির উদাহরণ বর্তমান কমিটি হাসপাতালটিকে আওয়ামী লীগের একটি দলীয় কার্যালয়ে রূপান্তরিত করেছে। স্থানীয় রাজনৈতিক গডফাদারদের মাধ্যমে তাদের ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য নির্বাচনী প্রক্রিয়াগুলোকে তাদের পছন্দমতো সাজিয়েছে। বিশেষ করে, সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং এম এ লতিফের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সহায়তায় হাসপাতালের নীতিমালা পরিবর্তন করা হয়েছে। এর ফলে হাসপাতালে স্বজনপ্রীতি চরমে পৌঁছেছে। নতুন সদস্যপদ গ্রহণ থেকে শুরু করে কর্মচারী নিয়োগ, এমনকি মেডিকেল কলেজে ভর্তি পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। হাসপাতালের তহবিলের টাকা আত্মসাৎ এবং প্রাপ্ত দানের সঠিক হিসাব প্রদান না করার অভিযোগও উঠেছে। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, এই কমিটির অধীনে হাসপাতালের সেবার মান এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে এটি কার্যত ধ্বংসের পথে।
গঠনতন্ত্রে কালো আইন এবং প্রশাসনিক অক্ষমতা হাসপাতালের গঠনতন্ত্রে এমন সব কালো আইন যোগ করা হয়েছে, যা স্বচ্ছতা এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার পরিপন্থী। বার্ষিক সাধারণ সভায় মাত্র ১০০ জন সদস্যের উপস্থিতিতে কোরাম সম্পন্ন হওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। এই পদক্ষেপের ফলে প্রকৃত আজীবন সদস্যদের মতামত প্রণয়ন ও আলোচনার সুযোগ নষ্ট হয়েছে। এছাড়াও, কার্যনির্বাহী কমিটির অফিসবিয়ারার পদে নির্বাচনের জন্য সদস্যদের ওপর অযথা শর্ত আরোপ করা হয়েছে। এর ফলে মেধাবী এবং যোগ্য নেতৃত্ব গঠনের পথ রুদ্ধ হয়ে গেছে। দুর্নীতির প্রকৃতি ও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ
১. তহবিল আত্মসাৎ: হাসপাতালের নাম করে এবং বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য দান সংগ্রহ করা হলেও তার সঠিক হিসাব কখনো প্রকাশ করা হয়নি।
২. সরকারি অনুদানের অপব্যবহার: প্রতি বছর সরকার হাসপাতালের জন্য ৬ কোটি টাকা অনুদান দেয়। এর বড় অংশ প্রশাসনিক খরচ এবং দুর্নীতিতে ব্যবহৃত হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। ৩. কর্মচারী নিয়োগে স্বজনপ্রীতি: কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই আত্মীয়-স্বজন এবং রাজনৈতিক সমর্থকদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
৪. মেডিকেল কলেজে দুর্নীতি: ছাত্র ভর্তির ক্ষেত্রে বড় অঙ্কের লেনদেন হয়েছে, যার অংশীদার হয়েছেন কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা। সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা
বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা ছাড়া হাসপাতালের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। প্রস্তাবিত পদক্ষেপসমূহ হল: প্রশাসক নিয়োগ: হাসপাতালের বর্তমান কমিটি ভেঙে দিয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রশাসক নিয়োগ করতে হবে।
গঠনতন্ত্র সংশোধন: কালো আইন বাতিল এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে।
তদন্ত কমিটি গঠন: হাসপাতালের আর্থিক ও প্রশাসনিক দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে একটি স্বচ্ছ তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।
নতুন নির্বাচন আয়োজন: সমান সুযোগ নিশ্চিত করে নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।
সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের ভূমিকা
গণমাধ্যমকে এই বিষয়ে সত্য উদঘাটন করে তুলে ধরতে হবে। জনমত গঠন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান, যা আমাদের সবার গর্বের অংশ। এই প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব রক্ষা এবং তার আদর্শ পুনরুদ্ধার করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। সরকারের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে এই হাসপাতালের প্রতি মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনা।
তবে বিগত সময়ের অসংখ্য অনিয়ম হয়েছে, কিন্তু পাশাপাশি দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করার মতো উন্নয়নও হয়েছে, সাংবাদিকরা আয়োজকদের কাছে তাদের বক্তব্যে সঠিকতা প্রমাণিত করার জন্য প্রশ্ন করলে তারা একটিও সঠিক উত্তর দিতে পারেনি, তাদের কাছে বর্তমান পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে সঠিক কোন তথ্য ছিলো না, অনিয়ম ও দুনীতি, স্বজনপ্রীতির কথা বার বার বল্লেও কিন্তু তাদের কাছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের সত্যতা ছিলো না।
চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল রক্ষা পরিষদের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন: মোঃ ফজলুর রহমান মজুমদার (স্বপ্ন আহ্বায়ক) ইউসুফ বাহার চৌধুরী (সদস্য সচিব)আমিনুল ইসলাম আমিন (যুগ্ম আহ্বায়ক)
মোঃ সাজ্জাদ উদ্দিন আলহাজ্ব নুরুল আফসার চৌধুরী
মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন সিদ্দিকী
মোঃ রকিবুল আমিন ভূইয়া
সোলাইমান বাচ্চু
মোঃ ফজলুল করিম মজুমদার মুন্না মোঃ মহিউদ্দিন মুন্সী
এডভোকেট নোমান আসকারী দিদার হাসিনা আক্তার লিপি
মোঃ রকিবুল ইসলাম
মোঃ মোস্তফা তালুকদার
মোঃ আমিরুল ইসলাম
ছালেহ জঙ্গী প্রদীপ
আজকের সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে যেই বক্তব্য উপস্থাপন করেছে- তার স্বপক্ষে জোরালো ডকুমেন্টস না থাকায় সাধারণ মানুষ বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।