চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালে দুর্নীতি, অর্থ লুণ্ঠন ও গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ফাইল গায়েবের ঘটনায় চট্টগ্রাম আইন শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির আহব্বায়ক ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে একটি অভিযোগপত্র পাঠানো হয়েছে। চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক জাহাঙ্গীর চৌধুরী স্বাক্ষরিত এই অভিযোগপত্রে ৫ অক্টোবর ২০২৪-এর পর থেকে হাসিনা গংদের নিয়ন্ত্রণে থাকা হাসপাতালের একাধিক আর্থিক ও প্রশাসনিক অনিয়মের বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়। অভিযোগ পত্রে বলা হয়, হাসপাতালের ড্রাইভার শাওন, দারোয়ান হাবিব, এবং রিসিপশনিস্ট রবিউলের নেতৃত্বে হাসপাতালের একাউন্টস বিভাগের রক্ষিত আনুমানিক ১,২৭,০০০ টাকা এবং ক্যাশ বিভাগ থেকে আনুমানিক ৮,৬৬,০০০ টাকা লুণ্ঠিত হয়েছে। ভোল্টের চাবি পাওয়া যাচ্ছে না, যা থেকে ধারণা করা হচ্ছে, এই চাবি তারাই নিয়ে গেছে। এছাড়া, হাসপাতালের দুটি ল্যাপটপ, তিনটি মোবাইল সেট ও একটি মানিব্যাগও খোয়া গেছে। এছাড়াও অভিযোগে বলা হয়, হাসপাতালের প্রাক্তন কর্মী হাসিনা আক্তারের নির্দেশে শাহাব উদ্দিন ও বোরহানের নেতৃত্বে শাওন, হাবিব, ও রবিউল হাসপাতালের প্রশাসনিক দপ্তরে প্রতিরাতেই বিভিন্ন কক্ষে ঢুকে গুরুত্বপূর্ণ ও গোপনীয় ফাইল নিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে হাসপাতালের রেকর্ডসমূহ সংকটের মুখে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, উক্ত ব্যক্তিরা হাসপাতালের অভ্যন্তরে অরাজকতা সৃষ্টি করে এক বিভীষিকাময় পরিবেশের সৃষ্টি করেছে। তাদের কার্যকলাপে হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বর্তমানে একপ্রকার জিম্মি অবস্থায় রয়েছেন এবং এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে উদগ্রীব। অধ্যাপক জাহাঙ্গীর চৌধুরী অভিযোগটি যথাযথ কর্তৃপক্ষের সদয় অবগতি এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পাঠিয়েছেন। এ সংক্রান্ত অনুলিপি স্বাস্থ্য সচিব, চট্টগ্রাম পুলিশ কমিশনার, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, সিভিল সার্জন, ওসি খুলশী থানা এবং অন্যান্য সদস্যদের কাছেও পাঠানো হয়েছে।
এই ঘটনায় সত্যি ঘটনা কি, তা খুঁজে বের করা সময়ের দাবি।এদিকে, হাসপাতাল থেকে বিতাড়িত জাহাঙ্গীর
চৌধুরী জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি গভীরভাবে তদন্তের জন্য প্রশাসনের সক্রিয় পদক্ষেপ প্রত্যাশা করছেন। তবে প্রশ্ন উঠছে, এই অভিযোগের পেছনে কি সত্যিই কোনো ষড়যন্ত্র রয়েছে?
চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীলরা এখন এই ঘটনাটি খতিয়ে দেখার জন্য কাজ শুরু করেছেন। কথিত সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরী তার কাল্পনিক অভিযোগের
অনুলিপি দিয়েছেন ১. স্বাস্থ্য সচিব, সচিবালয়, ঢাকা ২. বিভাগীয় কমিশনার, চট্টগ্রাম ৩. জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম ৪. সিভিল সার্জন, চট্টগ্রাম ৫. পুলিশ সুপার, খুলশী, চট্টগ্রাম ৬. আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালে শত কোটি টাকা আত্মসাতের অবৈধ সভাপতির বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ পাওয়া গেছে, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের কথিত সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরী বিরুদ্ধে দীর্ঘ বছর ধরে হাসপাতাল থেকে শত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, জাহাঙ্গীর চৌধুরী এবং প্রধান হিসাব রক্ষক বেলাল মিলে হাসপাতালের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে এই টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পায়তারা করছেন। অন্যান্য কর্মচারীদের দাবি, জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। হাসপাতালের একাধিক কর্মচারী জানিয়েছেন, জাহাঙ্গীর এবং বেলালের মধ্যে আঁতাতের ফলে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, যা হাসপাতালের উন্নয়ন ও কর্মচারীদের স্বার্থে মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে, টাকা চুরির বিষয়ে হিসাব রক্ষক বেলাল সাহেবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “টাকা আমার হেফাজতে রয়েছে, চুরি হয়নি। শুধু মাত্র একটি ল্যাপটপ হারিয়ে গেছে।” তবে হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ তথ্য অনুযায়ী, অন্যান্য স্টাফদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তা কতটা সত্য তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে, হাসপাতালের বিভিন্ন স্তরের কর্মচারীরা জাহাঙ্গীর চৌধুরী এবং বেলালের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছে। তাঁরা মনে করেন, এই দুর্নীতি ও প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা দ্রুত নিরসন না হলে হাসপাতালের কার্যক্রম বিঘ্নিত হবে। স্থানীয় প্রশাসন ইতোমধ্যেই বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে। তবে হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ অবস্থা এবং কর্মচারীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি কতটা গুরুত্ব পাবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
জাহাঙ্গীর চৌধুরী যিনি অবৈধ কমিটির কথিত সভাপতি, দীর্ঘ বছর ধরে বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত আছেন। তার কার্যকলাপের কিছু উল্লেখযোগ্য দিক নিম্নরূপ:
অর্থের অপব্যবহার: জাহাঙ্গীর চৌধুরী হাসপাতালের তহবিলের সঠিক ব্যবহার না করে, অর্থের দুর্নীতি ও অপব্যবহার করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি হাসপাতালের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে বাধা সৃষ্টি করেছেন।
প্রশাসনিক দুর্নীতি: তিনি হাসপাতালের প্রশাসনিক কাঠামোর মধ্যে বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছেন, যা কর্মীদের মধ্যে হতাশা ও অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। চাকরি ও পদোন্নতিতে দুর্নীতি: জাহাঙ্গীর চৌধুরী সাধারণত যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মীদের নিয়োগ বা পদোন্নতি না দিয়ে, ঘনিষ্ঠতা ও তোষণের মাধ্যমে চাকরি দিয়েছেন। বহিরাগত প্রভাব: তিনি হাসপাতালের নীতিমালা ও কার্যক্রমে বহিরাগতদের প্রভাব বিস্তার করেছেন, যা হাসপাতালের স্বায়ত্তশাসনকে ক্ষুণ্ণ করেছে। বিপরীত নীতি ও কার্যক্রম: হাসপাতালের নীতি এবং গঠনতন্ত্রের বিরুদ্ধে গিয়ে নিজের স্বার্থে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন, যা রোগীদের স্বার্থের প্রতি অবহেলা। আইনি সমস্যা: জাহাঙ্গীর চৌধুরী বিভিন্ন সময়ে আদালতে বিভিন্ন আইনি জটিলতায় জড়িয়ে পড়েছেন, যা তার বিশ্বাসযোগ্যতা এবং হাসপাতালের সুনামের ক্ষতি করেছে। সামাজিক নীতি ভঙ্গ: তার কিছু কর্মকাণ্ড সামাজিক নীতি এবং হাসপাতালের মানসম্পন্ন সেবার সাথে সাংঘর্ষিক ছিল, যা জনসাধারণের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে। এসব অপকর্মের ফলে হাসপাতালের কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে তার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে এবং এই সমস্যাগুলোর সমাধান কামনা করছে। চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক হাসপাতালের রোগী ডিসকাউন্ট বাণিজ্যে জাহাঙ্গীর চৌধুরীর জড়িত থাকার অভিযোগ, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক হাসপাতালের সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে রোগী ডিসকাউন্টের নামে বিপুল অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। তদন্তে জানা গেছে, তিনি প্রতিদিন হাসপাতালের রোগীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন, যা হাসপাতালের হিসাব খাতায় দেখানো হয়নি।
রোগীদের নামে নামেমাত্র ডিসকাউন্ট দেওয়া হলেও, বিলের কপিতে আসল ডিসকাউন্টের পরিমাণ দেখানো হতো মাত্র ২০০০ টাকা। অথচ হাসপাতালের ফাইলে সেই বিল দেখানো হতো ২০,০০০ টাকা। এই বাড়তি ১৮,০০০ টাকা একাউন্টস বিভাগের বেলালসহ তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের মাধ্যমে জাহাঙ্গীর চৌধুরীর পকেটে চলে যেত। প্রতিদিন এই প্রক্রিয়ায় অন্তত ২০ জন রোগীর কাছ থেকে গড়ে ১০,০০০ টাকা করে আত্মসাৎ করা হতো, যার ফলে হাসপাতাল প্রতিদিন প্রায় দুই লক্ষ টাকা ক্ষতির মুখে পড়তো। মাস শেষে এই পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় অর্ধ কোটি টাকা। দীর্ঘ ২১ বছর ধরে এই কৌশলে তিনি কত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন, তা অনুমান করাও কঠিন।
যদিও এই অবৈধ অর্থের সিংহভাগ জাহাঙ্গীর চৌধুরী নিজের পকেটে পুরেছেন, তবে তার অন্যান্য সহযোগীরাও এর ভাগ পেয়েছেন। এই দীর্ঘদিনের অর্থবাণিজ্যে হাসপাতালের আর্থিক ক্ষতি যেমন ব্যাপক, তেমনি রোগীদের সঙ্গে করা প্রতারণাও নজিরবিহীন।
এই ধরনের অসাধু কর্মকাণ্ডের কারণে চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক হাসপাতালের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলগুলো দ্রুত এই দুর্নীতির তদন্ত করে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। হাসপাতালের যেসব বিশাল বহুতল ভবন এখন দাঁড়িয়ে আছে, সেগুলোর মধ্যে কোনো ভবনের জন্যই চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) অনুমোদন নেওয়া হয়নি। প্রতিটি ভবন অবৈধভাবে নির্মিত, এবং নির্মাণের প্রক্রিয়ায় সিডিএ’র নিয়ম-নীতির পুরোপুরি অবহেলা করা হয়েছে। এইসব অবৈধ দালান হাসপাতালের পরিসরকে বাড়ালেও, জনসাধারণের নিরাপত্তা ও শহরের পরিকল্পিত উন্নয়নের পরিপন্থী। চিকিৎসা বিভাগের ব্যাপারেও পরিস্থিতি গুরুতর। হাসপাতালটির চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত একটি সরকারি অনুমোদন ছিল। কিন্তু সেই সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও, কর্তৃপক্ষ পরবর্তী অনুমতির প্রয়োজনীয়তা এড়িয়ে চলেছে। ফলে ২০২২ সালের পর থেকে হাসপাতালের চিকিৎসা বিভাগ কার্যত কোনো বৈধতা ছাড়াই চলছে, যা রোগীদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকির কারণ হতে পারে এবং আইনের পরিপন্থী। শিবু বাহিনীর অত্যাচারে এবং তার মনোনীত আত্মীয় আরমানের প্রভাবে পুরো হাসপাতাল কার্যত জিম্মি ছিল। শিবু প্রসাদ চৌধুরী, একজন সাধারণ পিয়ন হিসেবে চাকরিতে যোগ দিলেও, হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের ক্যাডার হওয়ায় অতি দ্রুত পদোন্নতি পেয়ে গণযোগাযোগ কর্মকর্তা হয়। যদিও তিনি সেই পদে একদিনও কাজ করেননি, তবুও নিয়মিত বেতনসহ মাসোহারা শিবুর পকেটে চলে যেত—সবই জাহাঙ্গীর চৌধুরীর অদৃশ্য ইশারায়। লক্ষ লক্ষ টাকা তার পকেটে জমা হতো প্রতিমাসে। শিবু চৌধুরী এখন ছাত্র জনতা হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে ৫ আগস্ট থেকে পলাতক। চাকরিতে একদিনও উপস্থিত না থেকেও তার মাসিক বেতন নিয়মিতভাবে ব্যাংক একাউন্টে জমা হচ্ছিল। বাজারে গুঞ্জন রয়েছে যে, ছাত্র জনতার গণআন্দোলন দমন করার জন্য জাহাঙ্গীর চৌধুরী শিবুর মাধ্যমে এই হাসপাতাল থেকে বিপুল অর্থ যোগান দিয়েছে ।
জাহাঙ্গীর চৌধুরী ডায়বেটিক হাসপাতালের কথিত “মা বাবা” হিসেবে বছরের পর বছর ধরে হাসপাতালের সম্পদ ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন। তার মাকে উন্নত চিকিৎসা বিনামূল্যে প্রদান করা ছাড়াও, তার পুরো পরিবার হাসপাতালের সেবা ও চিকিৎসা বিনা খরচে গ্রহণ করে থাকে, যার মধ্যে হাজার হাজার টাকার ইনসুলিন এবং অন্যান্য ঔষধ অন্তর্ভুক্ত।
এছাড়া, তার মাকে সেবা দেওয়ার জন্য হাসপাতালের নিয়মিত নার্সদেরও তার বাড়িতে ব্যক্তিগত সেবায় নিযুক্ত রাখার নজির রয়েছে। শুধু তাই নয়, তার বাড়ির বুয়া এবং একাধিক ব্যক্তিগত গাড়ির চালকের বেতনও হাসপাতালের খাত থেকে পরিশোধ করা হয়। বেতন ছাড়াও, গাড়ির তেলসহ অন্যান্য খরচও হাসপাতাল বহন করে আসছে। চলবে-জাহাঙ্গীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে যে পরিমাণ অসংগতি, অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ রয়েছে, তা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তিনি তার সিন্ডিকেট সদস্যদের বাইরে অন্য কোনো জীবন সদস্যকে সুযোগ দেননি। তিনি নামসর্বস্ব একটি কাগজের তথাকথিত সভাপতি হয়ে প্রায় দুই দশক ধরে এই হাসপাতালকে লুটেপুটে খেয়ে আসছেন। এখন নির্যাতিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে বিতাড়িত করেছে, এবং জীবন সদস্যসহ সবাই তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত হাসপাতালের স্বার্থে সবাই একত্রিত থেকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে বলে জানা যায়। চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক হাসপাতালের সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও তহবিল তছরুপের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছিল, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত দুর্নীতি ও তহবিল তছরুপের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে বরখাস্ত করে হাসপাতালের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একজন প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে জাহাঙ্গীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতি এবং সরকারি তহবিল তছরুপের অভিযোগ উঠছিল। এ পরিস্থিতিতে সমাজসেবা অধিদপ্তর এই বিষয়ে তদন্তের জন্য একটি তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে। তদন্তে দেখা যায়, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে হাসপাতালের জন্য বরাদ্দকৃত ১৭,৫০,০০০ টাকা এবং ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বরাদ্দকৃত ১০,০০,০০০ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই পরিস্থিতিতে সমাজসেবা অধিদপ্তর ১৯৬১ সালের স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থাসমূহ রেজিস্ট্রেশন ও নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশের আওতায় জাহাঙ্গীর চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন কার্যনির্বাহী পরিষদকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে চট্টগ্রাম সমাজসেবা কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মোস্তফা মোস্তাকুর রহিম খানকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
প্রশাসক হিসেবে মোস্তফা মোস্তাকুর রহিম খানকে সর্বশেষ অনুমোদিত কমিটির কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সাথে তাকে হাসপাতালের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা, নির্বাচন আয়োজন এবং নির্বাচিত কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করার দায়িত্বও দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক নির্দেশনায় চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের জন্য সরকারি অনুদান প্রদান সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। তাছাড়া আত্মসাৎকৃত অর্থ ১৫ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে, অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক হাসপাতালের জীবন সদস্য ও সাধারণ মানুষ তাদের সেবা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা হাসপাতালের সেবার মান পুনরুদ্ধারে এই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন।
জীবন সদস্যদরা একত্রিত হচ্ছে, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক হাসপাতাল রক্ষায় জীবন সদস্যদের আন্দোলন, তথাকথিত সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক সমিতি পরিচালিত চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল বর্তমানে সংকটের মুখে পড়েছে, এবং এর মূল কারণ হিসেবে তথাকথিত সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠে আসছে। অভিযোগ রয়েছে যে তিনি নিজের পদে থেকে অসৎ ও স্বেচ্ছাচারী কার্যকলাপের মাধ্যমে সমিতির স্বাভাবিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অস্বচ্ছ অর্থনৈতিক লেনদেন, ক্ষমতার অপব্যবহার, এবং অবৈধভাবে কমিটি গঠনসহ আরও বিভিন্ন গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
জীবন সদস্যদের মতে, জাহাঙ্গীর চৌধুরীর কার্যকলাপের কারণে হাসপাতালটির সেবামূলক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, যা চট্টগ্রামের ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। তাদের অভিযোগ, সভাপতির পদে থেকে জাহাঙ্গীর চৌধুরী হাসপাতালের নানা কর্মকাণ্ডে অপ্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ করছেন, যা প্রতিষ্ঠানটির সুনাম ও কার্যকারিতা ক্ষুণ্ণ করছে। এই পরিস্থিতিতে, জীবন সদস্যরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে হাসপাতাল রক্ষার জন্য পরবর্তী কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের লক্ষ্যে একত্রিত হওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন।আজ একটি জরুরি সভার আয়োজনের মাধ্যমে । সভায় সদস্যদের মতামত সংগ্রহ এবং হাসপাতালকে সুরক্ষিত রাখতে কী কী পদক্ষেপ নেয়া যায়, তা নিয়ে আলোচনা হবে। জীবন সদস্যরা এই উদ্যোগে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে জাহাঙ্গীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে, হাসপাতালকে সুরক্ষা ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে হলে অবিলম্বে জাহাঙ্গীর চৌধুরী ও তার অবৈধ কমিটিকে অপসারণ করে একটি স্বচ্ছ, গণতান্ত্রিক ও দক্ষ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা জরুরি বলে মনে করেন হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট সকলেই।