লজ্জা কি আজ একবারেই হারিয়ে গেছে? চট্টগ্রাম ডায়াবেটিস হাসপাতালের ভুয়া সভাপতি ফ্যাসিস্ট
জাহাঙ্গীর চৌধুরী হাসপাতালে জনতার সামনে গতকাল এক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পেয়েছে, যার মধ্যে ছিল ছবিতে জুতোপেটা ও থুথু নিক্ষেপের প্রদর্শনী। এতদিন সমাজসেবার আড়ালে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎকারী এই তথাকথিত সমাজসেবকদের মুখোশ এখন উন্মোচিত।
এটি আর শুধু ব্যক্তিগত লজ্জা নয়, এটি আমাদের সমাজের জন্য এক কলঙ্ক। সমাজের মানুষদের এখন সময় এসেছে এদের বিরুদ্ধে একসাথে রুখে দাঁড়ানোর এবং তাদের সকল অপকর্মের জবাব দেওয়ার। আমরা তাদের চিহ্নিত করে সমাজ থেকে বর্জন করব, এবং সব ধরণের সম্পর্ক ছিন্ন করব, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ডাকাতরা আর সমাজের সেবা নিয়ে ছলনা করতে না পারে।
এটুকু লিখতে গিয়ে মনের গভীরে দুঃখ জমেছে, তবে এটিও অনুভব করেছি যে এই লড়াই আমাদেরকে নতুন করে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি যোগাবে।দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে, গত কয়েকদিন ধরে চট্টগ্রাম ডায়াবেটিস হাসপাতালের সমাজ সেবার নামে যারা ডাকাতি করেছে এবং অপকর্মের বিষয়ে লিখতে হচ্ছে। একটি সময়ের গর্বিত প্রতিষ্ঠান আজ দুর্নীতি আর অপকর্মের আঁধারে ঢাকা পড়ে গেছে। চট্টগ্রাম ডায়াবেটিস সমিতির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৯৭৮ সালে, তখন আমি ছোট ছিলাম। ৯০-এর দশকে যখন আমি রাজপথে আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম, তখন আমার নেতা এস এম জামাল উদ্দিনের অনুপ্রেরণায় আমি এই হাসপাতালের সদস্য সংগ্রহসহ বিভিন্ন কাজে যুক্ত হয়েছিলাম। সেই সময় ডায়াবেটিস হাসপাতাল ছিল এনায়েত বাজারের গোয়ালপাড়ায়। বিশেষ করে আমার প্রিয় মানুষ শেখ মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর, রোমঘাটার এজাহারুল ফয়েজ সহ আরও অনেকে ছিল যারা আমাকে এই কাজে উৎসাহিত করেছিল। আমরা হেঁটে হেঁটে সদস্য সংগ্রহ করতাম—তখন সদস্য ফি ছিল মাত্র চারশত টাকা। আমি সম্ভবত ১৯৯৫ সালে সদস্য হয়েছিলাম।
যাদের অনুপ্রেরণায় এবং সঙ্গতিতে আমি এই সমিতির জন্য কাজ করেছিলাম, আজ তারা কেউ জীবিত নেই। কিন্তু তাদের কৃতিত্ব আমি কোনোদিন ভুলব না, তাদের ত্যাগ ও মেধার বিনিময়ে আজকের এই ডায়াবেটিস হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। কিন্তু আজ এই হাসপাতাল একদল লুটেরার হাতে বন্দী হয়ে আছে, যারা নিজেদের সিন্ডিকেট গড়ে তুলে বছরের পর বছর ধরে এই প্রতিষ্ঠানের সম্পদ লুট করছে। তাদের নামের আগে সমাজসেবক উপাধি জুড়ে দেওয়া হয়, অথচ তাদের কাজ সমাজ সেবার আড়ালে লুকানো চুরি ছাড়া কিছুই নয়।
আমি তাদের সমাজসেবার মুখোশ খুলে ফেলার জন্যই আজ কলম ধরেছি। চট্টগ্রামের ডায়াবেটিস হাসপাতাল, শিশু হাসপাতাল এবং রেড ক্রিসেন্ট মাতৃসদন হাসপাতালের বাস্তব চিত্র দেখে আজ মনে হয়, সেই তথাকথিত সমাজসেবকদের মুখে থুতু নিক্ষেপ করা উচিত। তারা এতটাই নোংরা যে, আমি চট্টগ্রাম ডায়াবেটিস হাসপাতালের সঙ্গে জড়িত না হলে কখনোই তাদের প্রকৃত রূপ জানতে পারতাম না। বিবেকের তাড়নায় এই কথাগুলো লিখতে বাধ্য হলাম।
আজকের লেখার বিষয় হলো সেই ভুয়া এবং অবৈধ কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরীর কিছু অপ্রিয় সত্য। গতকাল থেকে যখন এই কমিটির বিরুদ্ধে আমার লেখা প্রকাশিত হয়েছে, তখন থেকেই জনমত বৃদ্ধি পেয়েছে। তারই বহিঃপ্রকাশ দেখা যাচ্ছে আজকের হাসপাতালের নির্যাতিত কর্মীদের প্রতিবাদে। এই প্রতিবাদই আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে আরও লিখতে, আরও সত্য তুলে ধরতে।এই দুর্নীতি এবং অপকর্মের বিরুদ্ধে আমার কলম কখনো থামবে না, যতক্ষণ না এই লুটেরারা তাদের কর্মের ফল ভোগ করে। জাহাঙ্গীর চৌধুরী ও তার সহযোগীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে আজ আমি প্রত্যয়ী।
চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল, যা একসময় চট্টগ্রামের ডায়াবেটিস রোগীদের প্রধান ভরসার স্থল ছিল, আজ এক গভীর সংকটে নিমজ্জিত। ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই হাসপাতালটির উদ্দেশ্য ছিল ডায়াবেটিক রোগীদের সেবায় নিবেদিত থেকে সবার কাছে সুলভে এবং নির্ভুল চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দেওয়া। কিন্তু আজ, ফ্যাসিস্ট এবং স্বৈরাচারী মনোভাবাপন্ন জাহাঙ্গীর চৌধুরীর কারণে সেই সেবার গুণমান এবং নৈতিকতা হুমকির মুখে পড়েছে।
প্রথম থেকেই জাহাঙ্গীর চৌধুরীর অবৈধ হস্তক্ষেপ এবং দুর্নীতিপরায়ণ মনোভাব এই হাসপাতালের অব্যবস্থাপনাকে উন্মোচিত করেছে। হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে চিকিৎসার মান পর্যন্ত সবকিছুতেই তার ক্ষমতার অপব্যবহার লক্ষণীয়। রোগীদের ন্যূনতম যত্নের পরিবর্তে, তাদের উপর অসংখ্য অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা এবং ইনজেকশনের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অধিকাংশ রোগীকে প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকার পরীক্ষা করানো হচ্ছে, যা শুধুমাত্র অর্থনৈতিক লুটপাটের একটি নিদর্শন। হাসপাতালের কর্মচারীদের নিয়ে খেলা করা হয়েছে – তারা তাদের সম্মানজনক পেশাগত জীবনের পরিবর্তে এক প্রকার অর্থলোভী নির্যাতনের হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে।
জাহাঙ্গীর চৌধুরীর নির্দেশনায় কিছু অসাধু কর্মকর্তারা হাসপাতালের প্রতিটি বিভাগে দুর্নীতির শিকড় প্রসারিত করেছে। তার প্রতিটি সিদ্ধান্তই যেন হাসপাতালের স্বচ্ছতা ও সেবার নীতি ভঙ্গ করে। অধিকাংশ মেডিকেল কর্মকর্তা এবং নার্সরা তার নির্দেশে কাজ করছে এবং রোগীদের নিরীহভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। রোগীদের যথাযথ সেবা না দিয়ে তাদের উপরে অতিরিক্ত টেস্ট এবং চিকিৎসার নামে চাপানো হচ্ছে বিশাল ব্যয়ের বোঝা, যার ফলে গরিব রোগীরা আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এই দুর্নীতির ফলে হাসপাতালটিতে প্রায় ৩০০ জন কর্মচারীকে বিনা বেতনে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, এবং তাদের জায়গায় যোগ হয়েছে জাহাঙ্গীরের ঘনিষ্ঠ কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মী। এই কর্মচারীদের মধ্যে অধিকাংশই কোনো যোগ্যতা ছাড়াই নিয়োগপ্রাপ্ত, যাদের একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে জাহাঙ্গীরের শাসনব্যবস্থা এবং ব্যক্তিগত অর্থলিপ্সা অব্যাহত রাখা।
এখানে উল্লেখযোগ্য যে, হাসপাতালের সমস্ত আয়ের একটি বড় অংশ জাহাঙ্গীর চৌধুরীর হাতে চলে যাচ্ছে। সাধারণত, হাসপাতালের আয় থেকে কর্মচারীদের বেতন, রোগীদের সেবার মানোন্নয়ন, এবং অন্যান্য সাধারণ খরচ চালানো হয়। কিন্তু এই আয় থেকে প্রয়োজনীয় কোনো খাতে অর্থ ব্যয় না করে, সবকিছুই চুরি করে নেয়া হচ্ছে। ২০১৮ সাল থেকে শুরু করে জাহাঙ্গীর চৌধুরী কোনোবারই বৈধভাবে বার্ষিক সাধারণ সভা আয়োজন করতে পারেননি। এতে স্পষ্ট হয়, কীভাবে তিনি এই প্রতিষ্ঠানটিকে নিজের সম্পত্তি হিসেবে ব্যবহার করছেন। এছাড়াও, জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে পুরো একটি সিন্ডিকেট কাজ করছে, যারা হাসপাতালের বিভিন্ন পদে থেকে অসৎভাবে অর্থ উপার্জন করছে। তাদের দৃষ্টিতে, এটি একটি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান নয় বরং এক বিশাল অর্থ উপার্জনের কারখানা। বিভিন্ন ভুয়া কোম্পানি থেকে দামে বাড়তি ইনজেকশন, পরীক্ষা, এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহের মাধ্যমে অর্থ লুট হচ্ছে। পাশাপাশি, ওষুধ সরবরাহের ক্ষেত্রে জাহাঙ্গীরের সিন্ডিকেট দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সংস্থা থেকে নিম্নমানের ওষুধের সরবরাহ নিশ্চিত করা হচ্ছে, যা রোগীদের জীবনের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক হয়ে উঠেছে। অবস্থা এতটাই খারাপ যে, বহু চিকিৎসক এই পরিস্থিতির প্রতিবাদ করতে গিয়ে চাকরি হারিয়েছেন। জনসাধারণও তাদের আস্থা হারিয়েছে এই হাসপাতালে। এর ফলে, নতুন প্রজন্মের রোগীদের স্বাভাবিক চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তি কঠিন হয়ে পড়েছে, এবং বিশেষ করে ডায়াবেটিক রোগীদের জীবনে এক গভীর বিপর্যয় নেমে এসেছে।
স্থানীয় সাংবাদিক ও সমাজের সচেতন মানুষজন এ পরিস্থিতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। তারা চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক হাসপাতালের বর্তমান দুর্নীতি ও নৈরাজ্যের অবসানের দাবি তুলেছে। রোগী, কর্মচারী এবং স্থানীয় জনগণ মিলে এক বিশাল আন্দোলন গড়ে তুলেছে। তারা জাহাঙ্গীর চৌধুরীর অবিলম্বে অপসারণ এবং এই প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছ ও জবাব দিহিতামূলক ব্যবস্থাপনা ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে।
চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালকে পুনরুদ্ধার করার এখনই সময়। জাহাঙ্গীর চৌধুরীর দীর্ঘ ফ্যাসিস্ট শাসনের অবসান ঘটিয়ে হাসপাতালকে একটি সেবামূলক, মানবিক এবং রোগীবান্ধব প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করতে হবে। এই আন্দোলনের চূড়ান্ত সফলতা তখনই আসবে, যখন এই প্রতিষ্ঠানে আবারো আস্থা ফিরবে এবং রোগীরা নির্ভয়ে তাদের সেবা গ্রহণ করতে পারবে।
ফ্যাসিস্ট জাহাঙ্গীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ এবং তার অপকর্মের সহযোগীদের শাস্তি দাবিতে বৃহত্তর আন্দোলন এখন সময়ের দাবি। তার দুর্নীতি এবং অনৈতিক কার্যকলাপ শুধু চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের সুনাম নষ্ট করেনি, বরং বহু মানুষের জীবন ও চিকিৎসার গুণগত মানকে চরমভাবে বিপন্ন করেছে। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে তাকে এবং তার দোসরদের বিচারের আওতায় আনতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের অপরাধ করতে সাহস না পায়।
জাহাঙ্গীর চৌধুরীর অনৈতিক কার্যক্রম ও দুর্নীতির পরিধি
জাহাঙ্গীর চৌধুরী চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের পদকে কাজে লাগিয়ে যে সমস্ত দুর্নীতি করেছেন, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
অবৈধ আর্থিক লেনদেন: ৩০০ জন কর্মচারীকে বিনা বেতনে চাকরিচ্যুত করে সেই বেতন নিজের আয় হিসেবে তুলে নিয়েছেন। কর্মচারীদের ন্যায্য পাওনা বঞ্চিত রেখে তাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করেছেন। এছাড়া চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনার নামে অতিরিক্ত দাম নেয়া এবং নীচু মানের ওষুধ সরবরাহ করে বিশাল অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। সেবার মানের অবনতি: রোগীদের অতিরিক্ত পরীক্ষার নামে নিত্যনতুন পদ্ধতিতে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসার বদলে তাদের মিথ্যা রিপোর্ট ও কৃত্রিম রোগ প্রমাণ করে মোটা অংকের বিল আদায় করা হচ্ছে। তার সরাসরি নির্দেশনায় চিকিৎসা পদ্ধতিগুলোকে বিকৃত করা হয়েছে, যার ফলে হাসপাতালে আসা রোগীরা আর সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছে না।
মিটিং না করা এবং স্বচ্ছতা না থাকা: ২০১৮ সাল থেকে তিনি কোনোবারই বৈধভাবে বার্ষিক সাধারণ সভা করতে পারেননি। এটি তার দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের একটি সুস্পষ্ট উদাহরণ। কর্মচারীদের সম্মুখীন করা হয় চাপ এবং ভয়ভীতির, যাতে তারা কোনো প্রতিবাদ না করতে পারে। অবৈধ নিয়োগ ও কন্ট্রাক্ট দেয়া: জাহাঙ্গীর চৌধুরী তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের হাসপাতালের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়েছেন। এসব কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা যোগ্যতা ছাড়া শুধু তার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে কাজ করছে। তারা সেবা দেয়ার বদলে হাসপাতালের অর্থ এবং সম্পদ লুটপাট করছে।
তার সহযোগীদের ভূমিকাও অপরাধমূলক জাহাঙ্গীর চৌধুরী এই পুরো অপরাধ সাম্রাজ্য একা চালাননি। তার ঘনিষ্ঠ কিছু কর্মকর্তা এবং হাসপাতালের উচ্চপর্যায়ের কর্মচারীও এই দুর্নীতিতে সরাসরি জড়িত। তারা একে অপরকে সহযোগিতা করে পুরো হাসপাতালের অর্থ লুটপাট করেছে এবং রোগীদের প্রতি অবহেলা প্রদর্শন করেছে। তাদের মধ্যে যারা রয়েছে, তারা হলো:
সাবেক অর্থনৈতিক প্রধান এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা: তারা জাহাঙ্গীরের নির্দেশে হাসপাতালের অর্থ ও সম্পদকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসেবে ব্যবহার করেছে এবং একাধিক মিথ্যা কন্ট্রাক্টের মাধ্যমে বড় অংকের অর্থ চুরি করেছে।
মেডিকেল ও নার্সিং স্টাফের একাংশ: এরা তার নির্দেশে রোগীদের উপর অতিরিক্ত পরীক্ষা, ইনজেকশন এবং ওষুধের বোঝা চাপিয়ে দিয়ে অর্থ আদায় করেছে। শাস্তির প্রয়োজনীয়তা এবং দাবী এখন সময় এসেছে এই ফ্যাসিস্ট এবং দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার। শুধুমাত্র জাহাঙ্গীর চৌধুরী নয়, তার সহযোগী কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও সমানভাবে অপরাধী। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত চালিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
কিছু কার্যকর পদক্ষেপের দাবি:
নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন: সরকারের পক্ষ থেকে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে এই দুর্নীতির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে হবে। এতে শুধুমাত্র আর্থিক অনিয়মই নয়, রোগীদের ওপর শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনের সব বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
তাত্ক্ষণিক অপসারণ ও গ্রেফতার: জাহাঙ্গীর চৌধুরী এবং তার সহযোগীদের অবিলম্বে অপসারণ এবং গ্রেফতার করতে হবে। তাদের বিচারের সম্মুখীন করতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে সব ধরনের প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
দুর্নীতির টাকাগুলো পুনরুদ্ধার করা: তারা হাসপাতাল থেকে যে বিশাল অংকের অর্থ আত্মসাৎ করেছে, তা পুনরুদ্ধার করে সেই অর্থ হাসপাতালের উন্নয়নে ব্যয় করতে হবে। এই টাকা গরীব রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবায় কাজে লাগানো উচিত। অবৈধ নিয়োগ বাতিল এবং নতুন কর্মী নিয়োগ: যারা অবৈধভাবে নিয়োগ পেয়েছে, তাদের চাকরি থেকে অপসারণ করে নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। এতে মেধা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ নিশ্চিত করা হবে।
সামাজিক সচেতনতা এবং প্রতিবাদ চট্টগ্রামবাসীসহ দেশের সচেতন মহল ইতোমধ্যে এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছে। তাদের সংগ্রামকে সফল করতে হলে পুরো দেশবাসীর সহযোগিতা প্রয়োজন। সংবাদমাধ্যম এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এই বিষয়ে সোচ্চার হয়েছে। জাতীয় পর্যায়েও জাহাঙ্গীর চৌধুরীর অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সংগঠিত হওয়া উচিত।
এই লড়াইয়ে শেষ বিজয় তখনই আসবে, যখন এই ধরনের ফ্যাসিস্ট এবং দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিরা আইন ও ন্যায়বিচারের মাধ্যমে শাস্তি পাবে এবং চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক হাসপাতাল পুনরায় তার পূর্বের সেবা ও গৌরব ফিরে পাবে।
লেখকঃ সাংবাদিক গবেষক টেলিভিশন উপস্থাপক ও মহাসচিব- চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরাম।