বই—সর্বোত্তম উপহার-
একটি বই পারে মানুষের চিন্তার জগতকে প্রসারিত করতে, নতুন দিগন্তের সন্ধান দিতে, এবং পাঠককে জ্ঞানের গভীরে নিয়ে যেতে। বই উপহার দেওয়া মানে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেওয়া, মনের জানালা খুলে দেওয়া। আর তাই, অর্থ-সম্পদ, হীরা-মুক্তা, সোনা-দানা—সব কিছুর চেয়ে বই-ই সর্বোত্তম উপহার। এমনই এক মহান উপলক্ষে, আজ ৬ ফেব্রুয়ারি, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহাসান হাবিব পলাশের হাতে আমার লেখা “সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের কথা” বইটি তুলে দিতে পেরে আমি গর্বিত ও আনন্দিত। বইটি তিনি আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করেন এবং বলেন,
“সবচেয়ে দামী উপহার হচ্ছে বই। আমি বই পড়ি, বই কিনি। কিন্তু বর্তমান প্রজন্ম বই থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। মোবাইলের প্রতি আসক্তি তাদের বইবিমুখ করে দিয়েছে। অথচ রুশ জাতির মতো দেশগুলো এখনো বই পড়ার অভ্যাস ধরে রেখেছে। আমাদের তরুণদের বইমুখী করতে বইমেলাকে আরও প্রাণবন্ত করা দরকার।” ডিআইজি আহাসান হাবিব পলাশ সাহেব শুধু একজন দক্ষ পুলিশ কর্মকর্তা নন, তিনি একজন প্রকৃত বইপ্রেমীও। তাঁর কথায় স্পষ্ট যে, তিনি বইয়ের মূল্য বোঝেন এবং পড়াশোনার প্রতি গভীর আগ্রহ রাখেন।৷ একজন সাহিত্যানুরাগী পুলিশ কর্মকর্তা- ডিআইজি আহাসান হাবিব পলাশের বইপ্রেমের গল্পটি আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে যখন তিনি জানান, তাঁর নামের সাথে বিখ্যাত কথাসাহিত্যিক আহসান হাবীবের নামের মিল থাকার কারণে তিনি বিসিএস পরীক্ষার সময় কথাসাহিত্যিক আহসান হাবীব সম্পর্কে পড়াশোনা করেছিলেন। তাঁর ধারণা ছিল, মৌখিক পরীক্ষায় বোর্ড সদস্যরা তাঁর নাম শুনলেই প্রসঙ্গটি তুলবেন, এবং তা-ই হয়েছিল। তাঁর এই পড়াশোনার অভ্যাস, পূর্ব পরিকল্পনা এবং সাহিত্যচর্চার প্রতি আগ্রহ প্রমাণ করে যে তিনি কেবল একজন চৌকস পুলিশ অফিসারই নন, বরং একজন সংস্কৃতিমনা, পড়ুয়া ব্যক্তি যিনি জ্ঞানের চর্চাকে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে দেখেন তিনি যখন আমার লেখা বই হাতে নিয়ে প্রশ্ন করেন,
“ভাই, আপনি এত লেখা লিখেন কখন?” তখন আমি অনুভব করি, তাঁর পাঠ-অনুরাগ কতটা গভীর। তিনি আমার লেখা পড়ার চেষ্টা করেন, যা একজন লেখকের জন্য অত্যন্ত সম্মানের বিষয়। তাঁর মতো একজন প্রশাসনিক ব্যক্তিত্বের বইপ্রীতি নিঃসন্দেহে সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বইয়ের গুরুত্ব ও বর্তমান প্রজন্ম- বইপড়া শুধু বিনোদন নয়, এটি মানুষের মননশীলতা গড়ে তোলে, যুক্তিবোধ বাড়ায়, এবং সমাজকে আলোকিত করে। কিন্তু বর্তমান সময়ে অধিকাংশ তরুণ-তরুণী বইয়ের পরিবর্তে মোবাইল ফোনের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয়ে পড়ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি তাদের সাহিত্য ও গবেষণার চর্চা থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে।
ডিআইজি আহাসান হাবিব পলাশ এই বাস্তবতা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং বলেন,
“আমাদের সমাজে বই পড়ার সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনতে হবে। বইমেলাকে আরও প্রাণবন্ত করতে হবে, যাতে তরুণরা বইয়ের প্রতি আগ্রহী হয়।” তাঁর এই উপলব্ধি আমাদের সমাজের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বই থেকে দূরে সরে যায়, তবে তাদের চিন্তাশক্তি, বিশ্লেষণী ক্ষমতা এবং সৃজনশীলতা ধীরে ধীরে হ্রাস পাবে। বইমেলা: জ্ঞানের আলোকমেলা- ডিআইজি আহাসান হাবিব পলাশ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক আয়োজিত একুশে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বইমেলা শুধু বই কেনাবেচার স্থান নয়, এটি সংস্কৃতির মিলনমেলা, জ্ঞানের উৎসব। তিনি বইমেলার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বলেন,
“বইমেলাকে আরও আকর্ষণীয় করতে হবে, যাতে তরুণরা এখানে এসে বইয়ের প্রতি আগ্রহী হয়।”
এটি সত্যিই একটি মূল্যবান পরামর্শ। আমাদের উচিত বইমেলাকে কেবলমাত্র বই কেনার স্থান হিসেবে না দেখে, একে পাঠকদের মিলনস্থল হিসেবে গড়ে তোলা। নতুন প্রজন্মকে বই পড়ার প্রতি আগ্রহী করতে হলে আমাদের স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে পরিবার পর্যন্ত বইয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
একজন সফল ও মেধাবী কর্মকর্তা- ডিআইজি আহাসান হাবিব পলাশ একজন চৌকস, দক্ষ ও মেধাবী পুলিশ কর্মকর্তা। প্রশাসনিক দায়িত্বের পাশাপাশি তিনি সমাজ, শিক্ষা এবং সংস্কৃতির প্রতি আন্তরিকভাবে মনোযোগী। তাঁর এই গুণাবলি তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তোলে।
তিনি যেভাবে সাহিত্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং বইকে জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দেখেন, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। পুলিশ বাহিনীর মতো ব্যস্ত পেশায় থেকেও তিনি বইয়ের প্রতি আগ্রহ হারাননি, বরং বই পড়ার গুরুত্ব বোঝেন এবং তা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। আমি যখন তাঁকে আমার লেখা বইটি উপহার দেই, তখন তাঁর আন্তরিক অভিব্যক্তি এবং বই সম্পর্কে তাঁর উক্তি আমাকে আরও অনুপ্রাণিত করে। তিনি কেবল বই গ্রহণ করেননি, বরং বইয়ের গুরুত্ব নিয়ে তাঁর মূল্যবান অভিমত প্রকাশ করেছেন।
ডিআইজি আহাসান হাবিব পলাশ: একজন সত্যিকারের বইপ্রেমী-
বইকে ভালোবাসেন এমন মানুষ আমাদের সমাজে খুব বেশি নেই। কিন্তু ডিআইজি আহাসান হাবিব পলাশ নিঃসন্দেহে একজন সত্যিকারের বইপ্রেমী। তাঁর মতো গুণী ব্যক্তিদের উৎসাহিত করা আমাদের দায়িত্ব। তিনি নিজে বই পড়েন, বই কেনেন এবং বই পড়ার সংস্কৃতি গড়ে তোলার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন।
তাঁর প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা। তাঁর মতো আরও মানুষ যদি বইয়ের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করেন, তবে আমাদের সমাজে বইপড়ার সংস্কৃতি নতুনভাবে জাগ্রত হবে।
“একজন বইপ্রেমী মানুষ মানেই একজন আলোকিত মানুষ। আর আলোকিত মানুষই পারে সমাজকে এগিয়ে নিতে।”
আমি ডিআইজি আহাসান হাবিব পলাশ সাহেবকে একজন সেরা বইপ্রেমী হিসেবে সম্মান জানাই এবং আশা করি, তাঁর মতো আরও অনেকেই বই পড়ার গুরুত্ব বুঝবেন এবং নতুন প্রজন্মকে বইমুখী করতে উদ্যোগী হবেন