চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনায় করা মামলায় অভিযুক্ত ৬৩ জন আইনজীবীর জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ার শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
আইনজীবীদের দাবি: ষড়যন্ত্রমূলক মামলা
মামলার আসামি ও চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের সাবেক অতিরিক্ত পিপি (পাবলিক প্রসিকিউটর) দুলাল দেবনাথ বলেন, “আমরা ৬৩ জন আইনজীবী কথিত হত্যাচেষ্টার মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাই। শুনানি শেষে আদালত আমাদের জামিন মঞ্জুর করেন।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, তাদের ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলায় জড়ানো হয়েছে। অনেকে ওইদিন আদালতেও উপস্থিত ছিলেন না, তবুও তাদের আসামি করা হয়েছে।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার ও সংঘর্ষের সূত্রপাত
গত বছরের ২৫ নভেম্বর বিকেলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার সময় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) সদস্যরা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করেন। পরদিন তাকে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদোহ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মহানগর ষষ্ঠ আদালতের বিচারক কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ রায়কে কেন্দ্র করে ইসকনের অনুসারীরা আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। দুপুরের পর বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে আদালত এলাকায় মসজিদ, দোকানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা চালান। এতে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করা হয়।
সংঘর্ষের মধ্যে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম হত্যাকাণ্ড
সংঘর্ষের একপর্যায়ে বিকেলে আদালতের প্রধান ফটকের বিপরীতে রঙ্গম কনভেনশন হলের গলিতে একদল ইসকন অনুসারীর হাতে খুন হন অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২৯ নভেম্বর রাতে নগরের কোতোয়ালি থানায় নিহতের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এছাড়া একই ঘটনায় আরও কয়েকটি মামলা করা হয়।
এখন দেখার বিষয়, সংঘর্ষ ও হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলাগুলোর তদন্ত কীভাবে এগোয় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ ব্যাপারে কী ব্যবস্থা নেয়।