1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ০৭:১১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
শেষ হলো দাওয়াতে ইসলামীর তিনদিনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় ইজতেমা বালুকাবেলার আত্মঘোষণা: যেখানে সাংবাদিকতা হয়ে ওঠে প্রতিবাদের কবিতা চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের ঐক্য উৎসব পারকি সৈকতে গড়লো অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু মাওলানা রইস উদ্দিন হত্যার বিচার দাবিতে আনোয়ারায় বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ! “বাঁশখালীতে ৪ হাজার ইয়াবাসহ টেকনাফের মাদক কারবারি আটক: ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ” হোমনায় মহান মে দিবস উপলক্ষে  বিএনপির বর্ণাঢ্য র‍্যালি  ড. মোহাম্মদ ইউনূস এর শুভ আগমনে বোয়ালখালীবাসীর পক্ষ থেকে হাজী মোহাম্মদ আলম ববির শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা পুলিশ পরিচয়ে ঘরে প্রবেশ করে পরিবারের ৮ জনকে বেঁধে ছয়টি দোকান ঘর গুঁড়িয়ে দিয়ে মালামাল লুট করেছে দুর্বৃত্তরা রোদেলা দুপুরে পারকি সৈকতের বালুকাবেলায় কলম যোদ্ধারা,স্মৃতিময় এক মে দিবস! ড. মোহাম্মদ ইউনূসের দক্ষিণ চট্টগ্রাম সফর

“বার আউলিয়ার চট্টগ্রাম: মুসলমান সভ্যতার বিকাশের এক উজ্জ্বল অধ্যায়”

মো. কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: রবিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৮৫ বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রামে “বার আউলিয়ার চট্টগ্রাম” শীর্ষক সেমিনার ও ইতিহাস লেখক সম্মিলন অনুষ্ঠিত
বাংলা সাহিত্য ও ইতিহাসের গৌরবময় উত্তরাধিকারকে বিশ্বদরবারে তুলে ধরার লক্ষ্যে বিশ্ব-বাংলা সাহিত্য মজলিস এর উদ্যোগে ৭ ডিসেম্বর ২০২৪, শনিবার, সন্ধ্যা ৫টায় চট্টগ্রাম নগরীর মোমিন রোডস্থ চট্টগ্রাম একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হলো “প্রাচীন বাংলাদেশের চট্টগ্রামে মুসলমান সভ্যতা বিকাশ: বার আউলিয়ার চট্টগ্রাম” শীর্ষক সেমিনার ও ইতিহাস লেখক সম্মিলন। অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন, যিনি মুসলমান সভ্যতার বিকাশে চট্টগ্রামের ভূমিকা, বার আউলিয়ার অবদান এবং ইসলামের প্রচারে সুফি সাধকদের কার্যক্রম নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিলেন বিশ্ব-বাংলা সাহিত্য মজলিসের প্রতিষ্ঠাতা ও ইতিহাসবিদ সোহেল মোহাম্মদ ফখরুদ্দিন। তিনি তার উদ্বোধনী বক্তব্যে মুসলিম সভ্যতার বিকাশে চট্টগ্রামের ভূমিকা এবং এ অঞ্চলের ঐতিহাসিক গুরুত্ব তুলে ধরার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
আলোচনার মূল বিষয়বস্তু:
১. আরব বণিকদের আগমন ও চট্টগ্রামে ইসলামের প্রচার।
২. বার আউলিয়ার মাধ্যমে চট্টগ্রামে সুফি মতবাদের বিস্তার।৩. চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোর সংরক্ষণ ও প্রজন্মান্তরে তার গুরুত্ব। ৪. ইসলামী ঐতিহ্যের গবেষণা ভিত্তিক সংরক্ষণ এবং তা বিশ্বদরবারে তুলে ধরার কৌশল।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন দেশের বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ, লেখক, গবেষক, ইসলামী চিন্তক, শিক্ষাবিদ, কবি ও সাহিত্যিকরা। সেমিনারে বক্তারা চট্টগ্রামের মুসলমান সভ্যতার বিকাশ নিয়ে আলোচনা করেন এবং নতুন গবেষণার দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। গৃহীত সিদ্ধান্ত:
সেমিনারের সমাপনী বক্তব্যে চট্টগ্রামের মুসলিম ঐতিহ্য রক্ষায় গবেষণাধর্মী উদ্যোগ ও সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হয়। অংশগ্রহণকারীরা ভবিষ্যতে এই অঞ্চলের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঠিক চর্চা ও সংরক্ষণে কাজ করার অঙ্গীকার করেন। অনুষ্ঠানটি চট্টগ্রামের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সভ্যতার গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়কে তুলে ধরার এক অনন্য প্রয়াস হিসেবে প্রশংসিত হয়েছে। আয়োজকরা এ ধরনের আয়োজন ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
তবে মুল বক্তৃতাতে মো. কামাল উদ্দিন
ইতিহাস তুলে ধরেন-
চট্টগ্রামে মুসলমানদের আগমনের ইতিহাস
চট্টগ্রামের ইতিহাস বহু প্রাচীন ও সমৃদ্ধ। ভৌগোলিক অবস্থান, বন্দর নগরী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা এবং বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির জন্য এটি সুদূর অতীত থেকেই ছিল বাণিজ্য ও সভ্যতার একটি কেন্দ্রীয় স্থান। চট্টগ্রামে মুসলমানদের আগমনও এই বন্দরকেন্দ্রিক বাণিজ্যের পথ ধরেই শুরু হয়। প্রথম মুসলিমদের আগমন
মুসলমানদের চট্টগ্রামে আগমন ঘটে মূলত নবম থেকে দশম শতকের দিকে। আরব বণিকরা তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমের জন্য চট্টগ্রামে আসেন। বঙ্গোপসাগরের তীরে অবস্থিত চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক বন্দর আরব বণিকদের জন্য ছিল একটি আদর্শ স্থান। আরবদের সঙ্গে চট্টগ্রামের স্থানীয় মানুষের সুসম্পর্ক তৈরি হয়। এই বাণিজ্যের পাশাপাশি তারা ইসলাম ধর্ম প্রচার করতেও মনোযোগ দেন। প্রথমদিকে আরব বণিকরা এই অঞ্চলে মসজিদ নির্মাণ করেন, যা ছিল তাদের ধর্মীয় কার্যক্রমের কেন্দ্র। অনেকের মতে, ৭২০ খ্রিস্টাব্দে আরব বণিকদের একটি দল চট্টগ্রামে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে এবং ইসলামের বাণী প্রচার করতে থাকে।
শাহ মুহাম্মদ সুলতানের ভূমিকা
১২শ শতাব্দীতে শাহ মুহাম্মদ সুলতান নামে একজন সুফি সাধকের আগমন চট্টগ্রামে মুসলমানদের সংখ্যা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তিনি ইসলাম প্রচারের পাশাপাশি সামাজিক সংস্কারে মনোযোগ দেন। তার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে বহু স্থানীয় মানুষ ইসলাম গ্রহণ করে।
সুফি সাধক ও ইসলাম প্রচার
চট্টগ্রামে মুসলমানদের বসতি স্থাপনের অন্যতম কারণ ছিল সুফি সাধকদের কার্যক্রম। এই অঞ্চলে অনেক সুফি সাধক ইসলাম প্রচার করতে আসেন। শাহ আমানত, বায়েজিদ বোস্তামী, ও শাহ সুলতান গিয়াস উদ্দিন আউলিয়া এই অঞ্চলের ইতিহাসে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন। তাদের আধ্যাত্মিক শিক্ষা এবং মানবতাবাদী কার্যক্রম স্থানীয় মানুষের মনে গভীর প্রভাব ফেলে।
তুর্কি শাসন এবং মুসলিম স্থাপত্য
চট্টগ্রামে মুসলিম প্রভাব আরও মজবুত হয় ১৩শ শতাব্দীর শেষের দিকে, যখন তুর্কি শাসকরা এ অঞ্চলে তাদের আধিপত্য বিস্তার করে। ১৩৪০ সালের দিকে সুলতান গিয়াস উদ্দিন আজম শাহের অধীনে চট্টগ্রাম সুলতানি শাসনের অন্তর্ভুক্ত হয়। তার শাসনামলে অনেক মসজিদ, মাদ্রাসা, এবং অন্যান্য ইসলামিক স্থাপত্য তৈরি হয়, যা আজও চট্টগ্রামের মুসলিম ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করছে।
ইবনে বতুতার বিবরণ
বিশ্বখ্যাত পর্যটক ইবনে বতুতা ১৪শ শতাব্দীতে চট্টগ্রাম ভ্রমণ করেন এবং তার লেখায় চট্টগ্রামের মুসলমানদের উল্লেখ করেন। তিনি উল্লেখ করেন, চট্টগ্রাম ছিল একটি সমৃদ্ধ নগরী যেখানে মুসলমানদের বাণিজ্যিক ও ধর্মীয় কার্যক্রম ছিল সক্রিয়। মুঘল আমলে চট্টগ্রামে মুসলমানদের প্রভাব
মুঘল শাসনের সময় চট্টগ্রামে মুসলমানদের প্রভাব আরও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। ১৬৬৬ সালে মুঘল সেনাপতি শায়েস্তা খাঁ চট্টগ্রাম দখল করেন এবং এটি মুঘল সাম্রাজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশে পরিণত হয়। তার শাসনামলে চট্টগ্রামে ইসলামিক শিক্ষা এবং সংস্কৃতির ব্যাপক প্রসার ঘটে।
বন্দরকেন্দ্রিক বাণিজ্যের প্রভাব
চট্টগ্রামের বন্দর থেকে চালিত আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মাধ্যমে মুসলমান ব্যবসায়ীরা চট্টগ্রামে আরও বেশি সংখ্যায় আসেন এবং বসতি স্থাপন করেন। বন্দরকেন্দ্রিক এই বাণিজ্যের মাধ্যমেই চট্টগ্রাম পরিণত হয় একটি বহুজাতিক, বহুসাংস্কৃতিক নগরীতে, যেখানে মুসলমানরা নিজেদের ধর্মীয়, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত করে তোলে।
চট্টগ্রামের ইসলামী ঐতিহ্য আজও জীবন্ত চট্টগ্রামে মুসলমানদের আগমনের পর থেকে যে সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের শুরু হয়েছিল, তা আজও বহমান। শহরের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা প্রাচীন মসজিদ, মাজার, এবং অন্যান্য ইসলামিক স্থাপত্য এই অঞ্চলের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটকে তুলে ধরে।
চট্টগ্রামে মুসলমানদের আগমন কেবল একটি ধর্মীয় আন্দোলনের অংশ ছিল না; এটি ছিল বাণিজ্য, সংস্কৃতি এবং মানবিকতার এক মেলবন্ধন। আরব বণিকদের আগমন থেকে শুরু করে সুফি সাধকদের ধর্ম প্রচার এবং মুঘল শাসনের প্রভাব—সবই চট্টগ্রামের মুসলিম সম্প্রদায়ের ভিত্তি গড়ে তুলেছে। চট্টগ্রামের ইতিহাসে মুসলমানদের আগমন এবং স্থায়ী বসতি আজও এ অঞ্চলের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০৩১  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট