চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানা এলাকার মোহরা নুর আহমেদ হুজুরের বাড়ির কাছে অবস্থিত এক নিরীহ পরিবারের অভিযোগ, দীর্ঘ বছর ধরে প্রভাবশালী প্রতিবেশী আলী আকতার ও তার সহযোগীদের হাতে তারা চাঁদাবাজি ও হয়রানির শিকার হয়ে আসছেন। মোহাম্মদ আবুল কালাম আবু নামের এক গাড়ি চালক ও তার পরিবারের সদস্যরা জানান, গত তিন বছর ধরে আলী আকতার গংয়ের চাঁদার দাবী ও মিথ্যা মামলায় তারা অত্যাচারের শিকার। সম্প্রতি মেরামতের কাজ করতে গিয়ে আবারও এমন ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন তারা।
অভিযোগের সূত্রে জানাযায়, গত ১৯ অক্টোবর সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে আলী আকতারসহ আরও নয় জন আবুল কালামের বসতঘরের মেরামত কাজ জোরপূর্বক বন্ধ করে দেন। অভিযোগ রয়েছে, মেরামতের কাজ চালিয়ে যেতে হলে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দেওয়ার দাবী করেন তারা এবং আবুল কালাম ও তার পরিবারকে তাদের ভিটে ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন।
আবুল কালাম জানান, তারা প্রায় এক গন্ডা জায়গা দখল করে রাতারাতি বিল্ডিং নির্মাণ করেন এবং মেরামতের কাজ বন্ধ করতে চাঁদার জন্য হুমকি দেন। এছাড়াও, নারী নির্যাতনের মিথ্যা মামলার হুমকি দিয়ে কালামের পরিবারকে হয়রানি করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন আবুল কালামের পরিবার চান্দগাঁও থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগ দায়ের করতে গেলে পুলিশ তাদের মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। অভিযোগ রয়েছে, থানার এস আই ফয়সাল আলী আকতারের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আবুল কালামের কাজ বন্ধ করতে বাধ্য করেন এবং গ্রেফতারের হুমকি দেন। পুলিশের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ পরিবারটি এখন ন্যায়বিচারের আশায় বিভিন্ন জায়গায় ধর্ণা দিচ্ছেন। চান্দগাঁও থানার ওসি আফতাব উদ্দিন জানান, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। কিন্তু এই ঘটনায় পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত কোন মামলা রুজু হয়নি, যা স্থানীয়দের মধ্যে অসন্তোষের সৃষ্টি করেছে।
আদালতের নির্দেশনার অপব্যবহার আলী আকতার গত ২১ অক্টোবর আদালতে একটি ১৪৫ ধারার মামলা দায়ের করেন, যার প্রেক্ষিতে পুলিশ একটি নোটিশ প্রদান করে। তবে অভিযোগ রয়েছে, মূল বসতভিটার জমির দাগ নং ও মামলায় উল্লেখিত দাগ নং-এর মধ্যে কোন মিল নেই। এতে মনে করা হচ্ছে, দাবীকৃত চাঁদার জন্যই হয়রানিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
আবুল কালাম জানান, প্রভাবশালী আলী আকতার এবং তার সহযোগীরা বিদেশ ফেরত আনোয়ার নাজমুল সজীবকে নিয়ে তাদের ওপর চাঁদার দাবী এবং অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে তুলেছেন। আলী আকতারের বিরুদ্ধে আবুল কালামের বসতভিটা দখল করার অভিযোগটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। দীর্ঘদিন ধরে এই ভূমি আবুল কালামের পরিবার ভোগ করে আসছিল, তবে আলী আকতার তার প্রভাব ও রাজনৈতিক অবস্থানের অপব্যবহার করে সম্পত্তিটি জোরপূর্বক দখল করার চেষ্টা চালান।
এখানে স্থানীয় প্রশাসনের নিরব ভূমিকা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে, কারণ আলী আকতারের প্রভাবশালী অবস্থানের কারণে সুষ্ঠু পদক্ষেপ নিতে কেউ সাহস পাচ্ছে না। এতে আবুল কালামের পরিবার চরম দুর্ভোগে পড়েছে এবং তাদের জীবনযাপন বিপন্ন হয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষের সম্পত্তি দখল করে উন্নয়নের নামে সমাজে দুর্নীতি চালিয়ে যাওয়ার প্রবণতাই আলী আকতারদের মতো অসাধু ব্যক্তিদের প্রকৃত পরিচয় তুলে ধরে। এ ধরনের ঘটনা শুধু একজন ব্যক্তির ক্ষতি নয়, বরং সামগ্রিকভাবে সমাজের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, যা অপ্রত্যাশিত এবং নিন্দনীয়।
তাদের পরিবার এখন ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় রয়েছে। নিরীহ পরিবারটির প্রতি পুলিশ প্রশাসনের এমন উদাসীনতা এবং প্রভাবশালীদের প্রতি সুরক্ষা প্রদানের অভিযোগ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।