মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়া ও তার নতুন নেতৃত্বকে অস্থিতিশীল না করতে সোমবার ইসরাইলকে সতর্ক করেছেন। এর কয়েকদিন আগে ইসরাইলি বাহিনীর অভিযানে ১৩ জন নিহত হয়।
ট্রাম্পের এই হুঁশিয়ারির কিছুক্ষণ পরই ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর থেকে জানানো হয় যে ট্রাম্প নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তাকে আবারও হোয়াইট হাউসে সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, ‘এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে ইসরাইল সিরিয়ার সঙ্গে একটি শক্তিশালী ও সত্যিকারের সংলাপ বজায় রাখবে এবং এমন কিছু করবে না যা সিরিয়ার একটি সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করে।’
এক বছর আগে প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা’র নেতৃত্বাধীন ইসলামপন্থী জোট দীর্ঘদিনের শাসক বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করে। এরপর থেকেই ট্রাম্প ইসরাইল-সিরিয়া নিরাপত্তা চুক্তির জন্য চাপ দিয়ে আসছেন।
কিন্তু ইসরাইলের শতাধিক হামলার কারণে উত্তেজনা বেড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ছিল গত শুক্রবারের অভিযান, যেখানে দক্ষিণাঞ্চলীয় বেইত জিন গ্রামে ১৩ জন নিহত হয়।
সিরিয়া এই ইসরাইলি অভিযানকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ বলে অভিহিত করেছে। এদিকে ইসরাইল বলেছে, তারা একটি ইসলামপন্থী গোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।
ট্রাম্প বলেন, সাবেক ইসলামপন্থী বিদ্রোহী শারা’র নেতৃত্বে সিরিয়ার কার্যক্রমে তিনি ‘খুবই সন্তুষ্ট।’ কয়েক সপ্তাহ আগে শারা হোয়াইট হাউস এক ঐতিহাসিক সফর করেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জোর দিয়ে বলেন, শারা ‘অত্যন্ত আন্তরিকভাবে কাজ করছেন যাতে ভালো কিছু ঘটে এবং সিরিয়া ও ইসরাইলের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী ও সমৃদ্ধ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি পুনর্গঠনে সিরিয়া যেন পরিকল্পনা অনুযায়ীই এগিয়ে যেতে পারে, সেজন্য ওয়াশিংটন সর্বোচ্চ সহযোগিতা দিচ্ছে।’
অক্টোবরে গাজায় নাজুক যুদ্ধবিরতির পর মধ্যপ্রাচ্যে আরও শান্তি ফিরিয়ে আনতে সিরিয়া-ইসরাইলের সম্পর্ক উন্নয়নকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন ট্রাম্প। শারাকে সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার ওপর থাকা নিষেধাজ্ঞাও তুলে নিয়েছে। ওয়াশিংটনের দাবি, দামেস্ক এখন ইসলামিক স্টেটবিরোধী বৈশ্বিক জোটেও যোগ দিয়েছে।
ট্রাম্পের পোস্টের পরপরই ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, নেতানিয়াহু ও ট্রাম্প সোমবার তাদের ফোনালাপে আঞ্চলিক শান্তি চুক্তি ‘সম্প্রসারণ’ নিয়ে আলোচনা করেছেন।
নেতানিয়াহু ট্রাম্পের ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে অন্য যেকোনো বিদেশি নেতার চেয়ে বেশি হোয়াইট হাউস সফর করেছেন।
নেতানিয়াহুর কার্যালয় আরও জানায়, ‘দুই নেতা হামাসকে নিরস্ত্র করা ও গাজা উপত্যকা সামরিকীকরণ বন্ধের গুরুত্ব ও বাধ্যবাধকতার ওপর জোর দেন এবং শান্তি চুক্তি সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করেন।’
গাজায় হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি এবং গত বছর লেবাননের হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও ইসরাইল বলেছে, প্রতিবেশী দেশে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে হামলা চালানোর অধিকার তাদের আছে।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানায়, বেইত জিন অভিযানের লক্ষ্য ছিল জামা ইসলামিয়া নামের একটি ইসলামপন্থী গোষ্ঠী। এ গোষ্ঠী লেবাননভিত্তিক এবং হামাসের মিত্র।
এদিকে গোলান মালভূমিতে ১৯৭৪ সাল থেকে ইসরাইল-সিরিয়া বাহিনীর মধ্যে থাকা বাফার জোনে ইসরাইলি সেনাদের পরিদর্শনে গিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন নেতানিয়াহু। দামেস্কসহ প্রতিবেশী দেশগুলো এ ঘটনাকে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
সূত্র :ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ শাহজালাল, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন,যুগ্ম-সম্পাদক :মো. কামাল উদ্দিন,
নির্বাহী সম্পাদক : রাবেয়া সিরাজী
বার্তা ও বাণিজ্য বিভাগ : মোতালেব ম্যানশন, ২ আর কে মিশন রোড, মতিঝিল, ঢাকা-১২০৩।
মোবাইল : 01796-777753,01711-057321
ই-মেইল : bhorerawajbd@gmail.com