আমরা প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখি। স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি। এ স্বপ্ন বাস্তবতার রূপ ধারণ করে সফলতার দিকে এগিয়ে যাওয়াই আমাদের লক্ষ্য। কিন্তু এ সফলতা রাতারাতি সফল হওয়া অসম্ভব-এর জন্য সাহস, ধৈর্য, কষ্ট, ব্যর্থতা জড়িত। তাই এ স্বপ্নকে মাথায় রেখে নিজেকে আগে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। এরপর ভেবে দেখতে হবে এ স্বপ্ন কতটুকু সফল হয়েছে। তাই এ স্বপ্নের বীজ যদি হন একজন গুণগত এবং মানসম্পন্ন শিক্ষক যার ভূমিকা হবে অপরিসীম অনুপ্রেরণা আর উদ্দীপনা তাহলে হয়ত জীবনের অনেক কঠিন ও জটিল কাজ সঠিকভাবে সফল হওয়া সম্ভব। আমরা ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে ভিন্ন ভিন্ন স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি। আমরা যে যাই স্বপ্ন দেখি না কেন, একটা নির্দিষ্ট সময়ে, নির্দিষ্ট পর্যায়ে এসে আমরা স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি। শিক্ষার্থীদের এ স্বপ্নপূরণে শুধু একজন শিক্ষকের দ্বারাই সম্ভব। শিক্ষকই তার স্বপ্নপূরণের সঠিক গন্তব্যে পৌঁছে দিতে পারবে। কারণ শিক্ষকই কেবল জানেন একজন শিক্ষার্থীকে কীভাবে গাইড লাইন দিয়ে তৈরি করতে হবে এবং কোন পথে অগ্রসর হতে হবে। বেশির ভাগ শিক্ষার্থী কিন্তু বলতে পারবে না তার স্বপ্নের কথা। শিক্ষার্থীকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয় তার স্বপ্নের কথা। সে হয়ত তার বাবা-মার কাছ থেকে কিংবা বন্ধু- বান্ধবদের কাছ থেকে যা জেনেছে, যা শুনেছে তাই বলবে। সেটা ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হতে পারে। স্বপ্নের
এ আকাক্সক্ষা হয়তো বাবা-মার সৃষ্টি করে দেওয়া, তার পরিবার থেকে পাওয়া কিন্তু বাস্তবায়নের পথ খুব জটিল। আর এ জটিল কাজকে বাস্তবায়নের অগ্রগামীর পথ একজন শিক্ষক। ধীরে ধীরে একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক তার জীবন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অনুপ্রেরণা জুগিয়ে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার যে সাহস তা একজন শিক্ষক জুগাবে। শিক্ষকের এ আলোয় আলোকিত স্বপ্ন শিক্ষার্থীর গন্তব্যে পৌঁছে দিতে পারে, সমাজ কিংবা দেশ আলোকিত করতে পারে। একজন শিক্ষার্থীর প্রতি শিক্ষকের যে মেধা, যে শ্রম, যে কৌতুহল, যে দৃঢ়তা, যে দায়িত্ব নিয়ে গড়ে তুলেন এবং সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলেন তা মূল্য দিয়ে কেনাবেচা করা যায় না। অথচ এ শিক্ষার্থী এক সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে স্কলারশিপ নিয়ে দেশে-বিদেশে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে। এর পেছনে কঠোর পরিশ্রম, অধ্যবসায় না থাকলে সম্ভব হতো না। বর্তমান শিক্ষার ব্যবস্থা আরো উন্নত হয়েছে, আরো হবে। আরো ইন্টারেকটিভ হোয়াইটবোর্ড, ভার্চ্যুয়াল ল্যাব, অনলাইন ক্লাসে পাঠদান করার সুযোগ বা সুবিধা হচ্ছে। একটা কথা না বললেই নয় একজন শিক্ষক কী তার মেধা বা জ্ঞান বিলিয়ে দিয়েই ক্ষান্ত হবেন নাকি আমাদের ও শিক্ষকের প্রতি কিছু করার থাকে। আমাদেরও শিক্ষকদের প্রতি সুদৃষ্টি দিতে হবে। আমাদেরও এ মানুষ গড়ার কারিগর, এ সমাজ, এ দেশ গড়ার কারিগরের প্রতি এগিয়ে আসতে হবে। তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে, তাদের নিঃস্বার্থতা বা পরোপকারিতা সমস্তটাই ছাত্রদের প্রতি উৎসর্গ করে দেওয়া। তাদের জ্ঞানের এ উৎসর্গটাই হলো একটা মহৎ গুণ। আর এ গুণ নিজের স্বার্থের জন্য বিলিয়ে দেওয়া কিংবা নিজের কোনকিছু প্রত্যাশার জন্যনয়। শিক্ষকের প্রতি ভালোবাসা রেখেই আমাদের সুদৃষ্টি দিতে হবে। শিক্ষকরা যে দাবির কথা বলে আসছে তা কিন্তু একজন শিক্ষকের খুব একটা বেশি দাবি নয়। শিক্ষকের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা এবং যথাযথ মর্যাদার উপর
ভিত্তি করে তা বাস্তবায়ন করা যায়। শিক্ষকদের এ পেশাকে আরো মর্যাদা দিতে কিংবা আরো শক্তিশালী করতে যদি একজন শিক্ষক তার আর্থিক ও মর্যাদার দাবি করেন তাহলে তা ভুল হবে না। এটা ভেবে দেখা যেতে পারে। কিন্তু তাদের এ অনুষ্ঠান বা আয়োজন দীর্ঘদিন ধরে চলা সত্ত্বেও তা পূরণ হচ্ছে না। তাদের এ অসামান্য অবদানের চাহিদা অপূর্ণ থেকেই যাচ্ছে। এতে একজন শিক্ষকের মান যেমনি ব্যাহত হচ্ছে তেমনি তার পেশাকে অবহেলিত করা হচ্ছে। একজন শিক্ষক তার যথাযথ মর্যাদা না পেলে, তিনি আর দেশ গড়া কিংবা শিক্ষার্থীকে শিক্ষার স্বপ্ন দেখাতে পারবেন না। জ্ঞানের আলোও সামাজে ফুটিয়ে তুলতে পারবেন না। তখন জগৎ হয়ে ওঠবে অন্ধকারাচ্ছন্ন। ধীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকরা বিভিন্ন সংগঠন, আলোচনা সভা বা র্যালি করে আসছেন যথাযথ
মর্যাদা পালনের উদ্দেশ্যে। কিন্তু আমরা এর কতটুকু মূল্যায়ন করতে পেরেছি। শিক্ষকদেরও আরো পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের সুযোগ করে দিতে হবে। তাদের অপূর্ণ দাবি পূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষকদের আরো ভালো দিকনির্দেশনা দিতে হবে। তাহলে একজন শিক্ষক আরো মানোন্নয়নের ভূমিকা রাখতে পারবেন, শিক্ষার মান আরো উন্নত করতে পারবেন এবং সমাজ বা জাতি গঠনে আরো শক্তিশালী করতে পারবেন। স্বপ্নপূরণের ভিত আরো মজবুত করতে পারবেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ শাহজালাল, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন,যুগ্ম-সম্পাদক :মো. কামাল উদ্দিন,
নির্বাহী সম্পাদক : রাবেয়া সিরাজী
বার্তা ও বাণিজ্য বিভাগ : মোতালেব ম্যানশন, ২ আর কে মিশন রোড, মতিঝিল, ঢাকা-১২০৩।
মোবাইল : 01796-777753,01711-057321
ই-মেইল : bhorerawajbd@gmail.com