1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫, ০৫:২২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
কালিহাতীতে যুবদল নেতাকে পিটিয়ে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা লুট গোবিন্দগঞ্জে ট্রাক চাপায় এক বাইসাইকেল আরোহী নিহ’ত নির্বাচন যদি চান শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করুন …. উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ ‎প্রিপেইড মিটারের সংযোগ বন্ধের দাবিতে গাইবান্ধায় মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান ‎নবীনগরে  তারেক পরিষদ গঠন হুমায়ুন সভাপতি, কামাল সম্পাদক জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী! সময়ের সাহসী লেখার প্রত্যয়: আবুল কালাম আজাদ! “চন্দনাইশ থানায় পুলিশের সফল অভিযান: এলজি ওয়ান শুটারসহ অস্ত্রধারী গ্রেফতার সাংবাদিকতার সম্মান বাঁচাতে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের উদ্যোগ : নোংরা চর্চার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা- নেশার টাকা না পেয়ে শশুর বাড়িতে আগুন, লাপাত্তা জামাই

সত্যের কণ্ঠ অটুট রাখতে সাংবাদিক সুরক্ষা অপরিহার্য

মোঃ কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫

যেখানে সাংবাদিকদের সুরক্ষা ও মুক্ত গণমাধ্যমের অপরিহার্যতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা থাকবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে সংবাদপত্রের ভূমিকা অমোঘ। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন প্রতিটি গেরিলা অভিযানের সংবাদ, প্রতিটি হত্যাযজ্ঞের নথি, প্রতিটি নির্যাতনের প্রতিবেদনই জাতির চেতনা গঠনের হাতিয়ার হয়েছিল। আর সেই থেকেই একটি সত্য চিরন্তন হয়ে গেছে—গণমাধ্যম শুধু তথ্যের বাহক নয়, বরং সমাজ ও রাষ্ট্রের আত্মার প্রতিফলন।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আজও সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা হুমকির মুখে। সত্য বলার অপরাধে সাংবাদিককে হতে হচ্ছে অপপ্রচারের শিকার, হুমকি-ধমকি, এমনকি কখনো জীবনবিয়োগের শিকার। সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রামের তিন সাংবাদিককে কেন্দ্র করে যে ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচার শুরু হয়েছে, তা কেবল ব্যক্তিগত আক্রমণ নয়, বরং গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে স্তব্ধ করার এক সুপরিকল্পিত প্রচেষ্টা। দৈনিক চট্টগ্রাম প্রতিদিনের সম্পাদক হোসাইন তৌফিক ইফতিখার, দৈনিক আজকের পত্রিকার ডেপুটি ব্যুরো চিফ ওমর ফারুক এবং ঢাকা পোস্টের সাংবাদিক মিজানুর রহমান—তাদের অপরাধ একটাই: সত্যকে তুলে ধরা। সার্টিফিকেট প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত এক ব্যক্তির সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্কের তথ্য প্রকাশ করতেই শুরু হয় এক সংঘবদ্ধ মহলের কুরুচিপূর্ণ আক্রমণ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে হাতিয়ার করে তাদের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য ছড়ানো হয়।
এই প্রপাগান্ডা কেবল তিনজন সাংবাদিককে লক্ষ্য করে নয়, এটি আসলে একটি সতর্কবার্তা—“সত্য লিখলেই তোমাদের এমন পরিণতি হবে।” এটি ভয়ের সংস্কৃতি গড়ে তোলার এক নোংরা কৌশল। চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে) এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তাদের ভাষায়—“সংবাদ প্রকাশের জবাব সংবাদ মাধ্যমেই দিতে হয়। কিন্তু ভয়ভীতি প্রদর্শন, কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও মিথ্যা তথ্য প্রচারের মাধ্যমে সাংবাদিকদের নীরব করানো হচ্ছে। এটি কেবল ব্যক্তিগত আক্রমণ নয়, মুক্ত গণমাধ্যমের অস্তিত্বের ওপর সরাসরি হুমকি।” সংগঠনের সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক সবুর শুভ পরিষ্কার ভাষায় ঘোষণা দিয়েছেন—“সাংবাদিক সমাজ শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী। কিন্তু যদি এই ঘৃণ্য অপপ্রচার বন্ধ না হয়, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।” এটি নিছক বিবৃতি নয়, এটি বাংলাদেশের সাংবাদিক সমাজের হৃদয়ের রক্তক্ষরণের প্রতিধ্বনি। সাতকানিয়া-লোহাগাড়া সাংবাদিক ফোরামও একই সুরে প্রতিবাদ জানিয়েছে। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে—“একটি সংঘবদ্ধ চক্র জামায়াতে ইসলামের নাম ভাঙিয়ে সাংবাদিকদের চরিত্রহননের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। এটি শুধু ব্যক্তিগত আক্রমণ নয়, বরং মুক্ত সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় সরাসরি হস্তক্ষেপ।” তারা আরও স্পষ্ট করেছে—“আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিচ্ছি, এই অপপ্রচার অবিলম্বে বন্ধ না হলে এবং দায়ীদের আইনের আওতায় না আনা হলে সাংবাদিক সমাজ রাস্তায় নামতে বাধ্য হবে। তখন এর দায় কেউ এড়াতে পারবে না।” এ হুঁশিয়ারি আসলে একটি জরুরি সতর্কবার্তা—সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে জাতীয় পরিসরে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে বাধ্য। সাংবাদিক শুধু খবর লেখেন না। তিনি জাতির বিবেক, তিনি সমাজের আয়না। দুর্নীতি, অনিয়ম, বৈষম্য ও অবিচারের চিত্র সাংবাদিকের কলমেই উন্মোচিত হয়। সেই আয়না ভেঙে ফেলা মানে জাতির চোখ অন্ধ করে দেওয়া। আজ যখন সাংবাদিকরা হুমকি পান, তখন জনগণের কণ্ঠস্বরই স্তব্ধ হয়ে যায়। কেননা সাংবাদিকের কলম রুদ্ধ হলে দুর্নীতি, অপরাধ আর অন্ধকার অবাধে বিস্তার লাভ করে। জাতিসংঘের ঘোষণায় সাংবাদিক নিরাপত্তা মানবাধিকারের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিশ্বব্যাপী সাংবাদিকদের ওপর হামলা গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে বিবেচিত হয়। বাংলাদেশও সেই অঙ্গীকার করেছে। কিন্তু বাস্তবে সাংবাদিকরা আজও সুরক্ষাহীন। একুশ শতকের বাংলাদেশে যদি সাংবাদিক কেবল সত্য লেখার দায়ে অপপ্রচার ও হুমকির শিকার হন, তবে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক কাঠামো প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যায়। সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব। সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে মতপ্রকাশ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তাই সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণ আসলে সংবিধানের ওপরই আক্রমণ। এখন প্রয়োজন:সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে জড়িতদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনা।সাংবাদিক নিরাপত্তায় বিশেষ আইনগত সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ।প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সাংবাদিক সুরক্ষায় কঠোর ভূমিকা পালন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা।পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাংবাদিক সংগঠন ও রাষ্ট্রের মধ্যে সমন্বিত পদক্ষেপ। আজকের বাংলাদেশে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা কেবল একটি পেশাজীবী গোষ্ঠীর দাবি নয়, বরং এটি জাতীয় স্বার্থের দাবি। সাংবাদিকদের কলম রুখে দেওয়া মানে গণতন্ত্রের প্রাণরস শুকিয়ে ফেলা। আমরা ভুলে গেলে চলবে না— সাংবাদিক সুরক্ষা মানে জনগণের কণ্ঠস্বরকে সুরক্ষা দেওয়া। সাংবাদিক সুরক্ষা মানে দুর্নীতি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে জাতিকে শক্তিশালী করা। সাংবাদিক সুরক্ষা মানে গণতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখা। তাই আমাদের আজই উচ্চারণ করতে হবে—
“সত্যের কণ্ঠরোধ নয়, সাংবাদিকের সুরক্ষাই হোক জাতির অঙ্গীকার।”

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট