অপরাধ কথাঃ--১
"কালুরঘাটে চাঁদাবাজি ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় মামলা: উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলম ববিকে আসামি করায় ব্যাপক ক্ষোভ"
চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানার মোহরা এলাকায় ড্রেজার ব্যবসাকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসী হামলা ও চাঁদাবাজির ঘটনায় একটি গুরুতর মামলা দায়ের হয়েছে। এ মামলায় গৃহিণী মোসাম্মৎ সালমা বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২/৩ জনকে আসামি করে অভিযোগ দাখিল করেছেন।
ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, বাদীর স্বামী মোঃ ইউনুছ খাঁন (৪৫), কালুরঘাট ব্রিজ এলাকায় ড্রেজারযোগে বালু উত্তোলনের বৈধ ব্যবসা করতেন। দীর্ঘদিন ধরে ২নং থেকে ৬নং বিবাদীগণ — যথাক্রমে মোহাম্মদ আলম, মোঃ কামাল, মোঃ হাসান, তানভীর ও এরশাদ — তার ব্যবসায় আধিপত্য বিস্তার ও শত্রুতা সৃষ্টি করে আসছিলেন। তারা নিয়মিত হুমকি প্রদান করতেন এবং এক পর্যায়ে ৫০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন। গত ২০ জুলাই ২০২৫ ও ২৫ জুলাই ২০২৫ তারিখে অভিযুক্ত প্রধান আসামি মোঃ সাজ্জাদ ওরফে বড় সাজ্জাদ বিভিন্ন বিদেশি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে ইউনুছ খাঁনের কাছে চাঁদা দাবি করে এবং তা না দিলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
সবশেষে, গত ১ আগস্ট ২০২৫ তারিখ রাত ১০:৪৫ মিনিটে মোহরা কামাল বাজার থেকে কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে ইউনুছ খাঁনকে উত্তর মোহরা এলাকায় সিএনজি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে দুটি মোটরসাইকেলযোগে আসা ৭ থেকে ৯নং বিবাদী ও তাদের সঙ্গে থাকা আরও কয়েকজন অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী অতর্কিতে হামলা চালায়। তারা ‘সাজ্জাদ ভাইয়ের কথা মানিস নাই, এখন কবরে যা’ বলে গুলি চালায়। বেপরোয়া গুলিতে ইউনুছ খাঁনের শরীরে একাধিক স্থানে গুলি লাগে— মাথা, কোমর, হাঁটু ও পায়ের তালুতে মারাত্মক জখম হয়। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সামাদ ভর্তি করেন। বর্তমানে তিনি সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মোহাম্মদ আলম ববিকে আসামি করায় জনমনে ক্ষোভ উক্ত মামলায় ২নং আসামি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বোয়ালখালী ও কালুরঘাট এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলম ববিকে। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ বৈধভাবে বালু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এবং এলাকায় একজন সজ্জন, দানশীল এবং নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে এই মামলার অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে স্থানীয় জনতা। ববির বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তা মামলার মূল ঘটনার প্রকৃত সূত্র, সময় ও স্বীকারোক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, যেখানে ঘটনার দিন ববির অবস্থান বা সম্পৃক্ততার কোনো প্রমাণ নেই, সেখানে তাকে কাদের ইন্ধনে মামলায় জড়ানো হলো?
এ বিষয়ে এলাকার প্রবীণ ব্যবসায়ী হাজী আবদুল মালেক বলেন, "ববি সাহেবের বিরুদ্ধে মামলাটি শুনে আমি হতবাক। তিনি একজন সৎ ব্যবসায়ী। যে সন্ত্রাসীরা সরাসরি গুলি করেছে, তারা ধরা পড়লেও তাদের স্বীকারোক্তির আলোকে ববিকে মামলায় জড়ানো হয়নি— এটা স্পষ্ট হয় যে এখানে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে।" এরশাদকে ঘিরেও রয়েছে প্রশ্ন ববির শ্যালক মোঃ এরশাদকেও মামলায় আসামি করা হয়েছে, যিনি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে সংশ্লিষ্ট নন বলেই স্থানীয়দের দাবি। তার বিরুদ্ধে কোনো অতীত রেকর্ড নেই, বরং তিনি একজন নিরীহ যুবক হিসেবে পরিচিত। তাকে মামলায় যুক্ত করার উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে এলাকাবাসী। পুলিশের দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশিত
এই ঘটনায় যারা প্রকৃতভাবে দায়ী এবং যাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য ও প্রযুক্তিগত প্রমাণ রয়েছে, তাদের আইনের আওতায় আনাই এখন সময়ের দাবি। পাশাপাশি, যাদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মামলা করা হয়েছে— বিশেষ করে মোহাম্মদ আলম ববি ও এরশাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করা প্রয়োজন। অন্যথায়, সাধারণ মানুষ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিরপেক্ষতা নিয়েই প্রশ্ন তুলতে শুরু করবে বলে মনে করছেন। এই দিকে চান্দ গাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ আফতার উদ্দিন এর নেতৃত্ব চান্দগাঁও থানা পুলিশের অভিযানে গুলিবর্ষণের ঘটনায় জড়িত নুরুল হককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ -- থানার প্রেরিত সংবাদে জানাযায়-চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানা পুলিশের তৎপর অভিযানে বালু ব্যবসাকে কেন্দ্র করে সংঘটিত গুলিবর্ষণের ঘটনায় জড়িত এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া আসামির নাম মোঃ নুরুল হক (২৭), যিনি বর্তমানে মোহরা এলাকার বাসিন্দা। গত ১ আগস্ট ২০২৫ তারিখ রাত আনুমানিক ১০টা ৪৫ মিনিটে মোহরা কামাল বাজার এলাকা থেকে ব্যবসায়িক কাজ শেষ করে সিএনজি অটোরিকশাযোগে বাড়ি ফেরার পথে উত্তর মোহরার আকবর আলী সুকানীর বাড়ীর সামনে ভিকটিম মোঃ ইউনুছ খাঁন (৪৫) সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন।স্থানীয় সূত্র ও পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, বালু উত্তোলন সংক্রান্ত পুরাতন বিরোধের জেরে মোঃ নুরুল হক ও তার সহযোগীরা দুইটি মোটরসাইকেলযোগে এসে তাকে উদ্দেশ্য করে পিস্তল দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। গুলিতে ইউনুছ খাঁনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম হয়। পরে আশপাশের লোকজনের সহায়তায় তাকে তাৎক্ষণিকভাবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন আছেন। ঘটনার পর ভিকটিমের পরিবার থেকে স্ত্রী খোদেজা বেগম বাদী হয়ে চান্দগাঁও থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি চান্দগাঁও থানায় মামলা নং-০৪, তারিখ-৩ আগস্ট ২০২৫; ধারা-৩৮৫/৩২৬/৩০৭/১০৯/৩৪ পেনাল কোড অনুযায়ী রুজু করা হয়।
মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ তৎপরতা শুরু করে। অফিসার ইনচার্জ (ওসি) চান্দগাঁও থানার নেতৃত্বে এসআই (নিঃ) আজিজুল হক সঙ্গীয় ফোর্সসহ ২ আগস্ট রাত ১০টা ২০ মিনিটে মোহরা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অভিযুক্ত মোঃ নুরুল হককে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃত আসামির পরিচয়ঃ নাম: মোঃ নুরুল হক (২৭) পিতা: মৃত মোঃ শফি উল্লাহ,মাতা: খুরশিদা বেগম স্থায়ী ঠিকানা: মধ্যম নুনিয়ারছড়া, শফি রহমানের বাড়ি, কক্সবাজার পৌরসভা, থানা-কক্সবাজার সদর, জেলা-কক্সবাজার বর্তমান ঠিকানা: মোহরা, ৮নং পুলের গোড়া, রেলবিট, এ.এল. খান স্কুলের পাশে, থানা-চান্দগাঁও, জেলা-চট্টগ্রাম
ভিকটিমের পরিচয়ঃ
নাম: মোঃ ইউনুছ খাঁন (৪৫)
পিতা: মৃত হাফেজ মোঃ বেলাল
মাতা: মোসাম্মৎ সালমা খাতুন
ঠিকানা: উত্তর মোহরা, আকবর আলী সুকানীর বাড়ি, হাবিবুল্লাহ চৌধুরী রোড, থানা-চান্দগাঁও, জেলা-চট্টগ্রাম চান্দগাঁও থানার ওসি জানান, মামলার অন্যান্য আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং অচিরেই সব জড়িত ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনা হবে। এলাকাবাসী পুলিশ প্রশাসনের এ তৎপরতায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং দোষীদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। গতরাতে চান্দগাঁও থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ও নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের মতে, প্রকৃত সন্ত্রাসীদের আড়াল করে একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীকে হয়রানির উদ্দেশ্যে মামলাটি পরিচালিত হচ্ছে। চাঞ্চল্যকর এই মামলায় বিশিষ্ট বালু ব্যবসায়ী, কালুরঘাট সেতুর ইজারাদার ও মাওয়া গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ আলম ববিকে
উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আসামি করার অপচেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অথচ, এই মামলার ঘটনায় জড়িত প্রকৃত আসামি নুরুল হককে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা যায়, গতরাতে মামলার আসল আসামি গ্রেফতার হওয়ার পরও মামলার বাদী একজন নারী ববিকে আসামি করার জন্য পুলিশকে একাধিকবার চাপ দিতে থাকেন। পুলিশ যখন বাস্তবতা ও প্রমাণের আলোকে মোহাম্মদ আলম ববিকে আসামি না করার সিদ্ধান্ত নেয়, তখন বাদী সরাসরি পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও আইনি পদক্ষেপের হুমকি দেন। একপর্যায়ে পুলিশ চাপে পড়ে ববিকে মামলায় আসামি করতে বাধ্য হয় বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন ওসি আফতাব উদ্দিন। উল্লেখ্য, মোহাম্মদ আলম ববি একজন সৎ, নির্ভরযোগ্য ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তাঁর বিরুদ্ধে এই মামলা দায়েরের খবরে এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দাবি জানিয়েছেন, নিরপেক্ষ তদন্ত ছাড়া যেন কাউকে হয়রানিমূলকভাবে মামলায় জড়ানো না হয়। এখানে উল্লেখযোগ্য যে, গত ৭ মাস আগে মোহাম্মদ আলম ববির বালুর সাইটে একদল সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে সাইটটি জ্বালিয়ে দিয়েছিল। ওই ঘটনা ঘটেছিল বাকলিয়া থানার অধীন এলাকায়। কিন্তু তখন যেসব চিহ্নিত অপরাধী ববির ক্ষতি করেছিল, আজকের মামলায় তাদের সাথেই ববিকে একই আসামির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। স্থানীয়রা মনে করছেন, এটি একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র, যার মাধ্যমে ববিকে ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এবং সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চলছে। তারা প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তির জোর দাবি জানিয়েছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ শাহজালাল, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন,যুগ্ম-সম্পাদক :মো. কামাল উদ্দিন,
নির্বাহী সম্পাদক : রাবেয়া সিরাজী
বার্তা ও বাণিজ্য বিভাগ : মোতালেব ম্যানশন, ২ আর কে মিশন রোড, মতিঝিল, ঢাকা-১২০৩।
মোবাইল : 01796-777753,01711-057321
ই-মেইল : bhorerawajbd@gmail.com