ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে এক নারী বসে আছেন, তাঁকে ঘিরে রয়েছে অসংখ্য
কুকুর। কেউ তাঁর কোলে পা রেখে ভালোবাসা জানাচ্ছে, কেউ স্নেহের দৃষ্টিতে তাঁর দিকে তাকিয়ে আছে, কেউ বা তাঁর পাশে চুপচাপ দাঁড়িয়ে যেন বলছে—”আমরা তোমার।” এমন একটি দৃশ্য যেন মৌন ভাষায় বলে দিচ্ছে: “মানুষ অবিশ্বাস করতে পারে, কিন্তু কুকুর নয়।”
এই ছবি একটি নিঃশব্দ চিৎকার, যা তাদের উদ্দেশ্যে—যারা কুকুরকে ঘৃণা করে, যারা মনে করে কুকুরের কোনও মূল্য নেই। অথচ এই প্রাণীগুলো মানুষের থেকে অনেক বেশি অনুগত, অনেক বেশি কৃতজ্ঞ। আপনি তাকে একমুঠো খাবার দিলেই সে সারাজীবন আপনার প্রতি অনুরক্ত থাকে। আপনি তাকে একবার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলে সে প্রতিদিন আপনার অপেক্ষায় থাকে।
এই নারী সম্ভবত তাদের খাওয়ান, আদর করেন, তাদের জন্য সময় দেন। বিনিময়ে পেয়েছেন অকৃত্রিম ভালোবাসা। এই ভালোবাসা কোনো শর্তে বাঁধা নয়, কোনো স্বার্থে ডুবানো নয়—এটা নিঃস্বার্থ, পবিত্র ভালোবাসা।
আজকাল আমরা মানুষের মধ্যেও খুঁজে পাই না এই সরলতা, এই একনিষ্ঠতা। যেখানে স্বার্থ, প্রতারণা আর ক্ষমতার খেলায় মানুষ মানুষকে হিংসা করে, বিশ্বাস ভাঙে, সেখানে এই অবলা প্রাণীগুলো নিঃস্বার্থ সঙ্গ দেয়। এই কুকুরগুলো কাউকে ঠকায় না, কাউকে ছেড়ে চলে যায় না। যারা কুকুর ভালোবাসে, তারা বিশ্বাসঘাতক হতে পারে না।
আমাদের সমাজে এখনো অনেকে কুকুরকে অবজ্ঞা করে, কেউ কেউ রাস্তায় মারধরও করে। অথচ একটা কুকুরেরও জীবন আছে, অনুভব আছে। যারা কুকুরকে ভালোবাসে, তাদের উচিৎ এই মানবিকতা অন্যদের মধ্যেও ছড়িয়ে দেওয়া। এই নারীর মতো হতে হবে আমাদের—যিনি কুকুরকে সন্তানস্নেহে আগলে রাখেন, ভালোবাসেন, এবং ভালোবাসা পান।
প্রত্যেকটি কুকুরই একেকটি গল্প—ত্যাগের, নির্ভরতার, ভালোবাসার। আসুন, আমরা তাদের গল্প শুনি, তাদের স্থান দিই আমাদের হৃদয়ে, আমাদের সমাজে।
কুকুর কখনও বেইমান নয়। মানুষ হতে গেলে, প্রথমে কুকুরের মতো কৃতজ্ঞ আর বিশ্বাসযোগ্য হতে শেখা উচিত।
যারা কুকুরকে ভালোবাসে, তারা হৃদয়ের মানুষ। তাদের দেখে শিখুন—কারণ মানবিকতা ও সভ্যতার সূচক শুধু কথায় নয়, আচরণেও প্রমাণ হয়।