সম্প্রতি আমি গভীর বিস্ময় ও বেদনার সঙ্গে লক্ষ্য করেছি—আমার নাম এবং পরিচিতিকে কেন্দ্র করে একটি কুরুচিপূর্ণ, বিভ্রান্তিকর ও অপমানজনক লেখা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, বিশেষত হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বিভিন্ন মহলে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই লেখাটি একাধিক ব্যক্তির মাধ্যমে প্রচারিত হয়, যার বক্তব্য ও ভাষা আমার ব্যক্তিত্ব, নৈতিকতা ও সাংবাদিকতার মূল্যবোধের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। এতে শুধু আমার ভাবমূর্তিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, বরং আমাদের পেশাগত সৌহার্দ্য ও পারস্পরিক সম্মানের পরিবেশও বিঘ্নিত হয়েছে।
প্রকাশিত এই মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত লেখার বিষয়ে আমি যখন অনুসন্ধান শুরু করি, তখন সাংবাদিক সিরাজুল ইসলাম সরাসরি আমার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেন। তিনি বিনয়ের সঙ্গে জানান—এই ধরনের কোনো লেখা তিনি লেখেননি এবং এর সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন হ্যাক করে বা অননুমোদিতভাবে ব্যবহার করে, কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার বিরুদ্ধে এই লেখা তৈরি করে তা ছড়িয়ে দিয়েছে। তিনি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং স্পষ্টভাবে জানান—আমাদের মধ্যে কোনো ব্যক্তিগত বিরোধ, বিদ্বেষ বা মতানৈক্য নেই।
এই ঘটনার পর আমি বিষয়টি আরও গভীরভাবে পর্যালোচনা করি এবং চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের মাননীয় চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন, সাংবাদিক ও আইনজীবী এডভোকেট সেলিম চৌধুরীসহ সমাজের বহু গণ্যমান্য ব্যক্তির পরামর্শ গ্রহণ করি। সকলেই অত্যন্ত আন্তরিকভাবে মত দেন যে, আমাদের মধ্যে যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে, তা যেন কোনো মিথ্যা বা কুচক্রী অপচেষ্টার কারণে ক্ষুণ্ন না হয়।
আমি বিবেকের দায়বদ্ধতা ও বৃহত্তর সাংবাদিক সমাজের সৌহার্দ্য বজায় রাখার প্রয়োজনে ঘোষণা করছি—সিরাজুল ইসলাম সম্পর্কে আমার নাম থেকে প্রকাশিত বা প্রচারিত সব ধরনের বক্তব্য, সংবাদ বা পোস্ট আমি সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। পাশাপাশি, যেসব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা মেসেজিং প্ল্যাটফর্মে এসব পোস্ট ছড়ানো হয়েছিল, তা মুছে ফেলা হয়েছে।
সিরাজুল ইসলাম আমার সহকর্মী, এবং তাকে আমি সবসময় ছোট ভাইয়ের মতো স্নেহ করেছি। পেশাগত মতবিরোধ হতেই পারে, কিন্তু তা ব্যক্তিগত সম্পর্কের দেয়াল হয়ে দাঁড়াতে পারে না। বরং এই ধরনের বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতিই আমাদের আরও সংবেদনশীল ও দায়িত্বশীল করে তুলবে—এই বিশ্বাস থেকেই আমি তাকে ক্ষমা করে দিলাম, এবং আমাদের সৌহার্দ্য আগের মতোই অটুট থাকবে।
তবে, আমরা বিশ্বাস করি এই ঘটনাটি নিছক একটি ভুল বোঝাবুঝি নয়, বরং এটি একটি বৃহৎ ষড়যন্ত্রের অংশ। সম্প্রতি আমাদের পারিবারিক ঐতিহ্যবাহী কবরস্থান—চরণদ্বীপের তিনশত বছরের পুরোনো গোরস্থান, যা নজর মোহাম্মদ গোষ্ঠীর স্মৃতিবাহী ভূমি—তা রক্ষার দাবিতে আমরা সোচ্চার হয়ে উঠি। সেই পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আমরা সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করি। কিন্তু সেই সম্মেলনকে বানচাল করার দুরভিসন্ধি থেকেই আমার বিরুদ্ধে এই অপপ্রচার চালানো হয়েছে। সিরাজুল ইসলামকে একপ্রকার ‘বলির পাঠা’ বানিয়ে, তার মোবাইল ব্যবহার করে আমাকে লক্ষ্য করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এসব লেখা ছড়ানো হয়—এটি অত্যন্ত দুঃখজনক, নিন্দনীয় ও ষড়যন্ত্রমূলক।
আমরা এই ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে থাকা কুচক্রী মহলকে চিহ্নিত করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাব এবং প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থাও গ্রহণ করব।
শেষ কথা, সাংবাদিকতা কেবল একটি পেশা নয়—এটি ন্যায়, বিবেক ও আদর্শের পথ। যারা এই মহান পেশার সঙ্গে যুক্ত, তাদের আচরণে শালীনতা ও হৃদয়ে সত্যনিষ্ঠা থাকা অপরিহার্য। এই চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়েই আমি আজকের এই বিবৃতি প্রদান করছি—যাতে সাংবাদিক সমাজ, বিশেষ করে নবীনরা একটি শক্তিশালী বার্তা পায়: সত্য, সৌহার্দ্য ও ঐক্যই আমাদের পথ।