আমিন আমিন’ ধ্বনিতে অশ্রুসজল বিদায়, শেষ হলো দাওয়াতে ইসলামীর তিনদিনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় ইজতেমা
লাখো আশেকানে রাসূলের অংশগ্রহণ, নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন হলো বিশাল ধর্মীয় আয়োজন
চট্টগ্রাম নগরের উপকণ্ঠে লাখো মুসল্লির কান্নাভেজা চোখ আর হৃদয়বিদারক ‘আমিন আমিন’ ধ্বনিতে শেষ হলো দাওয়াতে ইসলামীর তিনদিনব্যাপী চট্টগ্রাম বিভাগীয় ইজতেমা। শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে অনুষ্ঠিত হয় আখেরি মোনাজাত, যার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পর্দা নামে এ বৃহৎ ধর্মীয় সমাবেশের।
ইজতেমার শেষ দিন সকাল থেকেই মুসল্লিদের ঢল নামে। সকাল থেকে জুমার নামাজ পর্যন্ত ইজতেমা মাঠে দাওয়াতে ইসলামীর বরেণ্য মুবাল্লিগগণ কোরআন-হাদিসের আলোকে ইসলামের মৌলিক বিষয়াবলি নিয়ে ধারাবাহিক বয়ান উপস্থাপন করেন। উপস্থিত মুসল্লিরা গভীর মনোযোগ ও আবেগে এসব বয়ান শুনে নিজেদের জীবনকে ইসলামী আদর্শে গড়ার অঙ্গীকার করেন।
আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন দাওয়াতে ইসলামীর বাংলাদেশ শাখার সভাপতি ও রুকনে শুরা জনাব আব্দুল মুবিন আত্তারি। তিনি মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি এবং বিশেষ করে ফিলিস্তিনসহ বিশ্বের নির্যাতিত মুসলমানদের মুক্তি কামনায় মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করেন।
জুমার নামাজে ইমামতি করেন খলিফায়ে আমিরে আহলে সুন্নাত আল্লামা ওবায়েদে রেজা মাদানী কাদেরী আত্তারি। ইজতেমায় বিশেষ বয়ান রাখেন দাওয়াতে ইসলামীর মিডিয়া বিভাগের জিম্মাদার মুফতি মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম মুজাদ্দেদী আত্তারি। এছাড়াও মাওলানা মুহাম্মদ সালাহ উদ্দিন আত্তারি, মাওলানা কাওসার আত্তারি সহ আরও অনেক মুবাল্লিগ গুরুত্বপূর্ণ বয়ান করেন।
তাঁদের বয়ানে উঠে আসে—নামাজের গুরুত্ব, ইসলামী শরীয়তের বিধান, মা-বাবার হক, জুলুম-অত্যাচারের পরিণতি, মৃত্যুর প্রস্তুতি, হাশরের ভয়াবহতা, কবরের অবস্থা এবং পরকালীন মুক্তির পথনির্দেশনা। হামদ ও নাতের মাধ্যমে সৃষ্টি হয় এক অপার্থিব পরিবেশ, যা শোনে মুসল্লিরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
ইজতেমায় অংশ নিতে শুধু চট্টগ্রাম বিভাগ থেকেই নয়, সারা দেশ থেকে ছুটে আসেন লাখো আশেকানে রাসূল। অনেকেই তিনদিন তিনরাত ইজতেমাস্থলে অবস্থান করেন। এত বিশাল জনসমাগম সত্ত্বেও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। মুসল্লিদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সহায়তা দিতে স্থাপন করা হয় মেডিকেল ক্যাম্প। নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিলেন দাওয়াতে ইসলামীর স্বেচ্ছাসেবী টিম ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
ইজতেমার সমাপ্তি ঘোষণার সময় জানানো হয়, আগামী ২৫, ২৬, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে আন্তর্জাতিক ইজতেমা।
আখেরি মোনাজাত শেষে ‘নেকির দাওয়াত’ পৌঁছে দিতে দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়েন সংগঠনের ১১২টি মাদানী কাফেলা। তারা ৩ দিন, ১২ দিন, ৩০ দিন এবং ৬৩ দিনের সফরে রওনা হন।
দাওয়াতে ইসলামীর মুবাল্লিগগণ বলেন, “আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভালোবাসাই প্রকৃত ঈমানের মূল ভিত্তি। ইসলামের জীবন বিধান অনুসরণ, সুন্নাতের রঙ্গে জীবন গড়া এবং মোত্তাকি হওয়া ছাড়া দুনিয়া ও আখিরাতে মুক্তি সম্ভব নয়।”
এই ইজতেমা ইসলামের শান্তিপূর্ণ বার্তা ছড়িয়ে দিতে এবং মুসলমানদের হৃদয়ে নবজাগরণ সৃষ্টি করতে যে ভূমিকা রেখেছে, তা চট্টগ্রামের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ শাহজালাল, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন,যুগ্ম-সম্পাদক :মো. কামাল উদ্দিন,
নির্বাহী সম্পাদক : রাবেয়া সিরাজী
বার্তা ও বাণিজ্য বিভাগ : মোতালেব ম্যানশন, ২ আর কে মিশন রোড, মতিঝিল, ঢাকা-১২০৩।
মোবাইল : 01796-777753,01711-057321
ই-মেইল : bhorerawajbd@gmail.com