"পটিয়ায় জুমার নামাজ শেষে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলা: বৃদ্ধসহ ৩ জন রক্তাক্ত, থানায় মামলা গ্রহণে গড়িমসি, ডিআইজি ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা"
চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার পূর্ব মালিয়ারা এলাকার ঐতিহ্যবাহী বায়তুল জান্না জামে মসজিদের ভেতরে জুমার নামাজ শেষে সংঘটিত হয় এক লোমহর্ষক সন্ত্রাসী হামলা। পূর্ব শত্রুতার জেরে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত একদল দুর্বৃত্তের হামলায় এক বৃদ্ধসহ তিনজন গুরুতর আহত হয়ে বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হামলার শিকার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) জুমার নামাজ শেষে হাজী ছৈয়দুল হক (৭৫) ও তার জামাতা আলী আজগর (৫০) মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় পূর্বপরিকল্পিতভাবে ৬ জন দাঙ্গাবাজ ও সন্ত্রাসী হঠাৎ তাদের ঘিরে ধরে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। হাত, পা, পিঠ ও মাথায় মারাত্মক জখম করে তারা। একপর্যায়ে হাজী ছৈয়দুল হককে মাথায় কোপ মারলে তিনি তা ঠেকাতে গিয়ে বাঁ হাতের কনুইয়ের নিচে রক্তাক্তভাবে কাটা জখম পান। একইভাবে আলী আজগরের হাঁটুর নিচে কোপ পড়ে রক্ত ঝরতে থাকে।
শুধু তাই নয়, চিৎকার শুনে এগিয়ে এলে হাজীর ভাবি মরিয়ম বেগম (৬০)কেও তারা নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করে। হামলার একপর্যায়ে ভুক্তভোগীদের পকেটে থাকা ৩৭,৩০০ টাকা লুট করে নেয় হামলাকারীরা।
হামলার পর স্থানীয়রা আহতদের রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান, পরে সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে আহতরা চিকিৎসাধীন।
হামলার বিষয়ে ভুক্তভোগী আবদুল্লাহ পটিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ তা গ্রহণে গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তার দাবি, হামলাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় থানা কর্তৃপক্ষ একধরনের নীরব অবস্থান নিয়েছে। মামলা রেকর্ড না করে সময়ক্ষেপণ ও নানা টালবাহানা করছে।
আবদুল্লাহ জানান, “আমার পিতাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হলো, মসজিদের ভেতরে রক্ত ঝরলো, অথচ থানায় এসে অভিযোগ দিতে গেলে দেখি তারা উদাসীন। আমরা থানায় ন্যায়বিচার না পেয়ে এখন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি ও চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপারের সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি। হামলাকারীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে, অথচ পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে না—এটা আমাদের জন্য গভীর উদ্বেগের।”
এ বিষয়ে স্থানীয় সচেতন মহল ও মসজিদের মুসল্লিদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। পবিত্র জুমার নামাজের সময় মসজিদের ভেতরে এমন ভয়াবহ হামলা ও রক্তপাতের ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
এদিকে ঘটনার বিচার চেয়ে এলাকাবাসী ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যরা বলেছেন, “এখানে কোনো সাধারণ মারামারি নয়, এটি ধর্মীয় স্থানে সংঘটিত পরিকল্পিত সন্ত্রাস। এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।”
পটিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ এ বিষয়ে মন্তব্য দিতে রাজি হননি। তবে থানার এক দায়িত্বশীল পুলিশ সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেলেই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।”
এখন দেখার বিষয়, এই ভয়াবহ হামলার ঘটনায় পুলিশ প্রশাসন কীভাবে সাড়া দেয় এবং কত দ্রুত আইনের আওতায় আনা হয় অভিযুক্তদের। এলাকাবাসী আশা করছে, ডিআইজি ও পুলিশ সুপার যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করবেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ শাহজালাল, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন,যুগ্ম-সম্পাদক :মো. কামাল উদ্দিন,
নির্বাহী সম্পাদক : রাবেয়া সিরাজী
বার্তা ও বাণিজ্য বিভাগ : মোতালেব ম্যানশন, ২ আর কে মিশন রোড, মতিঝিল, ঢাকা-১২০৩।
মোবাইল : 01796-777753,01711-057321
ই-মেইল : bhorerawajbd@gmail.com