সৌদি আরবের জেদ্দা শহরে দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসী জীবিকা নির্বাহ করছেন মোহাম্মদ ওমর ফারুক, একজন বাংলাদেশি নাগরিক। কিন্তু মানবিক সহায়তা দেওয়ার সুযোগে তার বিশ্বাসের প্রতি আঘাত করেছে এক প্রতারক নারী, শারমিন আক্তার, যার ফলে ওমর ফারুক ও তার পরিবারের জীবন আজ শঙ্কিত। এই ঘটনা এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে, যেখানে একজন প্রবাসী তার দেশ থেকে আইনগত সহায়তা পাওয়ার কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন।
এমনি ঘটেছিল— গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে শারমিন আক্তার এবং তার স্বামী আবদুস জমাদ জেদ্দায় মোহাম্মদ ওমর ফারুকের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তারা নিজেদের আর্থিক সংকটের কথা জানালে, মানবিক কারণে ওমর ফারুক তাদের কিছু অর্থ সহায়তা করেন। কিন্তু এই সহায়তা নেওয়ার পর, শারমিন আক্তার তার বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে এমন এক মূর্ত আক্রমণ করে, যা ওমর ফারুকের জীবনকে একেবারে বিপদে ফেলেছে।
শারমিন আক্তার মোবাইল ফোনের লক খুলে ওমর ফারুকের ব্যক্তিগত গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র চুরি করে এবং সেগুলি ব্যবহার করে তাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মাধ্যমে হুমকি দিতে থাকে। সেখানেই শেষ নয়, শারমিন আক্তার তার কাছে ১,০০,০০০ (এক লক্ষ) টাকা দাবি করে এবং বলেন, অর্থ না দিলে তিনি ও তার পরিবারের নিরাপত্তা বিপন্ন হতে পারে। তারপর থেকেই তিনি ও তার সহযোগীরা মোবাইল ফোনে নানা ধরনের হুমকি দিতে থাকে, এমনকি ওমর ফারুকের পরিবারের সদস্যদেরও ফোন করে প্রাণনাশের ভয় দেখায়। একটি ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি:
এই ঘটনাটি এক সাধারণ প্রতারণার ঘটনা হতে পারত, কিন্তু প্রতারকের অন্য ভয়াবহ
কৌশল ও তার পরিণতি ওমর ফারুক ও তার পরিবারের জন্য এক ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। বিদেশে অবস্থানকারী একজন প্রবাসী, যিনি ইতিমধ্যেই দৈনন্দিন জীবনের নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছেন, তার জন্য একটি অপরাধী চক্রের দ্বারা অব্যাহত হুমকি ও দুর্ব্যবহার, তার ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলেছে। "আমার বিশ্বাসের প্রতি আঘাত করেছে, আর এখন আমি ও আমার পরিবার আতঙ্কে আছি। এই প্রতারকদের বিরুদ্ধে যদি আইনি ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে পরবর্তী সময়ে আরো ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে," – বলেন মোহাম্মদ ওমর ফারুক। আইনগত সহায়তার জন্য আবেদন: ওমর ফারুক এখন আবেদন জানিয়েছেন যে, তিনি তার দেশের কর্তৃপক্ষের নিকট দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য। যেহেতু তিনি একজন প্রবাসী, তার পক্ষে বাংলাদেশে বসে আইনগত সহায়তা নেওয়া একেবারেই কঠিন। তাই, তিনি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও বাংলাদেশ কনসুলেট জেনারেল এর কাছে এই বিষয়টির দ্রুত তদন্ত ও আইনগত পদক্ষেপের জন্য আবেদন জানিয়েছেন। ওমর ফারুকের দাবি, শারমিন আক্তার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক, যেন তিনি এবং তার পরিবার এই বিপদের মুখে না পড়েন। তিনি আশা করেন, এই ঘটনার পর, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথাযথভাবে তদন্ত করবে এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেবে। প্রবাসীদের নিরাপত্তার গুরুত্ব: প্রবাসীরা দেশের জন্য অনেক অবদান রেখে আসছেন, তারা দেশের অর্থনীতিতে মূল্যবান অবদান রাখেন। কিন্তু প্রবাসী বাংলাদেশিরা যদি এই ধরনের অপরাধের শিকার হন, তাহলে তাদের নিরাপত্তা কতটা নিশ্চিত করা হচ্ছে তা বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায়।
এছাড়া, যখন এক প্রবাসী নাগরিকের জন্য দেশে বসে আইনি সহায়তা নেওয়া কঠিন হয়ে যায়, তখন এটি আরো বড় একটা সমস্যার জন্ম দেয়। এবং তার উপর, যখন এই ধরনের অপরাধীরা মানুষকে হুমকি দিতে থাকে এবং তাদের নিরাপত্তা নিয়ে খেলা শুরু করে, তখন কর্তৃপক্ষের অবিলম্বে হস্তক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি। এখনই পদক্ষেপ নেওয়া উচিত: বিভিন্ন প্রবাসী সম্প্রদায় এরকম শোষণ এবং প্রতারণার শিকার হচ্ছে। সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিতে হবে। ওমর ফারুকের মতো এক প্রবাসী যখন প্রতারকদের কাছ থেকে হুমকি পাচ্ছে, তখন তা আমাদের সবার জন্য একটি সতর্ক সংকেত। সরকার ও কনসুলেট কর্তৃপক্ষের উচিত, প্রবাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া।
এবং, যদি এই ঘটনাটি দ্রুত তদন্ত না করা হয়, তবে পরবর্তী সময়ে এরকম আরো অনেক প্রবাসী একই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। এজন্য আমরা আশা করি, প্রবাসীদের নিরাপত্তা এবং আইনানুগ সহায়তা নিশ্চিত করতে সরকার ও কনসুলেট কর্তৃপক্ষ অতি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
সংগ্রহিত তথ্য:মোহাম্মদ ওমর ফারুকের পরিবারের নিরাপত্তা সংক্রান্ত এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য কনসুলেট ও প্রশাসন কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছানো হবে বলে জানানো হয়েছে। শারমিন আক্তারের বিরুদ্ধে তথ্যভিত্তিক অভিযোগ: মাদকসহ প্রতারণা গাজীপুরের শারমিন আক্তার একদিকে যেমন প্রতারণার মাধ্যমে প্রবাসী ব্যবসায়ী ওমর ফারুককে ব্ল্যাকমেইল করছে, তেমনি তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসার সঙ্গে সম্পর্কিত একাধিক গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। শারমিনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মধ্যে ইয়াবা পাচার এবং মাদক চক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। গাজীপুরে তার বিরুদ্ধে ইয়াবা সংক্রান্ত একাধিক মামলা রয়েছে। মোঃ আবদুস সামাদ, যিনি শারমিনের কথিত স্বামী, তার বিরুদ্ধে ইয়াবা পাচারের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযোগ উঠেছে। এই প্রতারণার মূল উদ্দেশ্য ছিল সৌদি আরবে গিয়ে মাদক পাচার করা, যা তার আসল উদ্দেশ্য ছিল। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, শারমিন গাজীপুরে ইয়াবা মামলার পর চট্টগ্রামের পাহাড়তলী এলাকায় পালিয়ে গিয়ে লুকিয়ে থাকে। এছাড়া, শারমিন ও তার স্বামী সামাদ একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য হিসেবে কাজ করছে। তারা ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে এবং বিপদগ্রস্ত মানুষের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে, তাদের ব্ল্যাকমেইল করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্মানহানি ঘটানোর চেষ্টা করে। এছাড়া, শারমিনের মাদক পাচারের কৌশল এবং প্রতারক চক্রের কার্যকলাপ সাংবাদিকদের অনুসন্ধানে আরও বিস্তারিত তথ্য বেরিয়ে আসছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ শাহজালাল, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন,যুগ্ম-সম্পাদক :মো. কামাল উদ্দিন,
নির্বাহী সম্পাদক : রাবেয়া সিরাজী
বার্তা ও বাণিজ্য বিভাগ : মোতালেব ম্যানশন, ২ আর কে মিশন রোড, মতিঝিল, ঢাকা-১২০৩।
মোবাইল : 01796-777753,01711-057321
ই-মেইল : bhorerawajbd@gmail.com