চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) উত্তর ও দক্ষিণ বিভাগের একটি বিশেষ অভিযানে অপহৃত তিন ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়েছে। একই সঙ্গে দেশীয় অস্ত্রসহ চার অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের হেফাজত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ধারালো অস্ত্র এবং পাঁচটি মোটরসাইকেল। বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় পাঁচলাইশ থানাধীন পূর্ব নাসিরাবাদ এলাকার শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রের পেছনে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানের পেছনের গল্প
ডিবি পুলিশের একটি আভিযানিক দল ষোলশহর ২ নম্বর গেট মোড়ে অবস্থান করার সময় গোপন সূত্রে তথ্য পায় যে, পূর্ব নাসিরাবাদে একটি বাগানের ভেতর তিনজনকে অপহরণ করে হাত-পা বেঁধে মারধর করা হচ্ছে এবং মুক্তিপণ দাবি করা হচ্ছে। এই সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ডিবি পুলিশের দলটি দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং অভিযান চালায়।
অভিযানে অপহরণকারীদের মধ্যে বাছির আহম্মদ রানা (২৭), মো. জিহাদ (২৪), মো. আরিফ (২৪) ও মো. ইমন (২৩)– এই চারজনকে আটক করা হয়। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আরও ৭-৮ জন অপহরণকারী পালিয়ে যায়। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিবি পুলিশ।
উদ্ধার হওয়া ভিকটিমদের পরিচয়-১. সমীর দাশ (৪৫): বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন হিলভিউ ১ নম্বর রোডের বাসিন্দা।
২. কেশব মিত্র দাশ (৪৩): প্রবর্তক শ্রী কৃষ্ণ মন্দিরের পুরোহিত, বর্তমানে পাঁচলাইশ এলাকায় বসবাস করেন।
৩. রুবেল রুদ্র (৪২): প্রবর্তক শ্রী কৃষ্ণ মন্দিরের সেবক। তিনি আনোয়ারা উপজেলার বাসিন্দা হলেও পাঁচলাইশ এলাকায় থাকেন। অপহরণের পরিকল্পনা ও মুক্তিপণ দাবি-ডিবি সূত্র জানায়, অপহরণকারীরা সমীর দাশ, কেশব মিত্র দাশ ও রুবেল রুদ্রকে হিলভিউ এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে অপহরণ করে। অপহরণের পর তাঁদের নির্মাণাধীন ভবনের চতুর্থ তলায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং হাত-পা বেঁধে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে অপহরণকারীরা নয় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরবর্তীতে বিকেলে তাঁদের চোখ-মুখ বেঁধে সিএনজি ও অটোরিকশায় করে বিভিন্ন স্থানে ঘোরানোর পর পূর্ব নাসিরাবাদের শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রের পেছনের বাগানে নিয়ে আসে। ডিবি পুলিশের তৎপরতায় অপহরণকারীদের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
অপহরণকারীদের পরিচয় ও অতীত রেকর্ড ১. বাছির আহম্মদ রানা (২৭): ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার বাসিন্দা। বর্তমানে পাঁচলাইশ এলাকায় বসবাস করেন। তাঁর বিরুদ্ধে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির ১০টি মামলা রয়েছে।
২. মো. জিহাদ (২৪): ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার বাসিন্দা। বর্তমানে বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায় ভাড়া থাকেন। ৩. মো. আরিফ (২৪): বায়েজিদ বোস্তামী এলাকার বাসিন্দা।
৪. মো. ইমন (২৩): ফটিকছড়ি উপজেলার বাসিন্দা। তাঁর বিরুদ্ধেও একাধিক অপরাধের মামলা রয়েছে।
উদ্ধার অভিযান ও সফলতা
অভিযান চলাকালে অপহরণকারীদের কাছ থেকে ১০টি ধারালো কিরিচ, একটি ড্যাগার, একটি চাকু এবং পাঁচটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত ভিকটিমরা বর্তমানে সুস্থ আছেন এবং তাঁদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর প্রক্রিয়া চলছে।
ডিবি পুলিশের ভূমিকা
ডিবি পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, "অপহরণের খবর পাওয়ার পর আমরা দ্রুত পদক্ষেপ নিই এবং ভিকটিমদের জীবনের ঝুঁকি কমাতে যথাসম্ভব সতর্কতার সঙ্গে অভিযান পরিচালনা করি। এই ধরনের অভিযানে সফলতা আমাদের গোয়েন্দা তৎপরতারই প্রমাণ।"
ডিবি পুলিশ আরও জানিয়েছে, পালিয়ে যাওয়া অপহরণকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সমাজে নিরাপত্তার বার্তা
ডিবি পুলিশের এই সাহসী অভিযানের ফলে চট্টগ্রামবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। অপরাধ দমন এবং জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডিবি পুলিশের এই ধরনের অভিযান আরও জোরদার করার প্রত্যাশা করছেন নগরবাসী
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ শাহজালাল, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন,যুগ্ম-সম্পাদক :মো. কামাল উদ্দিন,
নির্বাহী সম্পাদক : রাবেয়া সিরাজী
বার্তা ও বাণিজ্য বিভাগ : মোতালেব ম্যানশন, ২ আর কে মিশন রোড, মতিঝিল, ঢাকা-১২০৩।
মোবাইল : 01796-777753,01711-057321
ই-মেইল : bhorerawajbd@gmail.com