চট্টগ্রাম বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী। সমুদ্রবন্দর, কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র, কর্ণফুলী টানেলসহ বহু সম্ভাবনাময় প্রকল্পের কেন্দ্রবিন্দু এই নগরী। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, এত সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও চট্টগ্রাম এখনো পরিকল্পনাহীন, অব্যবস্থাপনা ও জলাবদ্ধতার শহর। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নগরীর সমস্যা আরও প্রকট হচ্ছে, আর আমরা প্রতিনিয়ত আশা করছি যে, কোনো একদিন একজন যোগ্য নেতা এসে এই নগরীর ভাগ্য বদলাবেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো—আমাদেরই সেই পরিবর্তন আনতে হবে, আমাদেরই সঠিক নেতৃত্ব নির্বাচন করতে হবে। একজন দক্ষ ও আদর্শ নগরপিতা বা মেয়র ছাড়া চট্টগ্রামের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই আমাদের অবশ্যই এমন একজন মেয়র নির্বাচন করতে হবে, যিনি শুধু জনপ্রিয় নন, বরং দক্ষ, স্বচ্ছ, শিক্ষিত এবং নগর উন্নয়নের জন্য নিবেদিতপ্রাণ।
একজন আদর্শ নগরপিতার জন্য জরুরি যোগ্যতা
চট্টগ্রামকে পরিকল্পিত, দৃষ্টিনন্দন ও আধুনিক মহানগরীতে রূপান্তর করতে হলে একজন নগরপিতার কিছু গুরুত্বপূর্ণ যোগ্যতা থাকা জরুরি। আমরা নাগরিক হিসেবে আমাদের শহরের ভবিষ্যৎ গঠনের জন্য কিছু মানদণ্ড নির্ধারণ করতে পারি, যা সবার জন্য বিবেচ্য হওয়া উচিত।১. সৎ ও দুর্নীতিমুক্ত হতে হবে
নগরীর উন্নয়নকাজের সবচেয়ে বড় বাধা দুর্নীতি। নগরপিতা যদি উন্নয়নকাজে কমিশন, কাটমানি বা ঘুষ গ্রহণ করেন, তাহলে সেই উন্নয়ন কখনোই টেকসই হবে না। অবকাঠামোর গুণগত মান কমে যাবে, ব্যয় বেড়ে যাবে, আর নাগরিকরা সেই খেসারত দেবেন। তাই একজন সৎ ও নির্ভেজাল চরিত্রের ব্যক্তিকেই নগরপিতার আসনে বসানো দরকার। ২. ফৌজদারি মামলা থেকে মুক্ত থাকতে হবে
একজন নগরপিতা যদি অতীতে কোনো ফৌজদারি মামলায় জড়িত থাকেন, তবে তার নৈতিক অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ হয়। এমন কোনো ব্যক্তিকে আমরা আমাদের নগর পরিচালনার দায়িত্ব দিতে পারি না, যার অতীতে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের ইতিহাস রয়েছে। ৩. স্বচ্ছ রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যাকগ্রাউন্ড থাকতে হবে
তিনি এমন কেউ হবেন না, যিনি নানা বিতর্কে জড়িত, বরং সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হবেন। বিতর্কিত, দুর্নীতিগ্রস্ত বা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কোনো ব্যক্তিকে নগরপিতা বানানো হলে তা নগরবাসীর জন্য বড় ক্ষতির কারণ হবে।
৪. উচ্চশিক্ষিত ও দূরদর্শী হতে হবে
বিশ্বমানের নগরী গড়তে হলে বিশ্বমানের চিন্তাভাবনা দরকার। অন্তত মাস্টার্স ডিগ্রিধারী হতে হবে, যাতে তিনি প্রশাসনিক দক্ষতা ও বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে নগর পরিচালনা করতে পারেন। উন্নত বিশ্বে নগর ব্যবস্থাপনার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ বা শিক্ষা থাকাটা আরও ভালো।
৫. নগর উন্নয়নে প্রবল উৎসাহ ও প্রতিশ্রুতি থাকতে হবে
নগর উন্নয়ন কোনো পার্শ্বিক কাজ নয়, এটি একটি পূর্ণকালীন দায়িত্ব। মেয়রের উচিত নগরবাসীর স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা এবং প্রতিটি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রতি তার সতর্ক দৃষ্টি রাখা।
৬. জলাবদ্ধতা নিরসনে কঠোর উদ্যোগ নিতে হবে
চট্টগ্রামের অন্যতম প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা। এটি শুধুমাত্র সাময়িক প্রকল্প দিয়ে সমাধান করা সম্ভব নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন দরকার। ড্রেনেজ ব্যবস্থা, খাল উদ্ধার ও সংরক্ষণ, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের আধুনিক ব্যবস্থা গ্রহণের মতো টেকসই উদ্যোগ নিতে হবে।
৭. দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করার ক্ষমতা থাকতে হবে নগর উন্নয়ন কোনো একক দলের কাজ নয়, এটি সকল নাগরিকের সম্মিলিত প্রচেষ্টা। তাই মেয়রের উচিত দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে নগর উন্নয়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করা।
৮. অতিরিক্ত বড় রাজনৈতিক নেতা হওয়া জরুরি নয়, তবে গ্রহণযোগ্য হতে হবে একজন নগরপিতাকে নগর উন্নয়নের প্রতি নিবেদিত থাকতে হবে। তিনি যদি অতিরিক্ত বড় রাজনৈতিক নেতা হন, তাহলে তার অন্যান্য রাজনৈতিক ব্যস্ততা নগর উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। তবে তার অবশ্যই নাগরিক সমাজে গ্রহণযোগ্যতা থাকতে হবে।
৯. উন্নত বিশ্বের শহর ঘুরে দেখার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে
নগর উন্নয়নের জন্য উন্নত দেশের পরিকল্পিত শহরগুলোর অভিজ্ঞতা থাকা দরকার। যিনি উন্নত বিশ্বের নগর ব্যবস্থাপনা দেখেছেন, তিনি ভালোভাবে বুঝতে পারবেন চট্টগ্রামের জন্য কী ধরনের পরিকল্পনা প্রয়োজন। ১০. অতীতে চট্টগ্রামের উন্নয়নে অবদান রেখেছেন এমন কেউ হওয়া উচিত নগর উন্নয়নে পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকা জরুরি। যারা অতীতে চট্টগ্রামের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। ১১. স্থানীয় সংস্থাগুলোর সমন্বয় সাধন করার দক্ষতা থাকতে হবে নগর উন্নয়ন শুধু সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব নয়, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সমন্বিত প্রচেষ্টার প্রয়োজন। মেয়রকে অবশ্যই বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে সমন্বয় সাধন করতে হবে।
১২. বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ব্যক্তিরা অযোগ্য
যারা অতীতে নগর বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন, তারা কোনোভাবেই যোগ্য নন। অহেতুক প্রভাব বিস্তার, ক্ষমতা দীর্ঘদিন ধরে রাখার মানসিকতা, এবং জনসেবার নামে ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলকারীরা অযোগ্য হবেন।
১৩. জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া মেয়র হওয়া অযোগ্যতার পরিচায়ক
কেউ যদি অতীতে জনগণের ভোট ছাড়া নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে মেয়রের দায়িত্ব পালন করে থাকেন, তবে পরবর্তী নির্বাচনে তিনি জনগণের আস্থা হারাতে পারেন। জনগণের ভোটেই নেতৃত্ব নির্ধারিত হওয়া উচিত। ১৪. রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মনোনয়ন পাওয়া ব্যক্তিরা অযোগ্য
যারা বড় রাজনৈতিক দলের জেলা পর্যায়ের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মনোনয়ন নিশ্চিত করেছেন, তারা প্রকৃত অর্থে নগর উন্নয়নের জন্য যোগ্য নন। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা জরুরি। ১৫. রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও ত্যাগ ইতিবাচক গুণ
রাজনীতিতে দীর্ঘদিন কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকা ভালো, তবে তা জনসেবার জন্য হতে হবে। শুধুমাত্র ক্ষমতা বা প্রভাব বিস্তারের জন্য রাজনীতি করা নেতারা নগর উন্নয়নে ব্যর্থ হবেন।
নাগরিকদের করণীয়
আমরা যদি সত্যিই চট্টগ্রামকে বিশ্বমানের নগরীতে পরিণত করতে চাই, তাহলে আমাদের অবশ্যই যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচন করতে হবে। কোনো রাজনৈতিক স্বার্থ বা ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের ঊর্ধ্বে উঠে শহরের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে হবে।
আপনার একটি সাহসী সিদ্ধান্ত বদলে দিতে পারে চট্টগ্রামের ভবিষ্যৎ! চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের পক্ষ থেকে আমরা দীর্ঘদিন ধরে এসব দাবিগুলো তুলে ধরছি। এখন সময় এসেছে, আবারও এই বিষয়গুলো সামনে আনার। আসুন, আমরা সবাই মিলে আমাদের স্বপ্নের চট্টগ্রাম গড়ার উদ্যোগ নেই। চট্টগ্রামকে বিশ্বমানের নগরীতে পরিণত করতে আপনার কি প্রস্তুতি আছে? চট্টগ্রামকে বিশ্বমানের নগরীতে পরিণত করতে আপনার কি প্রস্তুতি আছে? চট্টগ্রাম শুধু বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর নয়, এটি দেশের বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র। সমুদ্রবন্দর, অর্থনৈতিক অঞ্চল, পাহাড়, নদী, এবং বৈচিত্র্যময় জনগোষ্ঠীর সংমিশ্রণে চট্টগ্রাম একটি অনন্য সম্ভাবনাময় শহর। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, জলাবদ্ধতা, যানজট, দখলদারিত্ব, এবং প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনার কারণে এই মহানগরটি তার পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হচ্ছে।
চট্টগ্রামকে বিশ্বমানের নগরীতে রূপান্তর করতে হলে আমাদের শুধু সরকারের ওপর নির্ভর করলে হবে না; নাগরিকদেরও সচেতন হতে হবে, সক্রিয় হতে হবে এবং দায়িত্ব নিতে হবে। প্রশ্ন হলো—আপনি কি প্রস্তুত? বিশ্বমানের নগরীর বৈশিষ্ট্য কী হওয়া উচিত? একটি আধুনিক ও উন্নত নগরীর কিছু মৌলিক বৈশিষ্ট্য থাকে, যা চট্টগ্রামের ক্ষেত্রেও জরুরি: ১. পরিকল্পিত নগরায়ণ: আধুনিক নগর পরিকল্পনার ভিত্তিতে রাস্তা, ভবন, খেলার মাঠ, ও নাগরিক সুবিধাগুলো গড়ে তোলা। ২. টেকসই অবকাঠামো: দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে নগরীর সড়ক, সেতু, ফ্লাইওভার, ড্রেনেজ সিস্টেম, ও গণপরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
৩. স্বচ্ছ প্রশাসন: দুর্নীতিমুক্ত ও জবাবদিহিতামূলক নগর প্রশাসন গঠন করা। ৪.পরিবেশবান্ধব নগর: খাল, নদী, সবুজ এলাকা ও বনাঞ্চল সংরক্ষণ করে দূষণমুক্ত নগর গড়ে তোলা। ৫. নাগরিক অংশগ্রহণ: নাগরিকদের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে নগর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা।
চট্টগ্রামের প্রধান সমস্যাগুলো কী এবং কীভাবে সমাধান করা যায়? ১. জলাবদ্ধতা নিরসন চট্টগ্রামের অন্যতম প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা। প্রায় প্রতিটি বর্ষায় শহর অচল হয়ে পড়ে, যা অর্থনীতি ও জনজীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলে।
সমাধান: খাল ও ড্রেনগুলো দখলমুক্ত করতে হবে এবং নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য উন্নত পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
ওয়াটার রিজার্ভার তৈরি করে অতিরিক্ত পানি সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
২. যানজট নিয়ন্ত্রণ ও উন্নত গণপরিবহন ব্যবস্থা সঠিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার অভাবে যানজট চট্টগ্রামের অন্যতম প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সমাধান: স্মার্ট ট্রাফিক সিস্টেম চালু করতে হবে। ফ্লাইওভার, আন্ডারপাস ও একমুখী সড়ক পরিকল্পনার মাধ্যমে যানজট কমাতে হবে।
গণপরিবহন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে, যেমন—মেট্রোরেল, বাস র্যাপিড ট্রানজিট (BRT) ও ওয়াটার বাস চালু করা।
৩. খাল, নদী ও সবুজায়ন সংরক্ষণ
অবৈধ দখল, বর্জ্য দূষণ ও অপরিকল্পিত উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে নগরীর পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
সমাধান: অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করতে হবে।
নদী ও খাল রক্ষায় কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। শহরের পার্ক, উদ্যান ও খেলার মাঠ সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণ করতে হবে।
৪. পর্যটনশিল্পের বিকাশ চট্টগ্রামে অনেক সম্ভাবনাময় পর্যটন স্পট আছে, যা সঠিকভাবে ব্যবহার করা হলে বিশাল পরিমাণ রাজস্ব আনা সম্ভব। সমাধান: পতেঙ্গা, কক্সবাজার, সন্দ্বীপ, মহেশখালী, বান্দরবানসহ আশপাশের এলাকায় উন্নত পর্যটন অবকাঠামো গড়ে তোলা। আন্তর্জাতিক মানের হোটেল, রিসোর্ট, ও পর্যটন সেবা নিশ্চিত করা। পর্যটকদের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা।
৫. স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতের উন্নয়ন
একটি আধুনিক নগরীর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো উন্নত শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা।
সমাধান: সরকারি হাসপাতালগুলোর অবকাঠামো ও সেবার মান উন্নত করতে হবে।
বেসরকারি চিকিৎসা খাতকে মানসম্পন্ন ও নাগরিকবান্ধব করতে হবে। আধুনিক ও গবেষণাধর্মী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করতে হবে। ৬. শিল্প ও ব্যবসার প্রসার চট্টগ্রাম বাংলাদেশের প্রধান শিল্প ও বাণিজ্যকেন্দ্র। কিন্তু অবকাঠামোর সমস্যার কারণে ব্যবসায়ীরা অনেক সময় ভোগান্তির শিকার হন।
সমাধান: আধুনিক লজিস্টিক সাপোর্ট প্রদান করতে হবে। সহজে ব্যবসা করার জন্য বিনিয়োগবান্ধব নীতিমালা গ্রহণ করতে হবে। শিল্প-কারখানা গুলোতে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
নাগরিকদের ভূমিকা কী হওয়া উচিত?
চট্টগ্রামের উন্নয়ন শুধুমাত্র সরকারের কাজ নয়; আমাদের, সাধারণ নাগরিকদেরও দায়িত্ব নিতে হবে।
১. নির্বাচনে যোগ্য নেতৃত্ব বাছাই করুন:
দুর্নীতিবাজ ও অযোগ্য প্রার্থীদের বর্জন করুন।
এমন কাউকে বেছে নিন যিনি প্রকৃত অর্থে নগর উন্নয়নে নিবেদিতপ্রাণ।
২. নগর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে সহায়তা করুন:
ময়লা-আবর্জনা যেখানে-সেখানে ফেলবেন না।পরিচ্ছন্নতা রক্ষার জন্য স্থানীয় উদ্যোগ নিন। ৩. ট্রাফিক আইন মেনে চলুন:
নিয়ম না মেনে গাড়ি চালানো ও যেখানে-সেখানে গাড়ি পার্কিং করা থেকে বিরত থাকুন। ফুটপাত ও রাস্তা দখল মুক্ত রাখার জন্য সচেতন হোন।
৪.নদী-খাল দখলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিন:
দখলদারদের চিহ্নিত করুন এবং প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করুন।
নদী ও খাল পরিষ্কারের জন্য নাগরিক উদ্যোগ নিন।
৫. পরিবেশবান্ধব জীবনযাত্রা গ্রহণ করুন: গাছ লাগান এবং প্লাস্টিক বর্জন করুন। পুনর্ব্যবহার যোগ্য উপকরণের ব্যবহার বাড়ান। ৬. পর্যটন শিল্পে ভূমিকা রাখুন:
পর্যটকদের নিরাপদ অভিজ্ঞতা দিতে সহায়তা করুন।
নিজেদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সঠিকভাবে তুলে ধরুন।
আপনি কি প্রস্তুত?
চট্টগ্রামকে বিশ্বমানের নগরীতে পরিণত করা সম্ভব, কিন্তু তার জন্য দরকার আমাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ
আপনার ভোট ও মতামত দিয়ে যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচন করুন।
আপনার চারপাশের পরিবেশ পরিষ্কার ও দূষণমুক্ত রাখুন।
ট্রাফিক আইন মেনে চলুন এবং অন্যদেরও উৎসাহিত করুন।
অপরাধ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন।
আমাদের আজকের সিদ্ধান্ত ও কার্যক্রমই চট্টগ্রামের আগামী দিনের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। তাই আসুন, দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে আমরা চট্টগ্রামকে বিশ্বমানের নগরীতে রূপান্তরের শপথ গ্রহণ করি!
পরিবর্তন আসবে, যদি আমরা প্রস্তুত থাকি! আপনি কি প্রস্তুত?
পরিবর্তন আসবে, যদি আমরা প্রস্তুত থাকি! আপনি কি প্রস্তুত?
চট্টগ্রামকে বিশ্বমানের নগরীতে পরিণত করা সম্ভব, যদি আমরা সবাই একসঙ্গে এগিয়ে আসি। উন্নত নগরীর জন্য প্রয়োজন সৎ নেতৃত্ব, সুশৃঙ্খল নগর পরিকল্পনা, পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন, এবং নাগরিকদের সক্রিয় অংশগ্রহণ।
✅ আপনি কি যোগ্য ও সৎ নেতৃত্ব নির্বাচনে প্রস্তুত?
✅ আপনি কি নগর পরিচ্ছন্ন ও ট্রাফিক আইন মেনে চলতে প্রস্তুত?
✅ আপনি কি জলাবদ্ধতা, যানজট ও দখলদারিত্ব রোধে সচেতন হতে প্রস্তুত?
✅ আপনি কি চট্টগ্রামের ভবিষ্যৎ উন্নয়নে দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত? চট্টগ্রামের পরিবর্তন আমাদের হাতেই! পরিবর্তন আসবে, যদি আমরা প্রস্তুত থাকি! আপনি কি প্রস্তুত?
লেখকঃ যুগ্ম সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান-
দৈনিক ভোরের আওয়াজ ও The Daily Banner-
মহাসচিব- চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরাম।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ শাহজালাল, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন,যুগ্ম-সম্পাদক :মো. কামাল উদ্দিন,
নির্বাহী সম্পাদক : রাবেয়া সিরাজী
বার্তা ও বাণিজ্য বিভাগ : মোতালেব ম্যানশন, ২ আর কে মিশন রোড, মতিঝিল, ঢাকা-১২০৩।
মোবাইল : 01796-777753,01711-057321
ই-মেইল : bhorerawajbd@gmail.com