ছোটবেলা থেকেই আমার ক্যামেরার প্রতি দুর্নিবার আকর্ষণ ছিল। চারপাশের মুহূর্তগুলো ধরে রাখার ইচ্ছে থাকলেও তখন ফটোগ্রাফি ছিল অত্যন্ত ব্যয়বহুল। সাদা-কালো ছবির যুগে ক্যামেরা ছিল হাতে গোনা কিছু মানুষের বিলাসিতা। সাধারণ মানুষের জন্য ক্যামেরা মানে ছিল স্টুডিওতে গিয়ে ছবি তোলা, আর পেশাদার ফটোগ্রাফাররা ছিলেন এক বিশেষ শ্রেণির মানুষ।
তবে সাংবাদিকতা শুরুর পর বুঝলাম, ছবি ছাড়া খবরের পূর্ণতা আসে না। গণআন্দোলন, সভা-সমাবেশ, রাজনৈতিক ঘটনাগুলো তখন ক্যামেরার লেন্সে বন্দি না হলে পত্রিকায় ছাপা হত না। তাই আমরা সবসময় ফটোগ্রাফারদের প্রতি অত্যন্ত সম্মান দেখাতাম। একধরনের নির্ভরশীলতাও তৈরি হয়েছিল তাদের প্রতি।
আন্দোলনের সময় ফটোগ্রাফির শক্তি রাজপথের সংগ্রামমুখর দিনে ফটোগ্রাফারদের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। সাংবাদিকতার সময় দেখেছি, যত বড় আন্দোলনই হোক, যদি ছবি না থাকে, তবে খবর ছাপা হবে না। তাই আন্দোলনকারীরা সবসময় চাইত, কোনো ফটোগ্রাফার যেন সেখানে উপস্থিত থাকে।
তখন ফটোগ্রাফারদের দিকে আলাদা নজর থাকত সবার। পুলিশেরাও ভয় পেত ফটোগ্রাফারদের, কারণ তারা জানত, একটি ছবি পুরো ঘটনার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। সেই সময় যারা সাংবাদিকতার পাশাপাশি ফটোগ্রাফিও করত, তারা ছিল দারুণ সুবিধাজনক অবস্থানে। সাদা-কালো থেকে রঙিন, ফিল্ম থেকে ডিজিটাল
ফটোগ্রাফির অগ্রযাত্রায় প্রথম বড় পরিবর্তন আসে যখন সাদা-কালো থেকে রঙিন ছবির যুগ শুরু হয়। এরপরে এল ডিজিটাল ক্যামেরার যুগ, যা ফটোগ্রাফিকে সহজলভ্য করে তোলে। কিন্তু আমাদের সময় ফটোগ্রাফির জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক ছবি তোলার সুযোগ ছিল, কারণ রিল সীমিত ছিল। প্রতিটি ফ্রেমই অত্যন্ত মূল্যবান ছিল। ১৯৯৮ সালে চট্টগ্রাম ফটোগ্রাফি পরিষদের জীবন সদস্য হই। সে সময় এর সভাপতি ছিলেন চট্টগ্রামের স্বনামধন্য ফটোগ্রাফার মোর্তোজা তৌফিক ভাই। তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এবং তার আগেও দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছবি তুলেছেন। বঙ্গবন্ধুর বহু দুর্লভ ছবিও তার ক্যামেরায় বন্দি হয়েছিল। ২০০০ সালে চট্টগ্রাম ফটোগ্রাফি সোসাইটির উদ্যোগে আমি আনুষ্ঠানিকভাবে ফটোগ্রাফির প্রশিক্ষণ নেই। এই কোর্সে আমার ওস্তাদ ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফটোগ্রাফার শোয়েব ফারুকী, মওদুদল আলম ও দেবু প্রসাদ দেবু। তাদের কাছ থেকে হাতে-কলমে শেখার সুযোগ পেয়েছিলাম, যা আমার ফটোগ্রাফির জ্ঞানকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।
আমার প্রথম ক্যামেরা ও ফটোগ্রাফির নেশা
কোর্স করার সময় আমি একটি রাশিয়ান জেনিত ক্যামেরা কিনেছিলাম মাত্র ৩০০০ টাকায়। সেটিই হয়ে ওঠে আমার নিত্যসঙ্গী। যখন যেখানে যেতাম, ক্যামেরা সঙ্গে থাকত। সেই সময় ক্যামেরা হাতে থাকলে একধরনের গর্ববোধও কাজ করত।
সাদা-কালো থেকে শুরু করে রঙিন ফটোগ্রাফির যুগে প্রবেশ করলেও তখনো ফটোগ্রাফি ছিল ব্যয়সাপেক্ষ। প্রতিটি ছবি তোলার আগে ভেবে দেখতে হতো, কারণ ভুল হলে পুরো রিল নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকত। এই চ্যালেঞ্জের মধ্যেই আমি অসংখ্য দুর্লভ ছবি তুলেছি, যা আজও আমার কাছে অমূল্য সম্পদ।
এরপর দিল্লিতে ফটোগ্রাফির উপর একটি শর্ট কোর্স করি। তখন মনে হয়েছিল, আমি পুরোপুরি ফটোগ্রাফিতে যুক্ত হবো। কিন্তু লেখালেখির প্রতি অগাধ টান থাকায় শেষ পর্যন্ত পেশাদার ফটোগ্রাফার না হয়ে সাংবাদিকতার পথেই রয়ে গেলাম। তবে ফটোগ্রাফি থেকে কখনোই দূরে যাইনি, বরং এটি আমার শখের অংশ হয়ে উঠেছে।
বিশ্বভ্রমণ ও ফটোগ্রাফি
পেশাগত কারণে আমি পৃথিবীর প্রায় ২৭-২৮টি দেশ ঘুরেছি। কিন্তু সব জায়গার ছবি আমার কাছে নেই, কারণ সবসময় ক্যামেরা সঙ্গে থাকেনি, আর সবসময় ফটোগ্রাফারদের সঙ্গেও পরিচয় হয়নি। তবে মধ্যপ্রাচ্য ও ভারতের বেশ কয়েকবারের সফরের ছবি আজও আমার কাছে আছে।
বিশ্ব লেখক সম্মেলনের জন্য কোরিয়ায় গিয়েছিলাম, যেখানে বিভিন্ন দেশের বিখ্যাত ফটোসাংবাদিকদের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছিল। তারা বলত, ফটোগ্রাফারদের মেয়েরা সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে, কারণ তাদের ক্যামেরায় ধরা থাকে বিশ্বের সেরা সুন্দরীদের মুহূর্ত। বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া মডেলদের ছবিগুলো তারা সংগ্রহ করে, এবং সেই ছবি আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রি করে প্রচুর অর্থ আয় করে। আমি তখন মজা করে ভাবতাম, "পেশাদার সাংবাদিক না হয়ে ফটোগ্রাফার হলে কেমন হতো!" কোরিয়ায় আমার অসংখ্য ছবি তুলেছিল সেখানকার ফটোসাংবাদিকরা, কিন্তু দুঃখজনকভাবে সেগুলো আমি আর ফিরে পাইনি। যা তুলেছি, তা শুধু আমার ক্যামেরাতেই রয়ে গেছে। ফটোগ্রাফির ভবিষ্যৎ ও স্মৃতিচারণা আজকের দিনে, যখন সবার হাতে মোবাইল ক্যামেরা, তখন ফটোগ্রাফারদের গুরুত্ব হয়তো কিছুটা কমে গেছে। কিন্তু সত্যিকারের ফটোগ্রাফি শুধু শাটার টিপে ছবি তোলা নয়, বরং মুহূর্তের গভীরতা বোঝা, আলোর খেলা আয়ত্ত করা, সময়কে বন্দি করা। প্রতিবছর ১৯ আগস্ট বিশ্ব ফটোগ্রাফি দিবস পালিত হয়। এই উপলক্ষে আমি বাংলা টিভিতে শোয়েব ফারুকী ও মওদুদ আলমকে নিয়ে স্মৃতিচারণমূলক একটি টকশো করেছিলাম, যা এখনো পুনঃপ্রচার করা হয়।
ফটোগ্রাফি আমার কাছে শুধু একটি মাধ্যম নয়, বরং এক আবেগ, এক ঐতিহ্য। আজ যখন পুরনো ছবিগুলো দেখি, মনে হয়, এ যেন আমার জীবন, আমার যাত্রার ইতিহাস। ক্যামেরার লেন্সের মধ্য দিয়ে আমি শুধু ছবি তুলিনি, আমি সময়কে ধরে রেখেছি। সেই সময়, সেই মুহূর্তগুলোই আজ স্মৃতি হয়ে আছে—আমার হৃদয়ের অ্যালবামে।
চলুন- ফটোগ্রাফি ইতিহাস ঐতিহ্য একটু ইতিহাসের পাতা থেকে দেখি আসে-ফটোগ্রাফির ইতিহাস: আলোকচিত্রের বিবর্তন ও উন্নয়ন ফটোগ্রাফি বা আলোকচিত্র তোলার প্রযুক্তি বিশ্বে তথ্য, সংস্কৃতি এবং শিল্পের এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। এটি কেবল চিত্র ধারণের পদ্ধতি নয়, বরং এক প্রকার ইতিহাস সংরক্ষণের মাধ্যমও। ফটোগ্রাফির যাত্রা শুরু হয়েছিল বিজ্ঞানের অগ্রগতির হাত ধরে, যা ধীরে ধীরে শিল্প, সাংবাদিকতা, বিজ্ঞাপন ও ব্যক্তিগত স্মৃতি সংরক্ষণের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। ফটোগ্রাফির প্রাচীন ইতিহাস ক্যামেরা অবস্কিউরা: ফটোগ্রাফির প্রথম ধারণা ফটোগ্রাফির ইতিহাস শুরু হয় "ক্যামেরা অবস্কিউরা" (Camera Obscura) ধারণা থেকে। এই ধারণাটি খ্রিস্টপূর্ব ৪০০ থেকে ৩০০ অব্দের মধ্যে চীনের দার্শনিক মো টি ও গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল প্রদান করেছিলেন।
ক্যামেরা অবস্কিউরা হলো একটি গাঢ় অন্ধকার কক্ষ বা বাক্স, যার একটি ক্ষুদ্র ছিদ্র দিয়ে বাইরের দৃশ্য উল্টোভাবে অভ্যন্তরের দেওয়ালে প্রতিফলিত হয়।
আরব বিজ্ঞানী ইবনে আল-হাইথাম (৯৬৫-১০৪০ খ্রিস্টাব্দ) এই পদ্ধতি সম্পর্কে বিশদ গবেষণা করেন। ১৫শ শতকে চিত্রশিল্পী লিওনার্দো দা ভিঞ্চি এটি ব্যবহার করেন চিত্র অঙ্কনের জন্য। তবে, ক্যামেরা অবস্কিউরা দৃশ্য প্রতিফলিত করলেও সেটি সংরক্ষণ করার প্রযুক্তি তখনো ছিল না। আধুনিক ফটোগ্রাফির আবিষ্কার ন্যাইসেফোর নিয়েপস ও প্রথম ফটোগ্রাফ (১৮২৬)
আধুনিক ফটোগ্রাফির জনক হলেন ফরাসি বিজ্ঞানী জোসেফ ন্যাইসেফোর নিয়েপস (Joseph Nicéphore Niépce)।
১৮২৬ সালে তিনি প্রথম সফলভাবে একটি স্থায়ী ছবি তুলতে সক্ষম হন।
তিনি "হেলিওগ্রাফ" নামক এক বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে টিনের পাতের ওপর ছবি সংরক্ষণ করেন। ছবিটি তুলতে আট ঘণ্টা এক্সপোজার সময় লেগেছিল।
লুই দাগুয়ের ও দাগুয়েরোটাইপ (১৮৩৯) ন্যাইসেফোর নিয়েপসের কাজের উন্নয়ন ঘটান ফরাসি উদ্ভাবক লুই দাগুয়ের (Louis Daguerre)। ১৮৩৯ সালে তিনি "দাগুয়েরোটাইপ"
(Daguerreotype) নামক এক নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেন, যা তুলনামূলক দ্রুত ও স্পষ্ট ছবি তৈরি করতে পারত। এই পদ্ধতিতে তামার পাতের ওপর রুপোর আবরণ দিয়ে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে ছবি তৈরি করা হতো। ফ্রান্স সরকার দাগুয়েরের এই উদ্ভাবনকে ফটোগ্রাফির প্রথম বাণিজ্যিক প্রযুক্তি হিসেবে ঘোষণা করে। ট্যালবটের ক্যালোটাইপ ও নেগেটিভ পদ্ধতি (১৮৪১)
ফটোগ্রাফির আরও উন্নত রূপ দেন ব্রিটিশ উদ্ভাবক উইলিয়াম হেনরি ফক্স ট্যালবট (William Henry Fox Talbot)।
তিনি ১৮৪১ সালে "ক্যালোটাইপ" (Calotype) পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন, যা প্রথম নেগেটিভ-টু-পজিটিভ ফটোগ্রাফির প্রযুক্তি।
এর ফলে একবার নেগেটিভ তৈরি হলে অসংখ্য কপি তৈরি করা সম্ভব হয়। ফটোগ্রাফির প্রযুক্তিগত উন্নয়নভেজা প্লেট ও শুকনো প্লেট (১৮৫০-১৮৮০) ১৮৫১ সালে ফ্রেডরিক স্কট আর্চার (Frederick Scott Archer) "কলডিওন" (Collodion Wet Plate) পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন, যা আগের তুলনায় আরও উন্নত মানের ছবি তৈরি করত। ১৮৭১ সালে রিচার্ড ম্যাডক্স (Richard Maddox) "ড্রাই প্লেট" (Dry Plate) ফটোগ্রাফির পথ উন্মুক্ত করেন, যা ক্যামেরাকে বহনযোগ্য করে তোলে।
ফিল্ম ক্যামেরার আবিষ্কার (১৮৮৮-১৯৩০)
ফটোগ্রাফিকে সহজ ও জনসাধারণের কাছে জনপ্রিয় করার প্রধান কৃতিত্ব জর্জ ইস্টম্যান (George Eastman)-এর। তিনি ১৮৮৮ সালে "কোডাক" (Kodak) ক্যামেরা বাজারে আনেন, যা রোল ফিল্ম ব্যবহার করত। ১৯৩০ সালে রঙিন ফটোগ্রাফি বিকশিত হয় কোডাক এবং আগফা কোম্পানির হাত ধরে। ডিজিটাল ফটোগ্রাফির যুগ (১৯৭৫-বর্তমান)
১৯৭৫ সালে কোদাক কোম্পানি বিশ্বের প্রথম ডিজিটাল ক্যামেরা তৈরি করে। ১৯৯০-এর দশকে ডিজিটাল ক্যামেরা বাণিজ্যিকভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ২০০০ সালের পর থেকে স্মার্টফোনের ক্যামেরার জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়।
আধুনিক যুগে ফটোগ্রাফির ব্যবহার ও গুরুত্ব
আজকের দিনে ফটোগ্রাফি শুধু শিল্প নয়, বরং এটি সাংবাদিকতা, বিজ্ঞাপন, বিজ্ঞানের গবেষণা, নিরাপত্তা, বিনোদন এবং সামাজিক যোগাযোগের একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে।
সাংবাদিকতা: ফটোজার্নালিজম আধুনিক মিডিয়ার গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম, যা সংবাদের সত্যতা নিশ্চিত করে। বিজ্ঞাপন: ব্র্যান্ডিং ও মার্কেটিং-এ ফটোগ্রাফির ভূমিকা অপরিসীম।
চিকিৎসা: মেডিক্যাল ইমেজিং (X-ray, MRI, CT Scan) চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিপ্লব এনেছে।
বিজ্ঞান ও মহাকাশ: নাসার মহাকাশ গবেষণায় হাবল টেলিস্কোপের মতো উন্নত ফটোগ্রাফি প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগ: ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্ম ফটোগ্রাফি ও ভিডিওগ্রাফির মাধ্যমে মানুষের যোগাযোগ ও বিনোদনের প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠেছে।
ফটোগ্রাফির ইতিহাস এক বিশাল অভিযাত্রা, যা বিজ্ঞানের হাত ধরে শুরু হলেও আজ এটি শিল্প, তথ্য ও যোগাযোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ক্যামেরা অবস্কিউরা থেকে শুরু করে ডিজিটাল ক্যামেরা ও এআই প্রযুক্তির ক্যামেরা পর্যন্ত এই দীর্ঘ পথচলা মানব সভ্যতার চিত্র ধারণ করার এক মহাকাব্যিক সংগ্রহ।
এখনকার দিনে, ফটোগ্রাফি শুধুমাত্র বিশেষজ্ঞদের কাজ নয়, বরং প্রতিটি মানুষের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। ভবিষ্যতে প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে ফটোগ্রাফির নতুন নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে, যা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও ইতিহাস সংরক্ষণের ধরনকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
ফটোগ্রাফি শুধু মুহূর্তের দলিল নয়, এটি সময়ের সেতু, অতীত ও বর্তমানের মধ্যে এক অদৃশ্য সংযোগ। ক্যামেরার চোখে ধরা পড়ে ইতিহাস, অনুভূতি, এবং এক অবিনশ্বর সত্য—যা হয়তো কালের স্রোতে হারিয়ে যেত, যদি না কেউ তাকে লেন্সে বন্দি করত। আমার জীবনজুড়ে ফটোগ্রাফি ছিল শুধু শখ নয়, বরং এক নীরব সঙ্গী, যা আমাকে চোখ দিয়ে দেখতে শিখিয়েছে, হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে শিখিয়েছে। আজ, যখন পুরনো ছবি দেখি, মনে হয়—এ শুধু কাগজের উপর রঙিন প্রতিচ্ছবি নয়, বরং প্রতিটি ফ্রেম একেকটি গল্প বলে, একেকটি সময়কে বাঁচিয়ে রাখে। সময় বদলেছে, প্রযুক্তির ছোঁয়ায় ফটোগ্রাফি আরও সহজলভ্য হয়েছে, কিন্তু প্রকৃত ফটোগ্রাফি এখনো সেই মুহূর্তের গভীরতা বোঝার শিল্প, যা কখনোই ম্লান হবে না।
— দৈনিক ভোরের আওয়াজ ও The Daily Banner-এর যুগ্ম সম্পাদক,গবেষক ও টেলিভিশন উপস্থাপক।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ শাহজালাল, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন,যুগ্ম-সম্পাদক :মো. কামাল উদ্দিন,
নির্বাহী সম্পাদক : রাবেয়া সিরাজী
বার্তা ও বাণিজ্য বিভাগ : মোতালেব ম্যানশন, ২ আর কে মিশন রোড, মতিঝিল, ঢাকা-১২০৩।
মোবাইল : 01796-777753,01711-057321
ই-মেইল : bhorerawajbd@gmail.com