চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে ২১ ডিসেম্বর আয়োজিত হয় এক ব্যতিক্রমী সেমিনার—"গাউসুল আযম মাইজভান্ডারী কেবলা আলম (ক.)'র প্রথম গদীনশীন খলিফা: কুতুবুল আকতাব হযরত মাওলানা শাহসূফি শেখ অছিয়র রহমান আল ফারুকী (ক.)"। সেমিনারটি ছিল গাউসুল আযম মাইজভান্ডারী (ক.)-এর প্রধান খলিফা হযরত মাওলানা শাহসূফি শেখ অছিয়র রহমান আল ফারুকী (ক.)-এর ১৩৩তম বেলায়ত ও বেলাদত বার্ষিকী উপলক্ষে চরণদ্বীপ দরবার শরীফের উদ্যোগে আয়োজিত।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন চরণদ্বীপ দরবার শরীফের সম্মানিত সাজ্জাদানশীন হযরতুলহাজ্ব শাহসূফি শেখ আবু মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ফারুকী (ম.)। দরবার শরীফের নায়েবে সাজ্জাদানশীন হযরতুল আল্লামা শাহজাদা শেখ আবু মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ ফারুকী (ম.) স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
সেমিনারের মূল প্রতিপাদ্য
সেমিনারে আলোচকরা বলেন, বর্তমান অশান্ত বিশ্বে মানবতার মুক্তির একমাত্র পথ সূফি সাধকদের জীবনাদর্শে নিহিত। রাসূল (দ.)-এর আদর্শ অনুসরণ করে যে ভালোবাসা, মানবতা ও সহনশীলতার পথ সূফিরা দেখিয়েছেন, তা সমাজে ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা এবং শান্তি আনয়ন করতে পারে। গাউসুল আযম মাইজভান্ডারী (ক.) এবং তাঁর প্রধান খলিফা হযরত মাওলানা শাহসূফি শেখ অছিয়র রহমান আল ফারুকী (ক.) এর জীবন এবং কর্ম মানবজাতির জন্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত। আলোচকদের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মাসিক 'আলোকধারা' পত্রিকার সম্পাদক অধ্যাপক জহুর উল আলম। আলোচনায় অংশ নেন—প্রফেসর ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন – চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক। ড. মুফতি মুহাম্মদ নুর হোসাইন – চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক।
ড. মুহাম্মদ নুরুন্নবী – সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক। এছাড়াও, বিভিন্ন শিক্ষাবিদ, ওলামায়ে কেরাম ও সূফি অনুসারীরা আলোচনায় অংশ নেন। সেমিনারের আলোচ্য বিষয় প্রফেসর ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, "সূফি সাধকগণ ধর্মীয় অনুশাসনের পাশাপাশি মানবতার সেবা করে গেছেন। তাঁদের জীবন ছিল ত্যাগের, ধৈর্যের এবং আল্লাহর প্রেমে নিবেদিত।"
ড. মুফতি নুর হোসাইন বলেন, "গাউসুল আযম মাইজভান্ডারী (ক.) এবং তাঁর খলিফা শাহসূফি শেখ অছিয়র রহমান আল ফারুকী (ক.) শুধু উপমহাদেশ নয়, সমগ্র বিশ্বের মানুষের হৃদয়ে নৈতিকতা ও আধ্যাত্মিকতার বীজ বপন করেছেন। তাঁদের দেখানো পথে হাঁটলেই মানুষ প্রকৃত শান্তির সন্ধান পাবে।" সেমিনারে আলোচকরা উল্লেখ করেন যে, মানব জাতির সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে মহান আল্লাহ তায়ালার সান্নিধ্য লাভ এবং প্রিয় হাবিব রাসূলুল্লাহ (দ.)-এর জীবনচর্চা। এর পাশাপাশি আহলে বাইত, সাহাবায়ে কেরাম এবং সূফি অলিদের আদর্শ অনুসরণ করলেই নৈতিক ও আত্মিক উন্নতি সম্ভব।
মাইজভান্ডারীয় ত্বরিকার গুরুত্ব
বক্তারা বলেন, উপমহাদেশে ইসলাম প্রচারের ক্ষেত্রে সূফি সাধকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। গাউসুল আযম মাইজভান্ডারী (ক.) ছিলেন এই অঞ্চলের অন্যতম প্রধান সূফি সাধক। তাঁর প্রধান খলিফা হযরত শাহসূফি শেখ অছিয়র রহমান আল ফারুকী (ক.) মাইজভান্ডারীয়া ত্বরিকার ধারক ও বাহক ছিলেন। তাঁর জীবন ছিল মানব কল্যাণে নিবেদিত।
প্রফেসর ড. নুরুন্নবী বলেন, "চরণদ্বীপ দরবার শরীফের এই ধারাবাহিকতা আমাদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ। তাঁদের জীবন অনুসরণ করলে ব্যক্তিগত এবং সামাজিক উন্নতি সম্ভব।" সেমিনারের অন্যান্য বিষয়
সেমিনার শেষে দরবার শরীফের নায়েবে মুন্তাজেম শাহজাদা শেখ আবু মুহাম্মদ সানাউল্লাহ ফারুকী সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন। গাউসিয়া আহমদিয়া রহমানিয়া সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলম ও সেক্রেটারি মুহাম্মদ আজিজ উদ্দিন উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানান।
সেমিনার শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় বিশেষ মুনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারের মাধ্যমে অশান্ত বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সূফি সাধকদের জীবনাদর্শ অনুসরণের গুরুত্ব নতুন করে অনুভূত হয়।
এই আয়োজনে অংশগ্রহণকারী সকলেই বিশ্বাস করেন, সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে মাইজভান্ডারীয় ত্বরিকার ভূমিকা আজও অমূল্য এবং অপরিহার্য।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ শাহজালাল, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন,যুগ্ম-সম্পাদক :মো. কামাল উদ্দিন,
নির্বাহী সম্পাদক : রাবেয়া সিরাজী
বার্তা ও বাণিজ্য বিভাগ : মোতালেব ম্যানশন, ২ আর কে মিশন রোড, মতিঝিল, ঢাকা-১২০৩।
মোবাইল : 01796-777753,01711-057321
ই-মেইল : bhorerawajbd@gmail.com