শীতের আগমন মানেই এক অন্যরকম অনুভূতি। চারপাশে কুয়াশার চাদর, হিমেল বাতাস আর নিস্তব্ধ প্রকৃতি যেন মনকে নতুন রঙে রাঙিয়ে তোলে। এমন এক শীতের সকালে বাটালি হিলের সবুজে মোড়ানো পরিবেশে জাকির উল্লাহ ভাই আর তাঁর পরিবারকে দেখে মনে হলো, প্রকৃতি যেন তাঁদের ভালোবাসার গল্পকেই আরো মোহনীয় করে তুলেছে। শতায়ু অঙ্গনের সকালের নিয়মিত হাঁটাহাঁটি ও ব্যায়ামের আসর জমে উঠে তাঁর উপস্থিতিতে। তিনি এমন একজন মানুষ, যিনি হাসি আর আন্তরিকতার বাঁধনে সবাইকে আপন করে নেন। আজকের সকালটা ছিল একটু বিশেষ। কারণ, তিনি এসেছিলেন তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে। সকাল থেকে সবাই যেন তাঁদের নিয়ে একটু বেশিই উচ্ছ্বসিত।
ব্যায়াম শেষে আমি যখন তাঁর কাছে বিদায় নিতে গেলাম, তখন তিনি বললেন, “কামাল ভাই, ভাবীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিই।” তাঁর এই কথা বলার ধরনেই বোঝা গেল, আজকের সকালটা শুধুই স্বাস্থ্যচর্চার জন্য নয়, বরং একটি পারিবারিক সৌন্দর্যের গল্প বলার জন্যও। তারপর শুরু হলো মজার পালা। ছবি তোলার সময় তিনি নিজেই মজা করে বললেন, “আমাকে আজ খুব স্মার্ট লাগছে!” কিন্তু আমরা সবাই বুঝে গেলাম, তাঁর এই কথায় রয়েছে এক চাতুর্যের ছোঁয়া। কারণ, তাঁর আসল উদ্দেশ্য ছিল স্ত্রীকে একটু ক্ষেপানো। ভাবী কিন্তু একেবারেই সহজে ফাঁদে পা দিলেন না। শুধু মুচকি হেসে জবাব দিলেন, আর আমরা সবাই তাঁর পক্ষেই সুর মেলালাম। এই হাসি-মজা আর মধুর বাক্যালাপের মাঝেই বোঝা গেল, জাকির উল্লাহ ভাইয়ের এই সম্পর্ক কতটা স্নেহময় ও মধুর। ভাবীকে নিয়ে তাঁর গর্ব, ভালোবাসা আর বিশেষ যত্ন স্পষ্ট হয়ে উঠল প্রতিটি কথায়। অন্যদিকে, ভাবীর মধ্যেও এক দৃঢ়তা আর কোমলতা রয়েছে, যা তাঁর উপস্থিতিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। শুক্রবারের পিঠা উৎসবে ভাবীর সঙ্গে আমার প্রথম দেখা হয়েছিল। সেদিন তাঁর ভদ্রতা আর হাসিমুখে কথা বলার ধরনে বোঝা গিয়েছিল, তিনি ঠিক কতটা সুন্দর মনের মানুষ। আজ যখন জাকির ভাইয়ের পাশে তাঁকে দেখলাম, তখন মনে হলো, এই দুটি মানুষ যেন একে অপরের পরিপূরক।
তাঁদের মেয়ে মাশাল্লাহ ধর্মপরায়ণ এবং ভীষণ নম্র। ছবি তুলতে পছন্দ না করলেও তার ভদ্রতাপূর্ণ আচরণ মন ছুঁয়ে যায়। আর ছেলে? সে তো বাবা-মায়ের সঙ্গে ছবিতে বেশ মজা করেই অংশ নিল। এই পুরো পরিবারটি যেন এক রঙিন ছবি, যা দেখলে মনে হয় প্রকৃতি নিজেই এঁকে দিয়েছে।
জাকির ভাই যে শুধু পরিবারের দায়িত্ববান একজন মানুষ তা-ই নয়, তিনি আমাদের শতায়ু অঙ্গনেরও প্রাণ। তিনি না থাকলে যেন সকালের আড্ডা জমে না। যদিও নিয়মিত ব্যায়াম না করার জন্য নিজেই অনেকবার কানমলা খেয়েছেন, তবে আজ ভাবী তাঁকে জোর করে নিয়ে এসেছেন। আমরা সবাই এই নিয়ে আরও মজা করলাম। ভাবী সোজাসাপ্টা বললেন, “আজ জোর করেই এনেছি, কিন্তু উনি বাটালি হিলের প্রাণ। উনি ছাড়া জমে না।” এই কথার মধ্যে লুকিয়ে ছিল এক গভীর ভালোবাসার প্রকাশ। তাঁদের সম্পর্কের এই সহজাত মাধুর্য আর বোঝাপড়া সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। একে অপরের প্রতি তাঁদের সম্মান, ভালোবাসা, আর হাসি-মজার বন্ধন দেখলে বোঝা যায়, সুখী পরিবার বলতে আসলে কী বোঝায়। আজকের শীতের সকালে এই গল্পটি যেন শীতের আমেজে একটু উষ্ণতার পরশ বুলিয়ে গেল। জাকির ভাই ও তাঁর পরিবারের এই মধুর মুহূর্তগুলো আমাদের সবার জন্যই এক অনুপ্রেরণা। তাঁদের সম্পর্কের মতো ভালোবাসা, যত্ন আর বোঝাপড়া যেন আমাদের প্রতিটি দিনকে আরো রঙিন করে তোলে।
এই শীতের সকাল যেন জাকির উল্লাহ ভাই ও তাঁর পরিবারের ভালোবাসার গল্পকে আরও চিরন্তন করে রাখে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ শাহজালাল, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন,যুগ্ম-সম্পাদক :মো. কামাল উদ্দিন,
নির্বাহী সম্পাদক : রাবেয়া সিরাজী
বার্তা ও বাণিজ্য বিভাগ : মোতালেব ম্যানশন, ২ আর কে মিশন রোড, মতিঝিল, ঢাকা-১২০৩।
মোবাইল : 01796-777753,01711-057321
ই-মেইল : bhorerawajbd@gmail.com