এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর ফৌজদারী অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, যেখানে প্রতারণা, জালিয়াতি, এবং অর্থনৈতিক অব্যবস্থা, ৪০৬/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৫০৬(২) ধারায় মামলা করা হয়েছে। মামলার নং- ৩০৫২/২০/২০২৪ইং (কোতোয়ালী)। গত ২২ জুলাই ২০২৪ তারিখে কোতোয়ালী থানায় বাদীনি
নাজমে নওরোজের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে এই ঘটনার সাথে সম্পর্কিত একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আসামিরা ২০১১ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, মহিলা শাখা, কাজীর দেউরীসহ বিভিন্ন জায়গায় প্রতারণা এবং জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। বাদীনির ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে সেসময় ঘটিত ঘটনা ২০২৪ সালের ২২ জুলাই এ পর্যন্ত চলতে থাকে। মামলার বাদী: নাজমে নওরোজ (৪৯), পিতা- আব্দুর রাজ্জাক, বাসা- বি/এ, র্যাংগস ছায়ানীড়, নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটি, পাঁচলাইশ, চট্টগ্রাম।
মামলার আসামিরা হলেন: ১. মোঃ আকিজ উদ্দিন (৪৩), পিতা- মাহাব মিঞা, হাজী বশরত আলীর বাড়ী, সরজার পাড়া, পটিয়া, চট্টগ্রাম। ২. মোঃ সাইফুল আলম মাসুদ (এস আলম গ্রুপের মালিক) পিতা- মোজাহের আনোয়ার, সেয়ান পাড়া, পটিয়া, চট্টগ্রাম। অভিযোগে আরও বলা হয় যে, আসামিরা তাদের প্রভাব এবং অবৈধ কার্যকলাপের মাধ্যমে ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানে জালিয়াতি এবং আর্থিক প্রতারণা ঘটিয়ে আসছেন, যার ফলে ভুক্তভোগীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। আসামিরা বিভিন্ন ব্যাংক ঋণ, অর্থ উত্তোলন এবং প্রতিষ্ঠানে আর্থিক তছরুপের মাধ্যমে বহু মানুষের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করেছেন।
এই মামলাটি সিআইডি (CID)কে তদন্তের জন্য প্রেরণ করেছে। মামলাটি বর্তমানে আদালতে চলমান এবং এর তদন্ত চলছে। আদালত জানায়, এই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগের বিষয়ে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে, এই মামলা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রামের ব্যবসায়িক পরিবেশে এটির প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে, এস আলম গ্রুপের মালিকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ চলমান থাকলেও, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানটি এখনো দেশের অন্যতম বৃহৎ গ্রুপ হিসেবে পরিচিত। তবে, এই ধরনের অভিযোগ প্রতিষ্ঠানটির ইমেজের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। ঘটনার বিবরণে জানাযায়-চট্টগ্রাম: দেশের অন্যতম বৃহৎ ব্যবসায়িক গ্রুপ এস আলম গ্রুপ একাধিক বিতর্কিত কর্মকাণ্ড ও আর্থিক অব্যবস্থাপনার কারণে আলোচনা সৃষ্টি করেছে। ব্যবসায়ের বৈশ্বিক সাফল্য ও শক্তিশালী প্রভাব সত্ত্বেও, প্রতিষ্ঠানটি নানা অভিযোগের সম্মুখীন হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে আর্থিক প্রতারণা, দুর্নীতি, এবং শেয়ারহোল্ডারদের সাথে প্রতারণামূলক আচরণ।
এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তারা বিভিন্ন ধরনের সরকারি ও বেসরকারি সুবিধা লুটে নিয়েছে এবং ঋণ পরিশোধে নানা সময়ের গড়িমসি করেছে। এস আলমের শেয়ারহোল্ডাররা বলছেন যে, তাদের বিনিয়োগের টাকা প্রতিষ্ঠানটির অনিয়মিত ব্যবহারে আটকা পড়েছে এবং তারা সঠিক পরিশোধ পাচ্ছে না। শুধু শেয়ারহোল্ডারদের নয়, গ্রুপটির বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ঋণও একটি বড় বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তারা এস আলম গ্রুপকে অতিরিক্ত ঋণ সুবিধা দিয়েছে, যা গ্রুপটি ঋণের যথাযথ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে শেয়ারহোল্ডারদের ক্ষতিতে পরিণত করেছে। বিশেষ করে, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকসহ একাধিক ব্যাংক থেকে ঋণ সুবিধা নেওয়ার পরেও, গ্রুপটি ঋণ পরিশোধে অনীহা প্রকাশ করেছে। এস আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, তারা শেয়ারহোল্ডারদের মতামত উপেক্ষা করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে নানা ধরনের জালিয়াতি এবং ট্যাক্স ফাঁকি দিয়েছে। গ্রুপটির মধ্যে যোগসাজশকারী কর্মকর্তারা বিভিন্ন অনিয়মে লিপ্ত, যার ফলে কোম্পানির শেয়ার মূল্য ও আর্থিক অবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে চলমান তদন্ত ও অভিযোগের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত কোনো স্পষ্ট বক্তব্য প্রদান করেনি, তবে এই ঘটনা যে শুধু ব্যবসায়িক বিশ্বে নয়, দেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে, তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বিষয়টি নিয়ে অভিজ্ঞরা বলছেন, যদি এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়, তাহলে এস আলম গ্রুপের মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
এস আলম গ্রুপের তরফ থেকে এ বিষয়ে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি, তবে ব্যবসায়িক মহলে তাদের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা চলছে। দেশে-বিদেশে গ্রুপটির কার্যক্রম বর্তমানে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে, যা দেশের শেয়ারবাজার ও অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
অভিযোগগুলোর সত্যতা এবং পরিণতি: এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা ও পরিণতি সম্পর্কে যদি তদন্তে প্রমাণিত হয়, তাহলে এটি শুধু এস আলমের জন্য নয়, দেশের ব্যবসায়িক সম্প্রদায় ও অর্থনীতির জন্য বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি করতে পারে। ব্যবসায়িক দুনিয়ায় সততা ও নৈতিকতার গুরুত্ব প্রতিদিন বেড়ে যাচ্ছে, এবং এস আলমের মতো বড় প্রতিষ্ঠান যদি এইসব অভিযোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে তা দেশের সামগ্রিক ব্যবসায়িক পরিবেশের জন্য একটি সতর্কবার্তা হতে পারে।
আরো অভিযোগে দৈনিক ভোরের আওয়াজ ও the daily banner পত্রিকাকে নাজমে নওরোজ জানান, দেশের বৃহত্তম ব্যবসায়িক গ্রুপ এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে
আকিজের মাধ্যমে আমার সাথে প্রতারনা বিশেষ করে আকিজ সুকৌশলে আমার কাছ থেকে ২৯ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়াসহ তাদের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন মানুষের নামে
ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে তা বিদেশে পাচার করা, গ্রাহক এবং সাধারণ মানুষকে প্রতারণার শিকার করা, এবং আর্থিক অব্যবস্থা। সম্প্রতি, বাদী নাজমে নওরোজ অভিযোগ করেছেন যে, এস আলম গ্রুপ এবং তার পিএস আকিজ উদ্দিন একযোগে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অভিযোগ অনুযায়ী, এস আলম গ্রুপ এবং আকিজ দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তা যথাযথভাবে পরিশোধ করেনি। বরং, এই অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়েছে, যার ফলে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় বিশাল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে এবং সাধারণ মানুষ প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে, যার মধ্যে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তা বিদেশে পাঠানো, সাধারণ মানুষের কাছে প্রতারণা এবং শেয়ারহোল্ডারদের সাথে বেআইনি কাজকর্ম করা।
এস আলম গ্রুপ এবং আকিজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ অনেকের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে, তারা কীভাবে ব্যাংকিং সিস্টেমকে অবজ্ঞা করে এবং জনগণের অর্থ বিদেশে পাচার করেছে, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। এসব টাকা সাধারণ মানুষ ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রতারণা করে নেয়া হয়েছে, যা দেশের অর্থনৈতিক পরিবেশে গভীর সংকট সৃষ্টি করেছে। এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের ফলে দেশের শেয়ার বাজার ও অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে, এবং এর তদন্ত দ্রুত শেষ না হলে এটি দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা ও ব্যবসায়িক পরিবেশের জন্য আরও বড় সংকট তৈরি করবে। তবে, এস আলম গ্রুপ এবং তার পিএস আকিজের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে, বিষয়টি নিয়ে চট্টগ্রাম ও ঢাকার ব্যবসায়ী মহলে তীব্র সমালোচনা চলছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যদি এসব অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে এস আলম গ্রুপ এবং আকিজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ শাহজালাল, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন,যুগ্ম-সম্পাদক :মো. কামাল উদ্দিন,
নির্বাহী সম্পাদক : রাবেয়া সিরাজী
বার্তা ও বাণিজ্য বিভাগ : মোতালেব ম্যানশন, ২ আর কে মিশন রোড, মতিঝিল, ঢাকা-১২০৩।
মোবাইল : 01796-777753,01711-057321
ই-মেইল : bhorerawajbd@gmail.com