স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে উঠছে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল, যা সমাজের বিত্তশালী মানুষের সহায়তা এবং সরকারের অনুদান দ্বারা পরিচালিত, সেখানে এক প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ মোরশেদ এবং সাধারণ সম্পাদক আজাদ একটি শক্তিশালী ‘মামা-ভাগিনা’ সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন বলে অভিযোগ, যারা এই হাসপাতালে নিজেদের ব্যক্তিগত আখের গোছানোর সুযোগ নিয়েছেন। জানা গেছে, এই সিন্ডিকেট হাসপাতালের আর্থিক তহবিলের অপব্যবহার করে নিজেদের ক্ষমতা সুসংহত করেছে। হাসপাতালের উন্নয়ন প্রকল্প, যন্ত্রপাতি কেনাকাটা, এবং বিভিন্ন সেবা সংক্রান্ত অর্থ সংগ্রহের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। তারা হাসপাতালের সুবিধার পরিবর্তে নিজেদের বিভিন্ন বিলাসবহুল সম্পদের মালিক হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ব্যক্তিগত গাড়ি এবং বিলাসবহুল বাড়ি। অভিযোগ রয়েছে, এই সিন্ডিকেট হাসপাতালটিকে একটি ব্যক্তিগত জমিদারি এস্টেটে পরিণত করেছে, যেখানে তাদের ইচ্ছেমতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ক্যান্সার হাসপাতালের দুর্নীতি: সেবার নামে প্রহসন বিশেষ করে হাসপাতালের ক্যান্সার বিভাগের যন্ত্রপাতি কেনা ও পরিচালনায় বড় অঙ্কের দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সেখানে মেশিন কেনাসহ নানা ক্ষেত্রে টাকা নয়ছয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে। ক্যান্সার রোগীদের সেবা নিশ্চিত করার কথা থাকলেও, প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, প্রকৃত সেবার মান বাড়ানোর পরিবর্তে এই অর্থ সিন্ডিকেটের স্বার্থে ব্যবহৃত হয়েছে। দুর্নীতির কারণে হাসপাতালের ক্যান্সার বিভাগের চিকিৎসা খরচ বেড়ে যাচ্ছে, যা রোগীদের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করছে। সাধারণ সদস্যদের উপর দমন-পীড়ন: রোগীরা জিম্মি সাধারণ রোগী এবং হাসপাতালের অন্যান্য সদস্যদের অভিযোগ, এই সিন্ডিকেট নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখতে রোগীদের এবং জীবন সদস্যদের জিম্মি করে রেখেছে। হাসপাতালের অনেক জীবন সদস্য নানা সময়ে এই অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলার চেষ্টা করলেও, রাউজানের প্রভাবশালী নেতা ফজলে করিম চৌধুরীর প্রভাবের কারণে তাদের চেষ্টা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কথা বললে ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানা রকমের চাপ প্রয়োগ করা হয় বলে জানা গেছে।
ভোটার ম্যানিপুলেশন: ক্ষমতায় থাকার কৌশল
অভিযোগ রয়েছে যে, এই সিন্ডিকেট একটি ‘রিজার্ভ ভোটার’ গোষ্ঠী তৈরি করেছে, যারা নির্বাচনের সময় তাদের সমর্থনে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় পুনর্নিবাচিত করে। এটি একটি কৌশল, যার মাধ্যমে তারা সাধারণ সদস্যদের ইচ্ছা ও প্রতিবাদের ওপর হস্তক্ষেপ করে নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখছে। ফলে, সচেতন জীবন সদস্যরা সিন্ডিকেট ভাঙতে চাইলে ভোট প্রক্রিয়ায় প্রতিবার পরাজিত হচ্ছেন। দৈনিক পত্রিকাগুলোর অনুসন্ধান দৈনিক ভোরের আওয়াজ, দৈনিক সকালের সময় এবং The Daily Banner-এর অনুসন্ধানী দল এই হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতি এবং অন্যান্য অনিয়মের খতিয়ান বের করার জন্য তদন্ত চালাচ্ছেন। তারা হাসপাতালের বিভিন্ন কর্মকর্তা, রোগী এবং জীবন সদস্যদের সাথে কথা বলে আরও তথ্য সংগ্রহ করছেন, যা হাসপাতালের এই সিন্ডিকেটের ক্ষমতার অপব্যবহার ও সেবার নামে অর্থ লুটপাটের বিষয়টি পরিষ্কারভাবে প্রকাশ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সচেতন মহলের পদক্ষেপ ও সংবাদ সম্মেলনের উদ্যোগ এই প্রেক্ষাপটে হাসপাতালের সচেতন জীবন সদস্য ও বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধিরা এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছেন। তারা এই সিন্ডিকেটের অপকর্ম ও লুটপাটের বিষয়গুলো জনসমক্ষে আনতে চান। তারা বলছেন যে, গণমাধ্যম ও সাধারণ মানুষের সহায়তায় এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তোলা গেলে হাসপাতালের সেবার গুণগত মান পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে। তাদের আশা, সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে এবং নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনবে।
হাসপাতালের এমন অব্যবস্থাপনা এবং সিন্ডিকেটের প্রভাব কমানোর জন্য জনমত তৈরি হওয়া প্রয়োজন বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন সচেতন মহল। এই অনিয়মের অবসান ঘটিয়ে হাসপাতালটি যেন প্রকৃতপক্ষে জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়, সেই লক্ষ্যেই তারা সবাই একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ শাহজালাল, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন,যুগ্ম-সম্পাদক :মো. কামাল উদ্দিন,
নির্বাহী সম্পাদক : রাবেয়া সিরাজী
বার্তা ও বাণিজ্য বিভাগ : মোতালেব ম্যানশন, ২ আর কে মিশন রোড, মতিঝিল, ঢাকা-১২০৩।
মোবাইল : 01796-777753,01711-057321
ই-মেইল : bhorerawajbd@gmail.com