বৈষম্যের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা ছাত্র আন্দোলনের বিস্তৃত পরিসরে ছাত্র ও যুবলীগের একটি সন্ত্রাসী চক্র হামলা চালিয়েছে, যাদের প্রধান পরিকল্পনাকারী হিসেবে পরিচিত আকতার ডাকাত। অভিযোগ উঠেছে, আকতার উদ্দিন নামে এই যুবলীগ ক্যাডার চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় ছাত্রদের উপর গুলি চালানো এবং হামলা পরিচালনার জন্য অস্ত্র সরবরাহ করেছেন। ছাত্রদের ওপর সহিংস আক্রমণের প্রধান লক্ষ্যবস্তু ছিল বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, ২নং গেইট এবং কাজী দেউরী মোড়। সূত্র জানায়, আকতার উদ্দিন চট্টগ্রামের বাস্তহারা ও ছিন্নমূল শিশুদের ব্যবহার করে সংগঠনের ক্যাডারদের কাছে অস্ত্র সরবরাহের কাজটি পরিচালনা করতেন। তিনি আওয়ামী লীগ ও ছাত্র-যুব লীগের নেতাকর্মীদের দখলে থাকা এলাকায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহ করতেন। এই ডাকাত চট্টগ্রাম শহরের সন্ত্রাসী কার্যক্রমে নেতৃত্ব দিতে হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন। হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের সহযোগী ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ আকতার ডাকাতের পরিচিতি শুধু অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবেই সীমাবদ্ধ নয়; তিনি একজন কুখ্যাত ইয়াবা ও মাদক ব্যবসায়ী হিসেবেও পরিচিত। বাবরের নির্দেশনায় তিনি চট্টগ্রাম শহরে হত্যাকাণ্ড, রাহাজানি, এবং অবৈধ জুয়া খেলার আড্ডা বসাতেন। রিয়াজুদ্দিন বাজার এলাকায় নিয়মিত চাঁদাবাজি করতেন এবং বাবরের পর্যটন বারে মদ সরবরাহের মাধ্যমেও তার অপকর্মের বিস্তৃতি ছিল। তবে আকতারের মূল আয়ের উৎস ছিল রিয়াজুদ্দিন বাজারের আবাসিক হোটেলগুলোতে পতিতা সরবরাহ।
বিশেষজ্ঞরা জানান, আকতার কৌশলে বিভিন্ন পর্যায়ে টোকাই এবং পথশিশুদের ব্যবহার করে অরাজকতা সৃষ্টি করতেন। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে বিতর্কিত করতে সরকার পতনের আগমুহূর্তে সরকারি ভবন এবং অফিসে ভাঙচুরের পরিকল্পনা করতেন। নিজেকে জামাত-শিবিরের সমর্থক হিসেবে প্রচার করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেন এবং রিয়াজুদ্দিন বাজারে লক্ষাধিক টাকার চাঁদাবাজি করেন। চট্টগ্রামে পুলিশ বক্সে আগুন এবং চাঁদাবাজির অভিযোগ জানা গেছে, কোতোয়ালি থানা ও নিউ মার্কেট মোড়ে পুলিশ বক্সে আগুন দেওয়ার ঘটনার সঙ্গে আকতার সরাসরি যুক্ত ছিলেন। তিনি সুপরিকল্পিতভাবে এই কর্মকাণ্ডগুলো পরিচালনা করেন যাতে আন্দোলন কারীদের ওপর দোষ চাপানো যায়। আকতার বাহিনীর এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য ছিল ছাত্র আন্দোলনের কার্যক্রমকে বিতর্কিত করে গণসমর্থন কমিয়ে আনা। আকতার ডাকাতের পরিচয় ও সন্ত্রাসী ইতিহাস সাতকানিয়ার দক্ষিণ কাঞ্চনা ইউনিয়নের জিম চৌধুরীর বাড়ীর বাসিন্দা আকতার ডাকাতের বাবার নাম আহমেদ হোসাইন। শৈশব থেকেই দুর্বৃত্ত আচরণে আকতার পরিচিত। প্রথমদিকে ডাকাতি কাজের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে তার সন্ত্রাসী ক্যারিয়ার শুরু করেন। সাতকানিয়ার জামাত-শিবির নেতারা একসময় তার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে তাকে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করে। পরবর্তীতে তিনি নিজেকে ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের নেতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে চট্টগ্রামে স্থায়ী হন এবং বাবর গ্রুপের হয়ে রিয়াজুদ্দিন বাজার এলাকায় অবৈধ কার্যক্রমে লিপ্ত হন। বিশেষ করে বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, এবং ২ নম্বর গেইট এলাকায় ছাত্রলীগের রণি বাহিনীর সাথে মিলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের উপর গুলিবর্ষণের অভিযোগে আকতার সরাসরি জড়িত ছিলেন। তিনি রণি বাহিনীর সাথে সমন্বয় করে আন্দোলনকারীদের উপর হামলা পরিচালনা করেন এবং এভাবে ছাত্র-যুব লীগের সন্ত্রাসী তৎপরতায় নেতৃত্ব দেন। চট্টগ্রাম শহরের শান্তিপ্রিয় জনগণের কাছে আকতার ডাকাত একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের লাগাম টানার জন্য প্রশাসনের সুষ্ঠু পদক্ষেপ দাবি জানিয়ে অনেকে বলেন-ডাকাত আকতার হোসাইন মুজিব কোট পরে সাধারণ মানুষের কাছে গিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন চট্টগ্রামের তথাকথিত শ্রমিক লীগ সভাপতি আকতার হোসেন। আইনগত ও নৈতিকতার লঙ্ঘন করে এই ব্যক্তি শুধু রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করেই থেমে থাকেননি, বরং বিভিন্ন দুর্বৃত্ত চক্রের নেতৃত্বও দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আকতার হোসেনের বিরুদ্ধে শক্তিশালী রিকশা চোর সিন্ডিকেট পরিচালনার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। সাধারণ রিকশাচালকদের রক্ত, ঘাম, ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে অর্জিত টাকা আকতার হোসেনের পকেটে চলে যায়, যা তার মুনাফার একটি প্রধান উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তবে তার অপরাধের মাত্রা এখানেই সীমাবদ্ধ নয়। অভিযোগ রয়েছে যে, আকতার হোসেন একটি শক্তিশালী গরুচোর সিন্ডিকেটেরও অংশ। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এলাকার নিরীহ মানুষের জীবনযাত্রায় সংকট সৃষ্টি করে চলেছেন তিনি। বিদ্যুৎ সংকট তৈরি এবং সাধারণ মানুষকে আর্থিকভাবে দুর্বল করে তোলার জন্য তিনি নানাভাবে অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, গরিব মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আকতার হোসেন তার নিজের স্বার্থে সমাজের ক্ষতি করছেন। শ্রমিক লীগের সভাপতি হিসেবে সাধারণ মানুষের পাশে থাকার দাবি করলেও, বাস্তবে তিনি তাদের দুর্দশা কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক লাভের পথ বেছে নিয়েছেন।
প্রতারণা ও মুজিব কোটের আড়ালে দুর্নীতি আকতার হোসেনের মুজিব কোট পরা চেহারার আড়ালে রয়েছে দুর্নীতি ও প্রতারণার গভীর চক্র। তিনি তার নিজের স্বার্থে এবং ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য সাধারণ মানুষের বিশ্বাসের সুযোগ নিয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি গরিব ও অসহায় মানুষের সান্ত্বনা ও আস্থাকে ভেঙে দিয়েছেন, আর্তমানবতার নামে প্রতারণা চালিয়ে গেছেন। প্রতিবাদ ও জনসচেতনতার আহ্বান আকতার হোসেনের এই সমস্ত কার্যকলাপ নিয়ে এলাকায় অসন্তোষ চরমে উঠেছে। তার বিরুদ্ধে জনগণের প্রতারণার ঘটনা প্রমাণ হলে এটি সমাজের জন্য বিপদজনক হতে পারে। জনসাধারণের অভিযোগ, আকতার হোসেন মুজিবের আদর্শকে অপব্যবহার করে তাদের কাছ থেকে ভোট নেওয়ার জন্য প্রতারণা করছেন। তাই জনগণকে আকতার হোসেনের মতো প্রতারকদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে এবং তার বিরুদ্ধে আন্দোলনের দাবি উঠছে।
এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে আকতার হোসেনের অসৎ কার্যকলাপ তুলে ধরে জনসচেতনতা বৃদ্ধির চেষ্টা করা হবে। এলাকার সাধারণ মানুষকে তার প্রতারণার বিষয়ে সচেতন করতে এই প্রতিবেদন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ শাহজালাল, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন,যুগ্ম-সম্পাদক :মো. কামাল উদ্দিন,
নির্বাহী সম্পাদক : রাবেয়া সিরাজী
বার্তা ও বাণিজ্য বিভাগ : মোতালেব ম্যানশন, ২ আর কে মিশন রোড, মতিঝিল, ঢাকা-১২০৩।
মোবাইল : 01796-777753,01711-057321
ই-মেইল : bhorerawajbd@gmail.com