সাম্প্রতিক সময়ে সনাতনী হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান সংগঠন "ইসকন" হিন্দু নেতাদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় দায়েরকৃত রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে জোরালো প্রতিবাদে নেমেছে। সারাদেশে একযোগে আয়োজিত এই প্রতিবাদ কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য হলো সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া এবং বিচারপ্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার দাবি তোলা। ইসকনের উদ্যোগে সংগঠিত এই প্রতিবাদে সনাতনী হিন্দু জনগোষ্ঠীর সদস্যরা ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করছেন। চট্টগ্রামের চেরাগি পাহাড় মোড়, যা প্রতিবাদ এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত, সেখানে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভা বিশেষভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে সনাতনী হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজন এ সভায় যোগ দিয়েছেন। ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, এবং স্লোগানের মাধ্যমে তারা নিজেদের ন্যায্য অধিকারের পক্ষে আওয়াজ তুলছেন। এ প্রতিবাদ সভায় ইসকনের বিভিন্ন নেতা-কর্মী ও সদস্যরা বক্তব্য রাখছেন, যারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং ন্যায়বিচারের আহ্বান জানাচ্ছেন। এ আয়োজন দেশের প্রতিটি মানুষকে মানবিকতা ও সংহতির গুরুত্ব বুঝতে অনুপ্রাণিত করছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের অন্যান্য নেতৃবৃন্দও মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির দাবি জানিয়ে সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, যেন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনকারীরা শাস্তি পায় এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ স্বাধীন ও নিরাপদ পরিবেশে তাদের জীবনযাপন করতে পারে। দ্বিতীয় ঘটনা: মামলার বাদী ফিরোজ খানকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল থেকে বহিষ্কার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) চট্টগ্রামের মোহরা ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খানকে দলীয় দায়িত্ব থেকে বহিষ্কার করেছে। তার বিরুদ্ধে দলের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। এই সিদ্ধান্ত বিএনপির চান্দগাঁও থানার সভাপতি ছালেকুর রহমান এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ সিকদার ফিরোজ কুতুবীর যৌথ স্বাক্ষরে প্রকাশিত হয়েছে।
ফিরোজ খান এই বহিষ্কারের শিকার হয়েছেন এমন সময়ে, যখন দেশে বিভিন্ন ইস্যুতে তীব্র প্রতিবাদ এবং আন্দোলনের পরিবেশ বিরাজ করছে। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোর প্রকৃত কারণ স্পষ্ট না হলেও, এটি নিশ্চিত যে দলের নীতিবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ডের জন্যই তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এর ফলে বিএনপি দলের ভেতরে শুদ্ধি অভিযান এবং সুনীতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নতুন উদ্যোগ গ্রহণের প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। ফিরোজ খানের বহিষ্কার প্রক্রিয়া দলের সিদ্ধান্ত এবং নিয়মানুযায়ী তাৎক্ষণিক ভাবে কার্যকর করা হয়েছে, যা দলের অন্য সদস্যদের জন্য একটি সতর্ক সংকেত হিসেবেও কাজ করছে।এই দুইটি ঘটনা বাংলাদেশের রাজনীতি এবং সমাজে বিভিন্ন ধারায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। একদিকে সনাতনী সম্প্রদায়ের নিজেদের অধিকার রক্ষায় সমবেত প্রতিবাদ, অন্যদিকে বিএনপির অভ্যন্তরীণ শুদ্ধি প্রক্রিয়া — এ দুইয়ের মিশ্র প্রভাব দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রগুলোতে নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। চেরাগি পাহাড় মোড়ে সনাতনী হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিবাদ সভা : মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবী চট্টগ্রাম, ১ নভেম্বর - সনাতনী হিন্দু সম্প্রদায়ের ন্যায্য দাবির আন্দোলন দমনে কোতোয়ালি থানায় উদ্দেশ্যমূলক মামলা দায়েরের প্রতিবাদে চট্টগ্রামের চেরাগি পাহাড় মোড়ে এক বিশাল প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। এতে বক্তারা বলেন, "হিন্দু সম্প্রদায়ের ন্যায্য অধিকার ও দাবী আদায়ের আন্দোলনকে দমন করার উদ্দেশ্যে এই মামলা করা হয়েছে।" বিগত কয়েকদিন ধরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠন তাদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে সোচ্চার রয়েছে। বিশেষ করে, গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামের লালদীঘির ময়দান থেকে ৮ দফা দাবী উত্থাপন করা হয়, যা সনাতনী হিন্দু সম্প্রদায়ের অধিকার ও সুরক্ষার বিষয়কে কেন্দ্র করে গঠিত। বক্তারা জানান, "এই দাবীগুলো বাস্তবায়নের দিকে পদক্ষেপ না নিয়ে বরং মিথ্যা মামলা দায়ের করে আন্দোলন দমনের চেষ্টা চলছে, যা আমাদেরকে ষড়যন্ত্র বলে মনে হচ্ছে।" প্রতিবাদকারীরা কোতোয়ালি থানায় দায়েরকৃত মামলাটি দ্রুত প্রত্যাহারের আহ্বান জানান এবং বলেন, "যতদিন মামলা প্রত্যাহার করা না হবে, ততদিন আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।"এদিন চেরাগি পাহাড় মোড়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন স্তরের ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে নিজেদের ন্যায্য দাবী আদায়ে সংগ্রামের প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ শাহজালাল, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন,যুগ্ম-সম্পাদক :মো. কামাল উদ্দিন,
নির্বাহী সম্পাদক : রাবেয়া সিরাজী
বার্তা ও বাণিজ্য বিভাগ : মোতালেব ম্যানশন, ২ আর কে মিশন রোড, মতিঝিল, ঢাকা-১২০৩।
মোবাইল : 01796-777753,01711-057321
ই-মেইল : bhorerawajbd@gmail.com