মানববন্ধনে আবদ্ধ হয়ে ৩১শে অক্টোবর চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে উত্তাল রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি আমরা—গণমাধ্যম কর্মীরা। আমাদের দাবি আদায়ের জন্য, আমাদের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য, আমরা মুখে শক্তি আর চোখে আগুন নিয়ে এই মানববন্ধনে এসেছি। যেন বুকের গভীর থেকে ওঠা এক লাল আগুনের ঢেউ; আর সেই ঢেউ প্রতিটি শব্দে, প্রতিটি ব্যানারে, প্রতিটি স্লোগানে প্রতিফলিত হয়। সময়ের এই বাঁকে দাঁড়িয়ে মনে হয়, স্বাধীনতা শব্দটি যেন আজ নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট করছে, আর আমরা, যারা তার রক্ষক, তারই জন্য লড়ছি।এই লড়াই সহজ নয়। আমাদের কণ্ঠের স্বাধীনতা প্রতিনিয়ত ঝরে পড়ছে এক আইন থেকে আরেক আইনের বেড়াজালে। এই কাল, সেই কাল, একেকটি সময় একেকভাবে গণমাধ্যমের মুখ বন্ধের চেষ্টা করেছে। কিন্তু, শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে যেন সেই চাপা গলার আওয়াজ একেবারে স্তব্ধ হয়ে পড়েছিল। গণমাধ্যমে এমন চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে যেন এই পেশা একসময় কেবলই নিয়ন্ত্রিত তোষামোদে পরিণত হবে। আমাদের মুক্ত সংবাদ
মাধ্যমের ঐতিহ্য হারিয়ে যাওয়ার শঙ্কা যেন ক্রমেই বাড়ছে। ইতিহাসের পাতায় ফিরে তাকাই। সেই সময়ের সাহসী মানুষেরা—তারা কি আজকের মতোই এতো অসহায় ছিলো? সেই মানুষগুলো, যারা কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে সত্যের দিকে ছুটে চলেছিলো, তাদের কাছে সংবাদ ছিলো এক দায়িত্ব, এক নীতি। তারা জানতো, সত্যের পথ বড্ড কণ্ট কাকীর্ণ, কিন্তু সেই পথের কণ্টক তাদের জন্য গর্বের ছিলো। অথচ আজ আমাদের সংবাদ মাধ্যমের অধিকাংশেই চলছে এক ধরনের ‘তৈলাধারার সাংবাদিকতা’। গোষ্ঠীস্বার্থে, ক্ষমতার তোষামোদে যারা নিজেকে নিবেদন করে, তারাই যেন আজ সুবিধাভোগী। চট্টগ্রামের মাটিতে যে প্রতিবাদি সাংবাদিকরা সাহস নিয়ে কাজ করে, তাদের অবস্থা আরও করুণ। তাদের অবহেলা করা হয়, চোখ রাঙানো হয়, কণ্ঠরোধের চেষ্টা চলে। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব ছিলো এই সাংবাদিকদের সংগ্রামের একটি প্রাণকেন্দ্র। কিন্তু এখন এই প্রতিষ্ঠানও যেন এক অবক্ষয়ের পথে হাঁটছে। প্রেসক্লাবের নেতৃত্বের বর্তমান পরিস্থিতি দেখে মনে হয়, সত্য ও ন্যায়ের পতাকা আর ধরে রাখা যাচ্ছে না। এখানে নেতৃত্বে প্রয়োজন পরিবর্তনের, এমন নেতৃত্ব যাদের কাছে সাংবাদিকতার নৈতিকতা আর জনগণের প্রতি দায়িত্ব গুরুত্বপূর্ণ।
যখন আমরা এই কথা ভাবি, তখন মনে হয়, চট্টগ্রামের এই প্রতিবাদ, এই মানববন্ধন কেবল আমাদের জন্য নয়; এটি এক বিবেকের জাগরণ। এই মানববন্ধন যেন সেই নিস্তব্ধ বালুকা বেলায় ঢেউয়ের মতো, যা অন্ধকারকে কেটে আলোর পথে আহ্বান জানায়। আমাদের কণ্ঠে কেবল এই দেশের জন্য, এই সমাজের জন্য, এবং পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সত্যের জাগরণ ছড়িয়ে দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা। আজ চট্টগ্রামের সাংবাদিকরা শুধু নিজেদের দাবি পূরণের জন্য নয়, বরং সমাজকে এক নতুন দিশায় চালিত করার জন্য দাঁড়িয়েছে। আমাদের এই লড়াই একদিন হয়তো ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নেবে। নতুন দিনের অপেক্ষায় আমাদের এই সংগ্রাম চলবেই।
সেই সংগ্রামের আলোর মিছিলে সামিল হয়েছি আমি আমরা- তাতে কি কথা হলো, কি আমাদের চাওয়া পাওয়া- তা চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রতিবাদি মানববন্ধন কর্মসূচি সফলতা কথা গুলো শুনে আসি-চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রতিবাদ সমাবেশে ফ্যাসিবাদমুক্ত গণমাধ্যম ও সাংবাদিক সুরক্ষা আইনের জোরালো দাবি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিএমইউজে) দেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করতে এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষা ও সাংবাদিকদের সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়ে সম্প্রতি এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। ৩১ শে অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি শাহ নওয়াজ, এবং অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান ও দৈনিক দিনকালের ব্যুরো প্রধান হাসান মুকুল।
বিভিন্ন গণমাধ্যম নেতা ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের প্রতিনিধিরা ও অংশ নিয়ে কথা বলেছেন।গণমাধ্যমের স্বাধীনতার দাবিতে দৃঢ় অবস্থান সমাবেশে বক্তারা দেশজুড়ে সাংবাদিকদের উপর নির্যাতন ও চাকরিচ্যুতির নিন্দা জানান। আওয়ামী শাসনামলে কিছু গণমাধ্যম ও তাদের মালিকরা ফ্যাসিবাদের পক্ষ নিয়ে ভিন্নমতের সাংবাদিকদের হয়রানি করেছেন বলে অভিযোগ করেন তাঁরা। বক্তারা অনৈতিক এই কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, গণমাধ্যমকে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ রাখতে হলে জনগণের কাছে সত্য খবর পৌঁছানো অপরিহার্য, যা কোনো স্বৈরশাসনের স্বার্থে ব্যবহৃত হবে না। সাংবাদিক সুরক্ষা আইনের অপরিহার্যতা বক্তারা সাংবাদিকদের সুরক্ষায় একটি বিশেষ আইন প্রণয়নের জরুরি প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকরা যেন কোনো হুমকি বা সহিংসতার শিকার না হন, সে দায়িত্ব রাষ্ট্রের বলে মনে করেন তাঁরা। প্রকৃত গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হতে হয়, তাই একটি সুরক্ষা আইন সাংবাদিকদের আশ্রয়স্থল হিসেবে দাঁড়াবে এবং স্বাধীন সাংবাদিকতাকে সমুন্নত রাখবে। সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার দাবি
সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার সময় বহুবার পরিবর্তনের তীব্র সমালোচনা করেন বক্তারা। আওয়ামী লীগ সরকার তদন্ত প্রতিবেদন ১১১ বার পিছিয়েছে বলে অভিযোগ করে তাঁরা জানান, অন্তবর্তী সরকার এই মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির চেষ্টা করছে, তবে দ্রুত বিচার সম্পন্ন করাই এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি পূরণের উপায়।
পূর্ববর্তী সরকারের আমলে ৬৭ সাংবাদিক হত্যার বিচার দাবি বক্তারা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ শাসনামলে ৬৭ জন সাংবাদিক হত্যার নির্মম ঘটনা ঘটেছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণকারীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে তাঁরা বলেন, গণমাধ্যমকে চাপের মুখে রেখেও যারা নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির চেষ্টা করেছে, তাদের কঠোর বিচারের সম্মুখীন করা উচিত। গণমাধ্যমের ভূমিকা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার আহ্বান বক্তারা আরও বলেন, কিছু গণমাধ্যম স্বৈরাচারী শক্তির পক্ষ নিয়ে দেশের গণতান্ত্রিক ভিত্তিকে দুর্বল করেছে। তাঁরা গণমাধ্যম জনগণের মুখোমুখি করেছে, আমি যদি চট্টগ্রামের সাংবাদিক সমাজের কথা বলি-চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের চলমান সংকট নিরসনের জন্য আমাদের সাংবাদিক সমাজকে একসঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে, যেখানে হানাহানি বা বিভাজনের বদলে থাকবে পারস্পরিক সম্মান ও বন্ধুত্বের নিখুঁত ছোঁয়া। নামমাত্র কাগজের তথাকথিত সাংবাদিকতার বন্ধনে জড়িয়ে না থেকে সত্যের পথ অনুসরণ করে নির্ভীক সাংবাদিকতায় আত্মনিয়োগ করাই হবে আমাদের আসল দায়িত্ব।
এ কথা অনস্বীকার্য যে, দেশে সংবাদপত্রের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃত ও মানসম্পন্ন সাংবাদিকতার শূন্যতা প্রতিনিয়ত আমাদের বোধগম্য হয়ে উঠছে। তাই সময় এসেছে—চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের মতো সংগঠনগুলোকে এগিয়ে এসে শুধু কর্মরত সাংবাদিকদের একত্রিত করার নয়, বরং সত্যের পথ ধরে সাহসী সাংবাদিকতার এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপনের। আসুন, আমরা গুণগত সাংবাদিকতার শপথ নিই, ঐক্যের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে সত্যের আলো জ্বালাই।
পাশাপাশি বাংলাদেশের সেকালের কিছু বিখ্যাত সাংবাদিকদের কথা বলি, যাদের নাম আমরা এখন অনেকে ভুলে যাচ্ছি, তাদের মধ্যে কয়েকজন উল্লেখ যোগ্যদের তাহের উদ্দিন ঠাকুর, সারওয়ার মুরশেদ,
সৈয়দ নাজিমুদ্দিন হাসান,
এনামুল হক চৌধুরী,
মাহবুব উল আলম চৌধুরী,
জহুর হোসেন চৌধুরী,
আবদুল গফুর চৌধুরী,
আবুল মনসুর আহমদ,
সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী,
সেলিনা পারভীন,
তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া, আরো অসংখ্য বিখ্যাত সাংবাদিক ছিলেন, অন্যদিকে-বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে সরকার তাদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার উদ্দেশ্য সাংবাদিকদের হাত বাঁধার এবং কণ্ঠ রোধের জন্য কিছু আইন জারি করা হয়েছে, যেগুলো স্বাধীন সাংবাদিকতার পথে বাধা সৃষ্টি করেছে। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য আইন এবং তাদের বিবরণ নিচে দেওয়া হলো:বিশেষ ক্ষমতা আইন, ১৯৭৪ প্রণয়ন: ১৯৭৪ সালে। বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ সালের অন্যতম বিতর্কিত আইন। এ আইনের আওতায় সরকার যে কাউকে সন্দেহজনক হিসেবে আটক করতে পারে। অনেক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এই আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এটি বিনা অভিযোগে দীর্ঘ সময় আটক রাখার সুযোগ দেয়, যা স্বাধীন মতপ্রকাশে বাধা সৃষ্টি করেছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৩) প্রণয়ন: ২০০৬ সালে; ২০১৩ সালে সংশোধিত। বিবরণ: আইসিটি আইনের ৫৭ ধারা সাংবাদিকদের জন্য বিশেষভাবে সমস্যাজনক ছিল। এর মাধ্যমে অনলাইন প্রকাশনার মাধ্যমে রাষ্ট্রের সমালোচনা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া হয়, এমন অভিযোগে যেকোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার এবং শাস্তি দেওয়ার সুযোগ ছিল। এই আইনের অধীনে অনেক সাংবাদিক ও ব্লগারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ প্রণয়ন: ২০১৮ সালে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ সালের সবচেয়ে বিতর্কিত আইনগুলোর মধ্যে একটি। আইনের বিভিন্ন ধারা, বিশেষ করে ২১, ২৫, ২৮, ২৯ এবং ৩১ ধারা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হয়েছে। এই আইনের আওতায় যেকোনো ডিজিটাল কনটেন্ট, বিশেষ করে অনলাইনে প্রকাশিত তথ্যকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বা সমাজের শান্তি বিনষ্টকারী বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। অনেক সাংবাদিক এবং লেখককে এই আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ করেছে।
সম্প্রচার আইন, ২০১৮ (প্রস্তাবিত) প্রস্তাবনা: ২০১৮ সালে প্রস্তাবিত, তবে এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। এই আইনে প্রস্তাবনা অনুযায়ী, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সম্প্রচার মিডিয়া পরিচালনা করতে হবে। এছাড়া, সরকারের সমালোচনা মূলক কোনো প্রচারণা বা সংবাদ বন্ধ করার ক্ষমতা সরকারকে প্রদান করে। এটি সাংবাদিকদের স্বাধিকার হরণ এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে। প্রেস কাউন্সিল আইন, ১৯৭৪ প্রণয়ন: ১৯৭৪ সালে প্রেস কাউন্সিল আইন মূলত সাংবাদিকদের জন্য আচরণবিধি নিয়ন্ত্রণের জন্য তৈরি হয়েছিল, তবে সরকারের অনুকূলে ব্যবহারের সুযোগ থেকে যায়। কিছু ক্ষেত্রে এটি স্বাধীন মতপ্রকাশ এবং সাংবাদিকতার উপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করে।
এই আইনের মাধ্যমে সংবাদমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়েছে এবং সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করার অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশের সাংবাদিক সমাজ এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো বারবার এই আইনগুলো সংশোধনের দাবি জানিয়েছে, যাতে মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সাংবাদিকতার স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়। সাংবাদিক সুরক্ষার আইন বেশ কিছু দেশে বিদ্যমান, যেগুলো সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে প্রণীত হয়েছে। উল্লেখযোগ্য কিছু দেশ ও তাদের আইন সমূহ নিচে আলোচনা করা হলো: মেক্সিকোতে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে "Protection Mechanism for Human Rights Defenders and Journalists" আইন প্রণীত হয়েছে। এই আইনের অধীনে, যারা হুমকির সম্মুখীন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সুরক্ষা প্রদান করা হয়। এ আইনের আওতায় সরকার সাংবাদিকদের জন্য দেহরক্ষী নিয়োগ, সুরক্ষা সরঞ্জাম প্রদান, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে। কলম্বিয়ায় সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে "National Protection Unit (UNP)" নামে একটি আইন রয়েছে। এই আইনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের জন্য সুরক্ষা ব্যবস্থা প্রণীত হয়েছে। এটি সাংবাদিকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা প্রদান এবং তাদের কাজের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।
ফ্রান্সে "Freedom of the Press Act" নামে একটি আইন রয়েছে, যা সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করে। ফ্রান্সের আইন অনুসারে, সাংবাদিকদের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার ও স্বাধীনতা সংরক্ষিত রয়েছে, এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বা হয়রানি হলে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা আছে। ফিলিপাইন ফিলিপাইনে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধে "Philippine Journalist Protection Act" চালু করা হয়েছে। এই আইনের অধীনে সাংবাদিকরা যদি কাজের সময় নির্যাতনের শিকার হন, তবে তাদের জন্য সুরক্ষা ব্যবস্থা এবং আইনি সহায়তা প্রদান করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রে সাংবাদিক সুরক্ষার জন্য "Free Flow of Information Act" এবং "Shield Law" চালু আছে। এসব আইনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের তথ্যসূত্র গোপন রাখার অধিকার এবং কর্মস্থলে সুরক্ষা প্রদান নিশ্চিত করা হয়। যদিও এটি পুরো দেশব্যাপী অভিন্ন নয়, বিভিন্ন রাজ্যে এ ধরনের আইন রয়েছে।
সুইডেনে "Freedom of the Press Act" এবং "Fundamental Law on Freedom of Expression" সাংবাদিকদের সুরক্ষা দেয়ার জন্য প্রণীত হয়েছে। এই আইনের অধীনে সাংবাদিকদের তথ্য প্রকাশের স্বাধীনতা এবং তথ্য গোপন রাখার অধিকার সংরক্ষিত থাকে।
কানাডায় সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে "Journalistic Sources Protection Act" চালু করা হয়েছে, যা সাংবাদিকদের তথ্যসূত্র গোপন রাখার অধিকার এবং সহিংসতা থেকে সুরক্ষা প্রদান নিশ্চিত করে। এই আইনগুলো বিভিন্ন দেশে সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার একটি প্রচেষ্টা। তবে এইসব আইনের কার্যকারিতা বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম, এবং আইনগুলোর বাস্তবায়ন প্রায়ই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে, বিশেষ করে যেখানে সরকারের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের ওপর চাপ থাকে। আজকের লেখায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে সাংবাদিকদের যৌক্তিক দাবিসমূহ উত্থাপন করতে গিয়ে
এই কথা গুলো বলার চেষ্টা করেছি। এই দাবিগুলি শুধু চট্টগ্রামের নয়, বরং সারা বাংলাদেশের গণমাধ্যম কর্মীদের মনের কথা এবং প্রাণের দাবিও বটে। লেখাটি আপতত শেষ করছি, ভবিষ্যতে আরও বিস্তারিতভাবে লিখব
ইনশাআল্লাহ।
লেখকঃ চট্টগ্রাম বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান ও যুগ্ন সম্পাদক, দৈনিক ভোরের আওয়াজ ও The Daily banner এবং গবেষক টেলিভিশন উপস্থাপক।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ শাহজালাল, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন,যুগ্ম-সম্পাদক :মো. কামাল উদ্দিন,
নির্বাহী সম্পাদক : রাবেয়া সিরাজী
বার্তা ও বাণিজ্য বিভাগ : মোতালেব ম্যানশন, ২ আর কে মিশন রোড, মতিঝিল, ঢাকা-১২০৩।
মোবাইল : 01796-777753,01711-057321
ই-মেইল : bhorerawajbd@gmail.com