ফজলে করিম নুরু হত্যার মামলায় প্রধান অভিযুক্ত ব্যক্তি তিনদিনের রিমান্ডে থাকা সত্ত্বেও তাকে চকবাজার থানায় অস্বাভাবিকভাবে আরাম আয়েশের মধ্যে রাখা হয়েছে। সাধারণত রিমান্ডে থাকা আসামিদের কড়া নজরদারি এবং কঠোর শর্তের মধ্যে রাখা হয়, যেখানে তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদায়ের চেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু এই ক্ষেত্রে, অভিযুক্ত ব্যক্তির প্রতি পুলিশের আচরণ এবং তাকে দেওয়া বিশেষ সুবিধা আইন প্রয়োগের নিরপেক্ষতা এবং ন্যায্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। রিমান্ডে থাকা অবস্থায় তার আরাম দায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়েছে, যা সাধারণ বিচারিক প্রক্রিয়ার বাইরে গিয়ে তাকে প্রভাবশালী বলে মনে করাচ্ছে। এ অবস্থায় স্থানীয় জনগণের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে, যারা বিশ্বাস করছে যে হত্যার মতো গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত একজনকে এমন বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দেওয়া বিচারের শুদ্ধতা এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিপন্থী। এছাড়াও, এই ঘটনা সাধারণ মানুষের মধ্যে আইনের শাসন এবং পুলিশ প্রশাসনের দায়িত্বশীলতার বিষয়ে সন্দেহ জাগিয়েছে। যদি প্রভাবশালী মহলের চাপে বা অর্থনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে এমন আচরণ হয়ে থাকে, তবে তা আইনের প্রতি জনগণের আস্থা আরও দুর্বল করবে।২০১৭ সালে চট্টগ্রামের রাউজানে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা নুরুল আলম নুরুকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়, যা রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের এক জ্বলন্ত উদাহরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে যে, ফজলে করিম চৌধুরীর নির্দেশে এবং পুলিশের সহযোগিতায় নুরুকে তার বাসা থেকে অপহরণ করে নোয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তাকে নির্মমভাবে নির্যাতন ও হত্যা করা হয়। অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের বিবরণ:
২০১৭ সালে ছাত্রদলের প্রভাবশালী নেতা নুরুল আলম নুরুকে শহরের নিজ বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় ফজলে করিমের কিলার বাহিনী। পুলিশের এসআই শেখ জাবেদের নেতৃত্বে ফাঁড়িতে নেওয়ার পর নুরুকে শারীরিকভাবে অমানবিক নির্যাতন করা হয় এবং শেষে তার মাথায় গুলি করা হয়। হত্যার পর নুরুর লাশ কর্ণফুলী নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। অপরাধ সাম্রাজ্যের ভয়াবহ দাপট: রাউজানে দীর্ঘদিন ধরে ফজলে করিম চৌধুরী ও তার অপরাধ সাম্রাজ্যের দাপট চলতে থাকলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নীরবতা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, পুলিশ ও প্রশাসনের একাংশ ফজলে করিমের এসব অপরাধ ঢাকতে সহায়তা করছে, ফলে বিচার প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলছে। ন্যায়বিচারের দাবি:
নুরুর পরিবার ও রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা ন্যায়বিচারের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত নুরুর হত্যাকাণ্ডে জড়িত মূল অপরাধীরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানানো হলেও বিচার প্রক্রিয়া বারবার বাধাগ্রস্ত হয়েছে। সমাজের জন্য হুমকি: নুরুল আলম নুরুর হত্যাকাণ্ড শুধু একটি ব্যক্তিগত হত্যাকাণ্ড নয়, এটি পুরো সমাজের জন্য একটি ভয়ানক উদাহরণ। অপরাধীদের এমন দুঃসাহসিক কার্যকলাপ ও তাদের প্রতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নীরবতা সমাজের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর চরম আঘাত হেনেছে। জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো এবং ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন গড়ে তোলার এখনই সময়। নুরুর মৃত্যুর সঠিক তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আওয়াজ তুলতে হবে, যেন ভবিষ্যতে আর কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি এমন নির্মমতার শিকার না হন।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ শাহজালাল, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন,যুগ্ম-সম্পাদক :মো. কামাল উদ্দিন,
নির্বাহী সম্পাদক : রাবেয়া সিরাজী
বার্তা ও বাণিজ্য বিভাগ : মোতালেব ম্যানশন, ২ আর কে মিশন রোড, মতিঝিল, ঢাকা-১২০৩।
মোবাইল : 01796-777753,01711-057321
ই-মেইল : bhorerawajbd@gmail.com