1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ০৯:১৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
শেষ হলো দাওয়াতে ইসলামীর তিনদিনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় ইজতেমা বালুকাবেলার আত্মঘোষণা: যেখানে সাংবাদিকতা হয়ে ওঠে প্রতিবাদের কবিতা চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের ঐক্য উৎসব পারকি সৈকতে গড়লো অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু মাওলানা রইস উদ্দিন হত্যার বিচার দাবিতে আনোয়ারায় বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ! “বাঁশখালীতে ৪ হাজার ইয়াবাসহ টেকনাফের মাদক কারবারি আটক: ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ” হোমনায় মহান মে দিবস উপলক্ষে  বিএনপির বর্ণাঢ্য র‍্যালি  ড. মোহাম্মদ ইউনূস এর শুভ আগমনে বোয়ালখালীবাসীর পক্ষ থেকে হাজী মোহাম্মদ আলম ববির শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা পুলিশ পরিচয়ে ঘরে প্রবেশ করে পরিবারের ৮ জনকে বেঁধে ছয়টি দোকান ঘর গুঁড়িয়ে দিয়ে মালামাল লুট করেছে দুর্বৃত্তরা রোদেলা দুপুরে পারকি সৈকতের বালুকাবেলায় কলম যোদ্ধারা,স্মৃতিময় এক মে দিবস! ড. মোহাম্মদ ইউনূসের দক্ষিণ চট্টগ্রাম সফর

নিঃসঙ্গতার ছায়া

মো. কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: সোমবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৪
  • ১৬০ বার পড়া হয়েছে

গত পর্বের পর
আমি যেন এক অদ্ভুত উত্তেজনার ঘোরে ছিলাম। জোবায়েদার মনে কি চলছে, সে কি ভাবছে, তার অন্তরে আমার জন্য কোনো অনুভূতি আছে কি না, এসব প্রশ্নই যেন আমাকে পাগল করে তুলছিল। এই চিন্তাগুলো নিয়েই আমি তাকে চিঠি লিখেছিলাম। কিন্তু সেই চিঠিতে শুধু কথার খেলা ছিল না; সেখানে ছিল হৃদয়ের গভীর এক আকুতি, বন্ধুত্বের হাত বাড়ানোর সাদামাটা প্রস্তাব, আর এমন কিছু সত্য, যা সাধারণত মানুষ মনের ভেতরে গোপন করে রাখে।
চিঠি লেখা শেষ করেই পাঠিয়ে দিলাম, আর অপেক্ষা শুরু হলো। তখন থেকেই আমি কল্পনায় ডুব দিলাম—কেমন হবে তার উত্তর? উত্তর আসবে কি না, সেটাই জানি না। একটা অজানা রহস্যের মতো মনে হচ্ছিল বিষয়টা। চিঠি লেখা আর মোবাইলে পাঠানো এখন সহজ, কিন্তু আগের মতো খাতার পাতা উল্টানোর সেই উত্তেজনা তো নেই। তবুও, মোবাইলে পাঠানো সেই চিঠি যেন আমার হৃদয়ের এক টুকরো হয়ে রইল। ফোনে লেখা মুছে ফেলা যায়, কিন্তু চিঠিতে লেখা কথাগুলো মুছে ফেলা সম্ভব নয়। এই ভেবে আমি চিঠিটি বারবার পড়তে লাগলাম—যেন প্রত্যেক শব্দের ভেতরে লুকানো রহস্য খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।
এরই মধ্যে দিন গড়িয়ে যাচ্ছে, আমার মনে প্রশ্ন—কী উত্তর আসবে? না কি আমি সেই উত্তরের অপেক্ষায় থেকে থেকে কোনো এক অন্ধকার রহস্যের পথে হাঁটতে থাকব, যেখানে প্রতিটি মোড়ে অপেক্ষা করছে এক নতুন অভিজ্ঞতা? এই উত্তেজনা, এই অপেক্ষা, যেন আমাকে টানছে এক রোমাঞ্চকর গল্পের দিকে, যা আমাকে হয়তো কোনো অজানা গন্তব্যে নিয়ে যাবে।
প্রিয় বন্ধু –
রাতের নিস্তব্ধতায় যখন তুমি নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছো,
আমার মন তখনও বিক্ষিপ্ত—এই নির্জনতায় তোমার মুখটিই শুধু ভেসে আসে আমার চোখের সামনে। তুমি কি জানো, তোমার সেই অশ্রুভরা চোখের নিঃশব্দ আকুতি আমার অন্তরে কতটা গভীর ছাপ রেখে গেছে? মনে হয়, তোমার স্পর্শের উষ্ণতায় আর মনের নির্ভরতায় নিজেকে সম্পূর্ণ করে তুলতে পারতাম। যেন তোমার পাশে বসে, হাতের মৃদু স্পর্শে সমস্ত অপ্রকাশিত কথা খুলে বলতে পারি। কিন্তু তা কি কখনো হবে? জানি না, তবু এই গভীর রাতে তোমার জন্য কিছু না লিখে থাকতে পারলাম না।
জীবনের প্রতিটি মানুষ তার নিজস্ব রঙে আঁকা চিত্রপটে বিচিত্র মুখাবয়বের ছাপ রেখে যায়। কারো সাথে দেখা হয় একপলক, কেউ হৃদয়ের অতলে ঢুকে যায় এবং আবার হারিয়ে যায়। তোমার জীবনেও কেউ এসেছিল, হয়তো একসময় সরে গেছে, রেখে গেছে শুধু কিছু অমলিন স্মৃতি। কিন্তু আমি মনে করি, শুধু হৃদয়ের গভীর থেকে ভালোবাসাই যথেষ্ট নয়, বরং এমন একজন মানুষ প্রয়োজন যার সামনে মন খুলে সব বলা যায়। এমন একজন, যাকে নির্ভয়ে সবকিছু বলা যায়, যে তোমার প্রতিটি কথা, প্রতিটি হাসি এবং প্রতিটি অশ্রু বুঝবে। সেই মানুষটি যদি আমি হতে পারতাম, তাহলে তোমার প্রতিটি অনুভূতির কথাগুলোকে বুনে দিয়ে এক অমর কাব্য রচনা করতাম।
তোমার মনের গহীনে যে না বলা কথা রয়েছে, তা আমি শুনতে চাই, আরও শুনতে চাই। আমি তোমার সেই বিশ্বস্ত বন্ধু হতে চাই, যাকে তুমি দিনের শেষে নিশ্চিন্তে বলতে পারো তোমার সমস্ত গোপন কথা, যাকে তুমি বিশ্বাস করতে পারো। যদি তুমি আমাকে তোমার মনের কাছের মানুষ হিসেবে গ্রহণ করতে পারো, তবে আমার কাছে যেন এক মহাসম্পদ প্রাপ্তি ঘটে। আমি চাই তোমার প্রতিটি ভাবনার সঙ্গী হতে, প্রতিটি স্বপ্নের সহযাত্রী হতে।
এই চিঠির প্রতিটি শব্দের মধ্যে আছে আমার অনুভবের স্পর্শ, প্রতিটি বাক্যের মধ্যে রয়েছে গভীর আকাঙ্ক্ষা। তুমি যদি আমাকে বন্ধু মনে করো, তবে সেই বন্ধুত্বে আমি নিজেকে উৎসর্গ করতে প্রস্তুত। তোমার পাশে থাকা, তোমার সমস্ত দুঃখ ও আনন্দের সাথী হওয়া—এই অমূল্য বন্ধুত্বের জন্য আমি প্রতিটি মুহূর্ত আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় থাকবো।
তোমার হয়ে পাশে থাকতে চাই, তোমার হৃদয়ের সেই মানুষ হয়ে থাকতে চাই, যে বন্ধু হতে পারে জীবনভর। তবে, তুমি কি সেই বন্ধুত্বের সম্মতি দেবে?
তোমার একান্তের মানুষ লেখক।
উত্তরে অপেক্ষায়–
জোবায়েদার এই প্রতিক্রিয়া যেন শব্দে গাঁথা এক অনন্ত কাহিনি, যেখানে আনন্দের স্পর্শ মিলেছে যেমন, তেমনই রয়েছে বেদনার গহ্বরে নিমজ্জিত সত্য। সে বলছে, পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্ভাগা কারা জানো? তারা, যারা চায় সামান্য একটু ভালোবাসা। সেই ভালোবাসার জন্যই তারা প্রতিবার যেন তিক্ততার চোরাগলিতে প্রবেশ করে, অবচেতনেই খোঁজে কিছুটা শান্তি। কিন্তু বাস্তবতা নির্মম; যে সম্পর্কের প্রান্তে শুধু ভালোবাসা থাকে, সেখানে
বাকি সব শূন্য হয়ে দাঁড়ায়।
জীবনের প্রান্তে এসে যারা খুঁজে ফেরে একটুকরো শান্তি আর একটুখানি ভালোবাসা, তাদের জন্যই যেন পৃথিবী লিখে দেয় বিষাদময় গল্প। তারা জানে না, সম্পর্কের জন্য সেই নরম হৃদয়ও হয়ে ওঠে সবচেয়ে বড় শত্রু। ভালোবাসা খুঁজে পাওয়ার আশায় যাঁরা ছুটে যায় অবিরাম, তারা কোনোদিন পূর্ণতা পায় না। ভালোবাসা তাদের কাছ থেকে ক্রমশ দূরে সরে যায়, আর তারা পিছনেই বয়ে চলে সম্পর্কের এক অদৃশ্য ভার।
জোবায়েদা আরও বলে, পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় লোভের নাম হলো ভালোবাসা, আর সেই লোভ নিয়েই মানুষ দগ্ধ হয়। তবুও এই নিঃস্বতা, এই হারিয়ে যাওয়ার তৃষ্ণা কখনো শেষ হয় না। যতবারই হোক, বারবার পড়ে ফাঁদে। জীবন তাদের দেয় এক ভঙ্গুর আশ্বাস, আর ভালোবাসার রূপটাকে দেখায় একধরনের মরীচিকার মতো। এই ছায়ার পিছনে ছুটতে ছুটতে তারা হয়তো একদিন বুঝবে— ভালোবাসা মানেই শুধুই কষ্ট, শুধুই বিয়োগের গল্প।
তবুও, পৃথিবীর বুকে থেকে তাদের মতো দুর্ভাগারা ভালোবাসার হাতছানিতে ফের মোহিত হয়। সব ব্যথা বুকে নিয়েও, তারা চলে বারবার সেই একই পথে। জীবনের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে ভালোবাসার জন্য, হয়তো তারা পায় একটুখানি সুখের স্বপ্ন, কিন্তু সেই স্বপ্নও কেবল কল্পনার মতোই ক্ষণস্থায়ী।
জোবায়েদা: এক জীবন, এক সংগ্রাম জোবায়েদার জীবনে প্রেম এসেছে অনেকবার, তবে প্রেমের মধুরতা তার হৃদয়ে কখনোই স্থায়ী হয়নি। প্রতিটি সম্পর্ক তাকে কেবল বেদনার চূড়ান্ত প্রান্তে পৌঁছে দিয়েছে। প্রথমে সে ভেবেছিল, হয়তো এইবারই তার জীবনে স্থায়ী সুখ আসবে, হয়তো তার হৃদয়ের প্রতিটি টুকরো জোড়া লাগবে। কিন্তু সে ভুল ছিল। যাকে সে ভালোবেসেছিল, যার উপর নিঃসংশয় বিশ্বাস রেখেছিল, সেই মানুষই একদিন তার অন্তরকে ভেঙে চুরমার করে দিয়েছিল।
এখন, তার হৃদয়ে এক তুষের আগুন জ্বলছে, এমন এক আগুন যা তাকে আরও দৃঢ় করে তুলেছে। তার চোখের বিষাক্ত অশ্রু যেন প্রতিটি পুরুষের প্রতি ঘৃণায় বিষাক্ত হয়ে উঠেছে। এক সময় তার মনে ছিল স্বপ্নের বাগান—সে ভাবত, জীবনে প্রেমই সবকিছু। তবে এখন সেই বাগান কেবল স্মৃতির প্রান্তরে পড়ে আছে। আর সেখানে গড়ে উঠেছে এক কঠিন দেয়াল, যার চারপাশে অসীম ঘৃণার কাঁটাতার বসানো।
তবুও, যদি কেউ খুব গভীরে দেখে, যদি কেউ এই শক্তিশালী নারীর বাহ্যিক কঠোরতার ভেতর প্রবেশ করে, তাহলে তারা হয়তো এক সাগর ভালোবাসার খোঁজ পাবে। কিন্তু এই ভালোবাসা কেবল তাদের জন্যই, যারা এই তুষের আগুনে পোড়ার সাহস রাখে। যারা তার সেই বিষাক্ত অশ্রুর আড়াল থেকে বেরিয়ে তার নিঃস্বার্থ ভালোবাসার সাগরে ডুবে যেতে পারে। জোবায়েদা জানে, এই ভালোবাসা হয়তো কেউ সহ্য করতে পারবে না, কারণ তার ভালোবাসায় যে শক্তি লুকিয়ে আছে তা সাধারণের চাইতে অনেক বেশি গভীর এবং প্রখর।
তারপরেও, জোবায়েদা নিজের প্রেম-ভালোবাসার আকাঙ্ক্ষাকে দূরে ঠেলে এক নতুন জীবনের পথে এগিয়ে গেছে। এখন সে সংগ্রামের প্রতিমূর্তি, জীবনের প্রতিটি বাঁকে বাঁধা পড়ে থাকা নারীদের মুক্তির প্রতীক। প্রেমের মোহ থেকে বেরিয়ে এসে সে সমাজের প্রতি, জীবনযুদ্ধের প্রতি নিজেকে উৎসর্গ করেছে। তার যাত্রাপথে অসংখ্য বাধা, কিন্তু সে প্রতিটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে হাসতে হাসতে তা জয় করে চলেছে।
জীবন তার কাছে আর স্বপ্নের কোনো মায়াবী কল্পনা নয়, বরং এক কঠিন সত্য। প্রেমের মায়া তাকে আর তেমনভাবে আচ্ছন্ন করে না, তবে সে জানে, জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে সে একাই যথেষ্ট। জোবায়েদা জানে, তার একলা পথ চলাই তার প্রকৃত শক্তি।
লেখকঃ সাংবাদিক গবেষক টেলিভিশন উপস্থাপক,।
চলবে–

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট