উত্তর জনপদের রসমুঞ্জুরী দেশ হিসেবে খ্যাত গাইবান্ধার বিভিন্ন উপজেলা বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে শুধু সবুজ আর সবুজ ধানের ক্ষেত। যে দিকেই চোখ যায় শুধু সবুজের সমারোহ। ফসলের মাঠ যেন সবুজ চাদরে ঢাকা। গাইবান্ধার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে যেন সবার নজর কাড়ছে আমন ধান। চারিদিকে এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। কৃষকের আগামীর সোনালী স্বপ্ন লুকিয়ে আছে সবুজ ধানক্ষেতের মাঝে। প্রখর রোদ-বৃষ্টির খেলায় সবুজের আভা ছড়িয়ে পড়েছে চারিদিকে। মাঠে মাঠে হাওয়ায় দুলছে আমন ধানের সবুজপাতা, আর আনন্দে দুলছে কৃষকদের মন। কৃষকের মনে উঁকি দিচ্ছে এক ভিন্ন আমেজ।ধীরে ধীরে বের হতে শুরু করছে ধানের থোর। সবুজঘেরা রোপা আমনের মাঠ দেখে বারবার ফিরে তাকায় কৃষক, থমকে দাঁড়ায় পথিক। আর কয়েক দিনের মধ্যেই সোনালী ধানের শীষে ঝলমল করবে মাঠের পর মাঠ। রাশি রাশি সোনালি ধানে ভরে উঠবে কৃষকের শূন্য গোলা। পাশাপাশি কৃষকের মুখে ফুটে উঠবে হাসি।
এবার বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই বৃষ্টি না হওয়ায় রোপা আমন লাগাতে কৃষকদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। আষাঢ় মাসের মাঝামাঝিতে আমন ধান চাষ করার নিয়ম থাকলেও বৃষ্টি না হওয়ায় তা করতে পারেননি কৃষকরা। ধান রোপণে বিপাকে পড়তে হয় কৃষকদের। দেরিতে বৃষ্টি হলেও ইতোমধ্যে আমন রোপণ লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ ছাপিয়ে অতিরিক্ত আরও ১০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ বেশি করা হয়েছে। মুখে হাসি থাকলেও দুঃশ্চিন্তা যেন ছাড়ছেনা মাথা থেকে। স্বপ্নের ফসল ঘরে তুলতে পারবেনতো?হঠাৎ করে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং কয়েক দিনের বৃষ্টিতে নদ- নদীর পানি বেরে যাওয়া দুঃশ্চিন্তায় পড়েছে কৃষিক। কারণ এই অসময়ে বন্যা আসলে ঘরে ধান তোলা মুশকিল হয়ে যাবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগতো আছেই তাছাড়া ধানে দেখা দিয়েছে ব্লাস্ট রোগ। অনেক ধানে দেখা দিয়েছে উফরা,পাতা পোড়া ও টুংরার মতো রোগ।
গাইবান্ধা জেলার সাত উপজেলায় ১ লাখ ৩৩ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে নানা প্রতিকুলতা পেরিয়ে এখন দুলছে এই ধানের সবুজ খেত। এ থেকে প্রায় ৪ লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে । জীবন-জীবিকার জন্য গাইবান্ধার অধিকাংশ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভশীল। এ জেলার শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ জনসাধারণ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষি ফসল ঘরে তুলে তাদের মৌলিক চাহিদা পুরণে চেষ্টা করে। এখানে ধান-পাট-ভূট্রা ও সবজিসহ বিভিন্ন ধরণের ফসল উৎপাদন হয়ে থাকে। এসবের মধ্যে সবচেয়ে লাভজনক ফসল হচ্ছে রোপা আমন ধান। তবে এ বছর বাড়তি খরচ মাথায় নিয়ে আমন আবাদে নানা সমস্যার মধ্যদিয়ে ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে তাদের।গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক খোরশেদ আলম জানান, চলতি আমন মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়াসহ সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। এতে করে ভালো ফলন ঘরে তোলা সম্ভাবনা রয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ শাহজালাল, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন,যুগ্ম-সম্পাদক :মো. কামাল উদ্দিন,
নির্বাহী সম্পাদক : রাবেয়া সিরাজী
বার্তা ও বাণিজ্য বিভাগ : মোতালেব ম্যানশন, ২ আর কে মিশন রোড, মতিঝিল, ঢাকা-১২০৩।
মোবাইল : 01796-777753,01711-057321
ই-মেইল : bhorerawajbd@gmail.com